Скачать или смотреть কুমিল্লায় মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল মহন্ত রাজার প্রাসাদ, যার রয়েছে কথিত করুণ ইতিহাস

গ্রামের মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত আছে, একদা মহন্ত বা মন্ত রাজা যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন পাশের রাজ্যের সঙ্গে। যুদ্ধে যাবার আগে রাণীকে বলে গিয়েছিলেন, হেরে গেলে তিনি বার্তাবাহক কবুতরটি ছেড়ে দেবেন।

যুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি, কিন্তু বার্তাবাহক কবুতরটি খাঁচা ভেঙে ফিরে আসে মন্ত রাজার প্রাসাদে। আর যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসার পর রাজা দেখেন রাণীসহ প্রাসাদের সব নারী-শিশু আগুনে আত্মহত্যা করেছে।

এই মহন্ত রাজা কে, কখন তিনি রাজত্ব করেছেন- এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। কারও কারও ধারণা, এ উপাখ্যানে ইতিহাসের অন্য কোনো কালের গল্প মিশে গিয়ে থাকতে পারে।
মহন্ত বা মন্ত রাজার ওই গল্পের ঐতিহাসিকতা থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ, কিন্তু লালমাই-ময়নামতীর বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মীয় স্থাপনাগুলো যে একসময় সমতলে আর গোমতী অববাহিকায় বিস্তৃত ছিল, প্রত্নতত্ত্ববিদদের সেই ধারণাকেই সমর্থন দিচ্ছে পাঁচথুবীর মন্তের মুড়া।

ইতিহাসে সেই রাজা থাক বা না থাক, তার নামেই এ প্রত্নস্থানের নাম। গোমতী তীরের মন্তের মুড়ায় মাটি খুঁড়ে পাওয়া অবোলকিতেশ্বরের মূর্তি আর পোড়ামাটির প্রত্নবস্তু বলছে, সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে সেখানে বৌদ্ধ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল।

কুমিল্লা শহর থেকে গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ ধরে বিবিরবাজার সড়কের টিক্কার চর সেতু পার হলেই শুরু হয় পাঁচথুবী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নেরই ইটল্লা গ্রামে মন্তের মুড়া প্রত্নস্থানের অবস্থান।মন্তের মুড়া কোনো বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ।

মন্তের মুড়ার প্রত্নস্থানটি এক সময় খেলার মাঠ হিসেবেই ব্যবহৃত হত। মাঠটিকে প্রসারিত করার জন্য গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে ভেঙে ফেলা হয়েছিল একটি মন্দির। আরএস রেকর্ড অনুযায়ী মন্তের মুড়া প্রত্নস্থানটি নরসিংহ বিগ্রহ মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি।