দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ। আশ্বিনের এই সময়ে পঞ্চম দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জেলার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। জুন মাস থেকে দফায় দফায় চলতি বন্যা সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবরেও বিস্তৃত ও দীর্ঘায়িত হয়েছে। কোথাও পঞ্চম কোথাও তৃতীয়-চতুর্থ দফায় বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। যা নজিরবিহীন অকাল বন্যা।
টানা বর্ষণ ও ভারতের ঢলে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা, তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, আত্রাই, ধলেশ্বরীসহ প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উত্তরাঞ্চল আবার প্লাবিত হয়েছে। এতে দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নিলফামারী, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনের ধান এবং আগাম সবজি ক্ষেত। ভেসে গেছে বহু পুকুর ও খামারের মাছ। বার বার বন্যায় প্লাবিত হয়ে এলাকার রাস্তা-ঘাট ভেঙে বেহাল দশা। অনেক রাস্তার ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে তলিয়ে গেছে বিস্তৃর্ণ এলাকা। প্রবল স্রোত ও পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে শত শত পরিবার। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক স্কুল, মাদরাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর আগে ভাদ্রের শুরুতেই চতুর্থ দফা বন্যার কবলে পড়ে দেশ। ওই সময়ের বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি নদীভাঙনে ক্ষত-বিক্ষত হয় ৩৩টি জেলা। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস স্থায়ী সর্বনাশা বন্যা ও নদীভাঙনে সর্বহারা মানুষের দুঃখ-কষ্ট অবর্ণনীয়।
ভারতের উজানের ঢল বেড়েই চলেছে। এর ফলে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে অব্যাহতভাবে বাড়ছে পানি। গতকাল শুক্রবার ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা, ঘাঘট, মেঘনা, করতোয়া, আত্রাই, ধলেশ্বরীসহ ৯টি নদ-নদী ১৪টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরমধ্যে যমুনা ৫টি পয়েন্টেই এখন বিপদসীমার ঊর্ধ্বে বইছে। প্রধান নদ-নদীসমূহের ৫৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, অরুণাচল, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও হিমালয় পাদদেশীয় এলাকাগুলোসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক অঞ্চলে গতকাল থেকে আবারও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের সক্রিয় প্রভাবে ফের মেঘ-বৃষ্টি-বাদলের ঘনঘটা বিরাজ করছে আশি^নের তৃতীয় সপ্তাহে এসেও। তাছাড়া নিজেদের বন্যামুক্ত রাখতে অতীতের ‘অভ্যাস’ মতোই
ফারাক্কাসহ উজানে অনেকগুলো বাঁধ - ব্যারেজের ( Farakka Bridge, Farakka Dam, Farakka badh ) ফারাক্কা ব্রিজে র গেইট খুলে ‘অকাতরে’ ভাটির দিকে পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত। তীব্র বেগে আসছে উজানের ঢল-বান।
এর ফলে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল থেকে ভাটিতে পদ্মা ও মেঘনার মোহনায় পর্যন্ত পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে পানির প্রবল চাপ, ঘূর্ণি স্রোত ও নদীভাঙন সর্বত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.dailyinqilab.com/article/...
Информация по комментариям в разработке