যে ১০ আমলে জান্নাত মিলবে । মাওলানা ইবরাহীম সুলতান। IslamicLecture 2020 | Islam Vision
আখেরাতের জীবনে আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহর তৈরি জান্নাতে থাকতে চাই৷ তাই প্রতিনিয়ত আমরা শরীয়তকর্তৃক নির্ধারিত ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও নফলসহ সব ধরনের বিধিবিধানগুলো যথানিয়মে মেনে চলার চেষ্টা করি৷ তবে ইসলামী শরীয়তে এসব বিধি-বিধান পালনের পাশাপাশি এমন কিছু আমল রয়েছে যেগুলোর উপর আমল করতে পারলে আমাদের জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে৷
আজকের আলোচনায় জান্নাতে যাওয়ার দশটি আমল নিয়ে কথা বলবো ইনশাআল্লাহ৷
১.মুখ ও গোপনাঙ্গের হেফাজত :
মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মুখ ও গোপনাঙ্গ৷ কারণ, এর মাধ্যমে মানুষ কথা বলে, মনের ভাষা ব্যক্ত করে এবং নিজেদের স্বাচ্ছন্দ জীবন উপভোগ করে৷ সুতরাং যারা এই দুই অঙ্গকে অন্যায় পথ থেকে বিরত রেখে সঠিক পথে পরিচালিত করবে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের নিশ্চয়তা এক হাদীসে আল্লাহর রাসূল বলেছেন ৷
مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ، وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ ".
যে ব্যক্তি উভয় ঠোঁটের মধ্যভাগ (জিহ্বা) ও দুই রানের মধ্যভাগ (লজ্জা স্থান) হেফাজতের দায়িত্ব গ্রহণ করে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি।’ (বুখারি : ৬৪৭৪)
২.মাতা-পিতার সেবা :
পিতা-মাতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ৷ তাদের সেবা-যত্ন করা,দেখাশোনা করা এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব !কারণ আমাদের ছোট সময় থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত প্রতিটা মুহূর্তেই তাদের অবদান অনস্বীকার্য৷ তাই সর্বদা তাদের সেবা যত্ন করা বিশেষভাবে দুর্বল এবং বৃদ্ধ অবস্থায় তাদের যথাযথ খোঁজ-খবর রাখা, সেবা-যত্ন করা এটা যেমন শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত তেমনি মানবিকভাবেও এটা আমাদের একান্ত কর্তব্য৷
এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ( সা.)বলেছেন,
رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ ".
ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক’, তিনি আবারও বললেন, ‘ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক।’
قِيلَ : مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟
‘ কেউ জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! কে সে জন?’
قَالَ : " مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ، أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ ".
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে বার্ধক্য অবস্থায় পেল অথবা যেকোনো একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেল, তবুও জান্নাত অর্জন করতে পারল না, সে ধ্বংস হোক।’ (মুসলিম : ২৫৫১)
৩.
জ্ঞান অর্জন :
জান্নাতে যাওয়ার একটি সহজ আমল হচ্ছে, কোরআন হাদীসের জ্ঞান অর্জন করা৷ যারা একনিষ্ঠতার সাথে কোরআন হাদীসের জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করবে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ৷
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,
مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا ؛ سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ.
‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে বের হবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দেন।’ (মুসলিম : ২৬৯৯)
৪.
এতিমের দেখাশোনা করা :
আমরা সবাই এতিমকে ভালোবাসি৷ তাদের সেবা যত্ন করার চেষ্টা করি৷ আর তাদের দেখাশোনা এবং সেবাযত্নের মাঝে রয়েছে আমাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ ৷
এক হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,
وَأَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ هَكَذَا ". وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى، وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا شَيْئًا.
‘আমি ও এতিমের লালনপালনকারী জান্নাতে একসঙ্গে এমনভাবে থাকব’-এ কথা বলে তিনি মধ্যমা ও তর্জনী আঙুলদ্বয়কে একত্রিত ও পৃথক করে দেখিয়েছেন।’ (বুখারি : ৫৩০৪)
৫.রুগ্ণ ব্যক্তির খোঁজখবর নেওয়া : হজরত সাওবান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,
مَنْ عَادَ مَرِيضًا لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ ".
“যখন কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে দেখতে যায়, সে ফিরে আসা পর্যন্ত জান্নাতের ‘খিরকায়’ থাকে। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ‘খিরকা’ কী? রাসুল (সা.) বললেন, জান্নাতের ফল বাগান।” (মুসলিম : ২৫৬৮)
৬.ওযুর শেষে দোয়া পড়া ফজিলত :
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,
مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ، فَيُحْسِنُ الْوُضُوءَ، ثُمَّ يَقُولُ حِينَ يَفْرُغُ مِنْ وُضُوئِهِ : أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ، يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ ".
‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে এবং একাগ্রচিত্তে তনুমনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত।’
(আবু দাউদ : ১৬৯)
৭.সময়মতো নামাজ আদায়ে যত্নবান হওয়া :
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি সময়মতো নামাজ আদায়ে যত্নবান হয়,
كَانَ لَهُ عِنْدَ اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ،
তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর প্রতিশ্রুতি রয়েছে।’ (আবু দাউদ : ১৪২০)
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামাজ গুরুত্বসহকারে আদায় করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি শরিফ : ৫৭৪)
৮. প্রতি নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়া :
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,
ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺁﻳﺔ اﻟﻜﺮﺳﻲ ﻓﻲ ﺩﺑﺮ ﻛﻞ ﺻﻼﺓ ﻣﻜﺘﻮﺑﺔ ﻟﻢ يمنعه ﻣﻦ ﺩﺧﻮﻝ اﻟﺠﻨﺔ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻤﻮﺕ
‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের জন্য মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা নেই।’ (আস-সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ি : ৯৮৪৮)
................... A Request .................
Please subscribe to our channel to fill our channel with your blessings and love and encourage us to share and share the like comments.
Информация по комментариям в разработке