গরুড়পুরাণ # Garur Puran # Audio Bangla # পুরাণ, মহাপুরাণ, হিন্দু ধর্মগ্রন্থ, বৈষ্ণবধর্ম, Superhit Devotional,
গরুড়পুরাণ হল হিন্দুধর্মের ১৮টি মহাপুরাণের অন্যতম। এটি সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ।[১] এই গ্রন্থে প্রধানত হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর লীলা বর্ণনা করা হলেও এটিতে সকল দেবদেবীরই মাহাত্ম্য কীর্তন করা হয়েছে।[২] এই গ্রন্থের আদিতম পাঠটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের রচনা। কিন্তু পরবর্তীকালে দীর্ঘ সময় ধরে এটি সংশোধিত ও বিবর্ধিত হয়ে থাকবে।
গরুড়পুরাণ গ্রন্থটির একাধিক পাঠ পাওয়া যায়। ১৬,০০০ শ্লোকবিশিষ্ট এই গ্রন্থের অধ্যায়গুলিতে বিশ্বকোষের ধাঁচে বিভিন্ন ধরনের বহু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।[৭] এই বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে সৃষ্টিতত্ত্ব, পুরাণ, দেবদেবীদের পারস্পরিক সম্পর্ক, নীতিশাস্ত্র, শুভ ও অশুভের বিরোধ, হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন শাখা, যোগতত্ত্ব, কর্মবাদ ও পুনর্জন্মবাদের প্রেক্ষিতে স্বর্গ ও নরকের ধারণা, পিতৃতর্পণাদি ও মোক্ষ-সংক্রান্ত ধ্যানধারণা, নদনদী ও ভূগোল, খনিজ ও বহুমূল্য পাথরের প্রকারভেদ, রত্নের গুণাগুণ বিচারপদ্ধতি, উদ্ভিদ ও ভেষজের তালিকা,[৮] বিভিন্ন ধরনের রোগ ও সেগুলির উপসর্গ, বিভিন্ন ধরনের ঔধন, কামোদ্দীপক বস্তুসমূহ, রোগপ্রতিষেধকসমূহ, হিন্দু পঞ্জিকা ও তার মূল ভিত্তি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, চাঁদ, গ্রহসমূহ, জ্যোতিষ, স্থাপত্য, গৃহনির্মাণ, হিন্দু মন্দিরের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ, ষোড়শ সংস্কার, দানধ্যান, অর্থনীতি, ব্যয়সংকোচ, রাজার কর্তব্য, রাজনীতি, রাজকর্মচারী, তাঁদের ভূমিকা ও তাঁদের নিয়োগপদ্ধতি, সাহিত্যের শ্রেণিবিভাগ, ব্যাকরণের নিয়মাবলি ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়গুলিতে বর্ণিত হয়েছে যোগাভ্যাস পদ্ধতি (সাংখ্য ও অদ্বৈত মতানুযায়ী), ব্যক্তিগত উন্নতি ও আত্মজ্ঞানের উপযোগিতার কথা।
পদ্মপুরাণ গ্রন্থে পদ্মপুরাণ, ভাগবত পুরাণ ও বিষ্ণুপুরাণ সহ এই পুরাণটিকেও সাত্ত্বিক পুরাণের (সত্ত্বগুণ ও পবিত্রতা উপস্থাপনাকারী পুরাণ) তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রচলিত কিংবদন্তি অনুযায়ী, অন্যান্য সকল পুরাণের মতো এই পুরাণটির রচয়িতাও হলেন বেদব্যাস।
রচনাশৈলী
গরুড়পুরাণের প্রধান উপজীব্য বিষ্ণুর মাহাত্ম্যকীর্তন এবং তা কথিত হয়েছে গরুড় কর্তৃক। উপরে: গরুড়ের পিঠে উপবিষ্ট বিষ্ণু ও লক্ষ্মী (দিল্লি জাতীয় সংগ্রহালয়)।
গরুড়পুরাণ হল একটি বৈষ্ণব পুরাণ। প্রচলিত মতানুযায়ী, এই পুরাণের শ্লোকসংখ্যা ১৯,০০০। যদিও অধুনালভ্য পুথিগুলিতে প্রায় আট হাজার শ্লোকই রক্ষিত হয়েছে।[৫] গ্রন্থটি দু’টি অংশে বিভক্ত: "পূর্বখণ্ড" (পূর্ব ভাগ) ও "উত্তরখণ্ড" (পরবর্তী ভাগ)। পূর্বখণ্ড ২২৯টি অধ্যায়ে বিভক্ত। তবে গরুড়পুরাণের কোনও কোনও পুথিতে এই অংশে ২৪০-২৪৩টি অধ্যায়ও পাওয়া গিয়েছে।[৬] উত্তরখণ্ডের অধ্যায়-সংখ্যা পুথিগত পার্থক্যের ভিত্তিতে ৩৪ থেকে ৪৯টি। উত্তরখণ্ডটি আবার "প্রেতখণ্ড" বা "প্রেতকল্প" নামেও পরিচিত।
গরুড়পুরাণ লিখিত হয়েছে অধুনালভ্য অপর মধ্যযুগীয় ভারতীয় বিশ্বকোষ অগ্নিপুরাণের ধাঁচে। গ্রন্থের গঠনভঙ্গিমাটি স্বতন্ত্র প্রকৃতির, তাতে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের সমাহার ঘটেছে এবং তা ভারতীয় সাহিত্যের ঐতিহাসিক পৌরাণিক ধারার তাত্ত্বিক ধাঁচটি অনুসৃত হয়নি। গরুড়পুরাণে দেখা যায়, পুরাণে কথিত বিষয়গুলি গরুড় বিষ্ণুর কাছে শিক্ষা করছেন, পরে তা ঋষি কশ্যপকে বর্ণনা করছেন এবং তারপর সেই শিক্ষা পৌরাণিক নৈমিষারণ্যে ঋষি ব্যাসের নিকট পৌঁছাচ্ছে।
Информация по комментариям в разработке