Скачать или смотреть Antpur Dwarhatta Banmalipur Rabru Gram | Bramhadutta Dham | Rajrjeswari Mandir | Radha Govinda Jeu

আঁটপুর (ইংরেজি: Antpur) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার একটি গ্রাম। এটি তারকেশ্বর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি এখানে অবস্থিত অনবদ্য টেরাকোটা মন্দিরের জন্য বিখ্যাত।

◆রাধাগোবিন্দজিউ মন্দির:

আঁটপুরের সবথেকে বিখ্যাত মন্দির হল রাধাগোবিন্দজিউ মন্দির। এটি প্রায় ১০০ ফুট উঁচু । বর্ধমান রাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র এই মন্দিরটি গঠন করান। মন্দিরটি নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৭০৮ শকাব্দে)। মন্দিরটির গায়ে অসাধারণ টেরাকোটা বা পোড়ামাটির কারুকার্য আছে। মন্দিরের ভিতের ইঁটগুলি গঙ্গামাটি ও গঙ্গাজলে তৈরি। টেরাকোটার বিষয়গুলি নেওয়া হয়েছে ১৮টি পুরান, রামায়ণ, মহাভারত, ভারতের ইতিহাস এবং মন্দির গড়ার সমসাময়িক বিষয় থেকে। মন্দিরটির চণ্ডীমণ্ডপ এবং দোলমঞ্চে কাঠের কারুকার্য আছে।

এই মন্দিরটি যে সময়ে নির্মিত হয়েছিল সে সময়ে মুসলমান রাজত্ব হ্রাস পাচ্ছিল এবং ইউরোপিয়ানদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এরকম বলা হয়ে থাকে যে কৃষ্ণরাম মিত্র হিন্দুদের উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। এর আগে বিষ্ণুপুরেই টেরাকোটা মন্দিরের সবচেয়ে ভালো উদাহরনগুলি ছিল। কিন্তু এই মন্দির বিষ্ণুপুরের এই গুরুত্ব খর্ব করেছিল।

মন্দিরটির গায়ের টেরাকোটাগুলিতে ভারতের ইতিহাস পুরান এবং সর্বধর্ম সমন্বয়কে সার্থকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে রাধাকৃষ্ণ, দুর্গা ও চণ্ডী, বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া যুদ্ধের বিভিন্ন দৃশ্যও স্থান পেয়েছে। যুদ্ধের টেরাকোটা ভাস্কর্যগুলিতে অশ্বারোহী, গজারোহী এবং উটারোহী সৈন্যদের দেখা যায়। এছাড়া কামান এবং বন্দুক নিয়ে সৈন্যদের টেরাকোটাও দেখা যায়। হিন্দু পুরান ও ঐতিহাসিক চরিত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন মুসলমান বাদশা, এবং ইউরোপিয়ানদেরও তুলে ধরা হয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে। মন্দিরটি সিল্ক রুটের উপর অবস্থিত হওয়ায় বহু সংস্কৃতির ছাপ এর উপর পড়েছে। রাধাগোবিন্দজিউয়ের মন্দিরটি কালের প্রভাবে বর্তমানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। তবুও বেশিরভাগ টেরাকোটাই এখনো ভাল অবস্থায় আছে। নিরাপত্তার কারণে বর্তমানে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।

◆রামকৃষ্ণ মঠ:

আঁটপুরে বাবুরাম ঘোষের (যিনি পরবর্তীকালে স্বামী প্রেমানন্দ বলে পরিচিত হন) গ্রামের বাড়ি ছিল। আঁটপুরেই স্বামী বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের আরো আটজন শিষ্য ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর তারিখে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন।
আঁটপুরে স্বামী প্রেমানন্দের জন্মস্থানের উপর রামকৃষ্ণ-প্রেমানন্দ আশ্রম গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এই স্থানটি রামকৃষ্ণ মিশন দ্বারা সংরক্ষিত।

◆রাবরী গ্রাম:
হুগলি জেলার চণ্ডীতলা থানার আঁইয়া পঞ্চায়েতের গাংপুর গ্রামকে লোকে চলতি ভাষায় রাবড়ি গ্রাম নামেই চেনে। এই গ্রামের প্রায় চল্লিশটি বাড়িতেই রাবড়ি তৈরি হয় এবং গ্রামের বেশির ভাগ লোকের রুটি রুজি এই রাবড়ির উপরেই নির্ভরশীল।
প্রায় পঁচিশ বছর ধরে এই শিল্প গ্রামে চলে আসছে। বিশাল মাপের মাঝখানে খাঁজকাটা কড়াই প্রয়োজন হয় রাবড়ি তৈরির জন্য। গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই তা রয়েছে। মাটির উনুনের উপরে দুধ জাল দিয়ে দিয়ে রাবড়ি তৈরি করা হয়।(১কেজি দাম ৩০০টাকা)।

◆রাজরাজেশ্বর মন্দির, দ্বারহাট্টা:

রাজরাজেশ্বর মন্দিরটি ১৭২৮ খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত পূর্বমুখী তিন খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার বিশিষ্ট এই আটচালা মন্দিরটি দৈঘ্যে প্রায় ২৪ফুট এবং প্রস্থে ২১ ফুট। মন্দির সমুখের দেওয়ালগাত্রে পোড়ামাটির ফলকে উৎকীর্ণ আছে রামরাবনের যুদ্ধ, কৃষ্ণের নৌকাবিলাস, দুর্গা, মহাবীর, লক্ষ্মী, সরস্বতী, অর্জুন প্রভৃতির মূর্তি ও পর্তুগীজ সৈন্যদের চিত্র ইত্যাদি।

◆ব্রহ্মদত্ত ধাম:

বাড়ুইপাড়া থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে বনমালীপুর, একটি মারাঠী সংস্থার উদ্দ্যোগে গড়ে উঠেছে এক সুবিশাল মন্দির যার নাম "ব্রাহ্মদত্ত ধাম"।আগামী দিনে শুধু বাংলা নয়, ভারতের সেরা মন্দিরগুলির মধ্যে এটি হতে চলেছে একটি অন্যতম মন্দির।

প্রায় ১৫০ বিঘা জমির বিস্তৃত এই মন্দির প্রান্তসীমা যার মধ্যে ১৫ বিঘা জমির উপর এই ব্রহ্মদত্ত ধাম স্থাপন করা হয়েছে। এটি হুগলী জেলার সর্ব বৃহৎ মন্দির।
জগৎ গুরু শঙ্করাচার্য যেমন হিন্দুদের একত্রিত করার জন্য চার পীঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেরকম পুনের সৎগুরু নারায়ণ মহারাজের মূল মন্ত্র হলো মানুষের মানবতা জাগ্রত করা, তাই নারায়ণ মহারাজ ও তাঁর শিষ্যরা চারধাম নির্ণয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যার মধ্যে ২ টি ধাম সম্পন্ন হয়ে গেছে। প্রথমটি হলো শিবদত্ত ধাম যেটা মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত আর দ্বিতীয়টি হলো অনুসুয়াদত্ত ধাম যেটা কন্যাকুমারীতে অবস্থিত, আর তৃতীয়টি হলো, পশ্চিমবঙ্গের এই বারুইপাড়ায় অবস্থিত ব্রহ্মদত্ত ধাম। মন্দিরটি ২০১৮ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল, এই মন্দিরটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, এটা সম্পূর্ণ হতে আরো ৩ থেকে ৪ বছর লাগবে, এই মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হলে শেষ মন্দির বা ধামের কাজ শুরু হবে হিমাচলে।

এই মন্দিরের বিগ্রহটি শ্বেত পাথরের দ্বারা নির্মিত। এই বিগ্রহের বৈশিষ্ট্য হল, একই মূর্তিতে ভগবান ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর অবস্থান করছেন, এই মূর্তির ওজন আনুমানিক সাড়ে তিনশ কেজি।এই বিগ্রহের পাশ দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামলে দেখতে পাওয়া যাবে বাবা তারকনাথের - ভলানাথের!

এছারাও মন্দিরের বাইরে আছে শ্রী গনেশ জীর বিগ্রহ ও কপিল মুনির বিগ্রহ। মন্দিরের প্রবেশ পথেই রয়েছে একটি শ্বেত পাথরের তৈরি কচ্ছপ মুর্তি।

#antpur
#dwarhatta
#rabrigram
#brahmaduttadham