বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পেশাগত জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং দেশের রাজনীতি, ব্যবসা, সরকারি ও বেসরকারি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। শিক্ষার প্রতি নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও একাগ্রতার কারণে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত।
১৮৩৬ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজারস্থ প্যারেড গ্রাউন্ডের এক কোণে অবস্থিত পর্তুগিজ আমলের একটি স্থাপনায় যাত্রা শুরু করে "চট্টগ্রাম জেলা স্কুল" হিসেবে। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তেত্রিশ বছর পর, ১৮৬৯ সালে এটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। কলেজ হিসেবে উন্নীত হওয়ার পর, মি. জে. সি. বোস এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন থেকেই এটি "চট্টগ্রাম কলেজ" বা "চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ" নামে পরিচিত।
এক বছর চলার পর অর্থাভাবে কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৮৭১ সালে মিরেরসরাই থানার ধুম নিবাসী রায় বাহাদুর গোলকচন্দ্র রায়ের দশ হাজার টাকা অনুদানে এটি পুনরায় চালু হয়।
প্রথমে কলেজে এফ.এ বা ফাস্ট আর্টস পর্যন্ত পড়ানো হতো। এর সঙ্গে ছিল প্লিডারশিপ পরীক্ষার জন্য আইন শিক্ষার ব্যবস্থা। ১৯০৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হলে কলেজে আইন শিক্ষার ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়। ১৯১০ সালে কলেজটি প্রথম শ্রেণির ডিগ্রি কলেজরূপে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। এ সময় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানে অনার্স পড়ানোর অনুমোদন পাওয়া যায়। ১৯২৪ সালে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ শামসুল উলেমা কামালউদ্দীন আহমদ অধ্যক্ষ হয়ে আসেন। চট্টগ্রাম কলেজে তিনিই প্রথম মুসলমান অধ্যক্ষ। ১৯৪৮ সালে আই.এসসি-তে জীববিজ্ঞান এবং বি.এ শ্রেণিতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয় খোলা হয়। ১৯৫৫ সালে কলেজে অনার্স পড়ার ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হয়। পরে ১৯৬০ সালে ইংরেজি, বাংলা, অর্থনীতি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিতে আবার অনার্স পড়ানোর স্বীকৃতি পাওয়া যায়। ১৯৬২ সালে বি.এসসি-তে প্রাণিবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা এবং বি.এ, বি.এসসি-তে পরিসংখ্যান চালু করা হয়।
পাকিস্তান আমলের দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে বিজ্ঞান গবেষণাগারসমূহের প্রভূত উন্নয়ন এবং বিশাল প্রশাসনিক ভবন, রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান ভবন, শিক্ষক নিবাস, নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণ, পুরাতন ছাত্রাবাসের সম্প্রসারণ ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজ হয়। চট্টগ্রাম কলেজ গ্রন্থাগারে বর্তমানে ৬০ হাজারের অধিক বই রয়েছে। উপমহাদেশের বহু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি এ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। এঁদের মধ্যে আছেন সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, ড. জনার্দন চক্রবর্তী, ড. ভবতোষ দত্ত, ড. সুবোধ সেনগুপ্ত, যোগেশচন্দ্র সিংহ, মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন এবং মোতাহার হোসেন চৌধুরী। ছাত্রদের মধ্যেও রয়েছেন আজকের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তি। প্রিয়দারঞ্জন রায়, হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী, আসহাবউদ্দীন আহমদ, ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং ড. আহমদ শরীফ এ কলেজের ছাত্র ছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এ কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের ভূমিকা ছিল গৌরবজনক। এ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় আন্দোলনে চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।
প্রায় ২৫ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও দেড়শতাধিক শিক্ষক নিয়ে বর্তমানে এ কলেজে বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, গণিত, পরিসংখ্যান, ভূগোল, পালি, সংস্কৃত, উর্দু, আরবি এবং মনোবিজ্ঞানসহ মোট ১৭টি বিষয়ে স্নাতক এবং ১৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে।
চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ড্রোন ভিডিওসহ একটি ইউটিউব ভিডিওর জন্য আপনি নিম্নলিখিত বাংলা ও ইংরেজি হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করতে পারেন:
#চট্টগ্রামকলেজ #চট্টগ্রাম #বাংলাদেশ #চট্টগ্রামেরইতিহাস #কলেজজীবন #শিক্ষা #ঐতিহ্য #বাংলারঐতিহ্য #ড্রোনভিডিও #পাখিরচোখেচট্টগ্রাম কলেজ #শিক্ষাঙ্গন #বিশ্ববিদ্যালয় #চট্টগ্রামেরগর্ব #শিক্ষাব্যবস্থা #সেরা_কলেজ
#ChittagongCollege #Chittagong #Bangladesh #CollegeHistory #Heritage #DroneView #AerialView #CollegeLife #Education #HistoricalPlaces #TopCollege #BestCollege #University #CampusLife #DroneFootage #Aerialview
Информация по комментариям в разработке