Скачать или смотреть Class 12 মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে

I hope you like this video if so leave a like and also comment what did u learn from this video.

এই ক্লাসটি যে যে এটেন করেছো দয়া করে তাদের নাম নিচে কমেন্টে লিখে জানাও।


ছোট গল্প- "কে বাঁচায় কে বাঁচে"
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
দ্বাদশ শ্রেণি

সরলার্থ-মার্কসীয় ও ফ্রয়েডীয় মতবাদে উদ্বুদ্ধ বিশিষ্ট সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "কে বাঁচায় কে বাঁচে" ছোট গল্পটি "পঞ্চাশের মন্বন্তরের" প্রেক্ষাপটে রচিত। গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় একদিন অফিস যাবার পথে প্রথম ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যু স্বচক্ষে দেখে। জীবনে প্রথম এমন একটা অনাকাঙ্ক্ষিত, বীভৎস মৃত্যু দেখে সে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অফিসের কল ঘরে দরজা বন্ধ করে পেট ভর্তি খাবার মৃত্যুঞ্জয় বমি করে উগরে দেয়। পাশের ঘর থেকে নিখিল এসে শূন্য দৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মৃত্যুঞ্জয়কে।
অফিসে মৃত্যুঞ্জয় ও নিখিল- দুজনের মাইনে সমান হলেও একটা বাড়তি কাজের জন্য মৃত্যুঞ্জয় পঞ্চাশ টাকা বেশি পায়। দুই সন্তানের পিতা মৃত্যুঞ্জয়কে নিখিল খুব পছন্দ করে একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোওবাসে। দু'জনের মানসিকতায় বিস্তর ফারাক থাকলেও মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও পঁচা আদর্শবাদের "কল্পনা তাপস" মৃত্যুঞ্জয় এর কাছে অনেক সময় নিখিলকে হার মানতে হয়।
মৃত্যুঞ্জয়কে শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে দেখে নিখিল বুঝতে পারে বড় কোন সমস্যার সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছে। কারণ জিজ্ঞাসা করতেই মৃত্যুঞ্জয় আনমনে অস্ফুটস্বরে ফুটপাতে বীভৎস মৃত্যুর কথা বলে। আত্মগ্লানিতে দগ্ধ হয় সে। নিজে পেট ভরে খাওয়া দাওয়া করে দিব্যি বেঁচে-বর্তে আছে সে। অথচ ফুটপাতের মানুষগুলো না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকে মৃত্যুঞ্জয়। এক বেলা খাবার বন্ধ করে দেয় সে। বাড়ি নয়জন লোকের কথা না ভেবে মাইনের সমস্ত টাকাটা রিলিফ ফান্ডে দিয়ে দেয় । এ বিষয়ে নিখিলের সঙ্গে তার মতান্তর হলেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকে মৃত্যুঞ্জয়।
ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করে মৃত্যুঞ্জয়। শহরের আদি-অন্তহীন ফুটপাথে সে একা একা ঘুরে বেড়ায়। ফুটপাথের নিরন্ন মানুষগুলিকে সে সব সময় লক্ষ্য করে । মৃত্যুঞ্জয় যেন তাদের সঙ্গে একাত্ম হতে চায়।দরদ নামক ছোঁয়াচে বস্তুটা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। টুনুর মা অসুস্থ হয়ে বিছানা নিলেও কোনো খোঁজখবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনা মৃত্যুঞ্জয়। একসময় দেখা যায় "দরদ" নামক ছোঁয়াচে বস্তুর তার দ্বারা টুনুর মাও আক্রান্ত হয়। মৃত্যুঞ্জয় মতো তারও কেবল ফুটপাথের অনাহারক্লিষ্ট মানুষগুলোর কথাই মনে পড়ে।
এখন ফুটপাথের নির্দিষ্ট স্থানেই দেখা যায় মৃত্যুঞ্জয়কে। সে এখন আর অফিসে যায় না। মৃত্যুঞ্জয় তার ছুটির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। অফিস থেকে ফেরার পথে নিখিল মৃত্যুঞ্জয় এর কাছে যায়। নানা যুক্তি দেখিয়ে তাকে আগের জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। মৃত্যুঞ্জয় শোনে, কিন্তু তার চোখ দেখলেই বোঝা যায়, কোন কথার মানে বুঝতে পারছেনা মৃত্যুঞ্জয়। কথার মারপ্যাঁচও তার কাছে অর্থহীন হয়ে গেছে আজ। হাল ছেড়ে দেয় নিখিল।
অবশেষে নেমে আসে চূড়ান্ত পরিণতি। নিখিলেশের গায়ের সিল্কের জামা উধাও হয়, ধুতি বদলে যায় ছেঁড়া ন্যাকড়ায়।ধূলিধূসরিত দেহে, দাড়ি ভর্তি মুখ নিয়ে সকলের সঙ্গে ফুটপাথেই পড়ে থাকে, লঙ্গরখানায় মারামারি করে খিচুড়ি খায়। আর বলে- "গাঁ থেকে এইচি। খেতে পাইনে বাবা। আমায় খেতে দাও।"
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার "কে বাঁচায় কে বাঁচে" গল্পে নিখিলের মুখ দিয়েই নিজের বক্তব্যকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। নিখিল একসময় মৃত্যুঞ্জয়কে বলেছে- "দশ জনকে খুন করার চেয়ে নিজেকে না খেয়ে মারা বড় পাপ।"আসলে লেখক বলতে চেয়েছেন নিজেকে শেষ করে দিয়ে অপরকে বাঁচানো যায় না। একক প্রচেষ্টায় কেউ কাউকে বাঁচাতে পারেনা। তাই গল্পের নামকরণ যথার্থ ও যুক্তিসম্মত।


#Tapan #Sir