Скачать или смотреть রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার খলেয়ায় পূর্ব শ'ত্রু'তার জেরে নৃ'শং'স হা'ম'লা! SIRSONEWS24 |

‎রংপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে নৃশংস হামলা

রংপুর প্রতিনিধি

‎‎রংপুর গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের উত্তর খলেয়া সরদার পাড়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হাসিনা বেগম (৪৫) পরিবারের উপর ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মজিবর রহমান ও তার পরিবার দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে হাসিনা বেগম, তার স্বামী রফিকুল ইসলাম ও ছেলে হাসান মিয়াকে নির্মমভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে।

‎এই হামলায় হাসিনা বেগমের দুই হাত  চামড়ায় ঝুলে থাকে এবং ছেলে হাসানকে মাথায় কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। গত ১৪ অক্টোবর সোমবার দুপুর ২টার দিকে, রফিকুল ইসলামের বাড়িতে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চলমান দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে মজিবর সহ এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর, ১৯ অক্টোবর  ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম বাদী হয়ে পাঁচজন কে আসামি করে  গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
‎
‎বাদী হাসিনা বেগম কান্নাজড়িতu কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, মজিবর আমাদের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা করে আসছে। সে আমাদের ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজছিল। ওইদিন সকালে আমার মেয়ের মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার বাড়িতে এসে হামলা চালায়।

তিনি আরও বলেন,লাঠি, রড, হাসুয়া, কুড়াল, ছোরা বটি নিয়ে তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার দুই হাত কুপিয়ে আলাদা করে দেয়। একটা হাত পুরো পড়ে গেছে আরেকটা ঝুলে আছে। আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে, আর আমার ছেলে হাসানকে রশিদা বেগম বুকের উপর বসে দুই হাতে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেছে। হাসিনা বেগমের ছেলে হাসান জানান,আম্মাকে মারতে দেখে আমি এগিয়ে গেলে ওরা সবাই মিলে আমাকে বটি দিয়ে কোপাতে থাকলে আমি মাটিতে পড়ে যাই তারপরও ওরা ছাড়েনি। আমার বুকের উপর বসে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে।
‎
পরে ‎স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) ভর্তি করে।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার দুই হাতে মারাত্মক আঘাত এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে।
‎
‎গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল ইমরান  জানান, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে (মামলা নং ২৯)। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ টহল দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন,এই হামলা একটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‎
‎ঘটনার পর উত্তর খলেয়া সরদারপাড়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজিবর দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি ও হামলার অভিযোগ উঠেছে।
‎এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজের জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এভাবে এক পরিবারের নারী-পুরুষের উপর এমন বর্বরোচিত হামলা মানা যায় না। প্রশাসন যেন দ্রুত দোষীদের শাস্তি দেয়, এটাই আমাদের দাবি।
‎
‎স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলছেন, গ্রামীণ পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদি পারিবারিক বিরোধ অনেক সময় ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। বিচার ব্যবস্থায় ধীরগতি ও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের প্রশ্রয়ে এই ধরনের হামলার প্রবণতা বাড়ছে। এ ধরনের ঘটনায় আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং পারিবারিক বিরোধ সমাধানে ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যস্থতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।