বেদে কন্যাদের জলে ভাসা জীবন || বেদে সম্প্রদায়ের কষ্ট || ভাসমান বেদে || The life of Bede's girls

Описание к видео বেদে কন্যাদের জলে ভাসা জীবন || বেদে সম্প্রদায়ের কষ্ট || ভাসমান বেদে || The life of Bede's girls

অভিনয় এবং বাস্তবতা এই দু'টি সম্পুর্ণ ভিন্ন জিনিস। ৮০ দশকে রুপালি পর্দায় অভিনয় করা বেদের মেয়ে জোসনার জীবন আর বাস্তবে বেদে বহরের সুন্দরী বেদে কন্যাদের জীবন এক নয়। রুপালী পর্দার বেদে কন্যাদের জীবন দেখতে যতটা রঙ্গীন মনে হয়, কিন্তু বাস্তবে বেদে কন্যাদের জীবন ততটাই কষ্টের। ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা কতটা কষ্টকর তা দেখতে গিয়েছিলাম মুন্সিগঞ্জের ইছামতি নদীতে ভাসমান বেদে বহরে। হাসি কান্না মিশ্রিত ভাসমান বেদে বহরগুলো যেন কষ্টঘেরা জীবনের এক মূর্ত প্রতিচ্ছবি। বেদে পল্লীর সুন্দরী বেদে কন্যাদের জীবনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প-উপন্যাস, নির্মিত হয়েছে অনেক নাটক-সিনেমা। কিন্তু এত কিছুর পরও বেদে সম্প্রদায়ের জীবন-মানের হয়নি কোন ইতিবাচক পরিবর্তন। বাঁচার তাগিদে রাষ্ট্রের অনেক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারে না, দেশ থেকে দেশান্তরে ঘুরে বেড়ানো এই হত দরিদ্র ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। বেদে পরিবারে জন্ম নেয়াই যেন তাদের আজন্ম পাপ। বেদে বহরের লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দুঃখ ও কষ্ট গাঁথা জীবনের কাহিনী। বেদেরা অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করেন। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে তাদের বেঁচে থাকতে হয় প্রতিটি দিন। দু'বেলা দু'মোঠো খাবারের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা কঠোর পরিশ্রম করে। এরা রহস্যময় মানুষ। যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। যাযাবর বলেই এদের জীবন এতটা বৈচিত্র্যময়। বেদেরা তাদের জীবনকে একঘরে রাখতে চায় না, প্রকৃতির ভালোবাসাকে স্বীকার করে নেয়। তারা দিনের বেলায় গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। তাবিজ-কবজ বিক্রি, জাদুটোনা আর সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হয় ছিন্নমূল, অসহায় এই বেদে সম্প্রদায়কে। বেদে সম্প্রদায়ের লোকদের জলে ও স্থলে দু'জায়গায় অস্থায়ী আবাস গড়তে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ বেদে সম্প্রদায়ের লোকরা ভাসমান জীবন যাপনে অব্যস্ত। এই ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা নদীতে ও নৌকায় অতিবাহিত করে তাদের জীবনের বেশিরভাগ সময়। নদীর তীরে অতিথি পাখির মতো অস্থায়ী আবাস গড়ে তুলে ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের এই লোকেরা। আবার একদিন হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়, কেউ খবর রাখে না তাদের। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়, ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে আরাকানের রাজ বল্লার রাজার সাথে বেদে সম্প্রদায়ের প্রথম ঢাকায় আগমন ঘটে। প্রথমে তারা বিক্রমপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তারপর জীবন ও জীবিকার তাগিদে সেখান থেকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। বেদে সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ থাকে জলে এবং কিছু অংশ স্থলে বসবাস করে। জলে থাকা বেদেদের বলা হয় ভাসমান বেদে। বেদে জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯০ শতাংশই নিরক্ষর। যাযাবর জনগোষ্টী হওয়ার কারণে তাদের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। শুধু তাই নয় বেদে বহরগুলোতে বেদে সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠে। যথাযথ শিক্ষার অভাবে বংশ পরম্পরায় তারাও বাপ দাদার পেশাকে বেছে নিতে বাধ্য হয়। বেদে সম্প্রদায়ের ছেলেদের চাইতে মেয়েরা অধিক পরিশ্রমী। সংসারের যাবতীয় কঠোর পরিশ্রম করতে দেখা যায় বেদে মেয়েদের। অবশেষে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিলাসী’ গল্পের মতো জ্ঞাতি খুড়ার চরিত্র নয়, বেদে বা বাইদ্যা হিসেবেও নয়, এরা ‘মানুষ’ হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেয়ে থাক এটাই আমাদের আশা - এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке