Скачать или смотреть অন্ধকার | কবিতা

#আবৃত্তি #বাংলাকবিতা
. অন্ধকার
নিশাত আনজুম এ্যানি

ওমা কাঁদছো কেনো তুমি?
চোখ মুছে দেখো এইতো আমি!
কাঁদেনা লক্ষী মা আমার!
তাহলে কিন্তু আমিও করবো মুখ ভার!

ওরা আমায় মেরে ফেলেছে,
তাই কাঁদছো তুমি?
কাঁদেনা মা কাঁদেনা এইতো আমি!

দেখোনা মা! বাবাও খুব কাঁদছে!
এসব এখন আমার কি ভালো লাগছে?
ওমা! আমায় কি নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে!
একটু দাঁড়াও! আমার মায়ের সাথে কথা আছে!

মা তুমি কি শুনবে
আমার সাথে কি হয়েছে!
ডাক্তারগুলো কিন্তু ভুল রিপোর্ট দিয়েছে!

গাড়ির তলে চাপা পড়ে আমি মরিনি!
মা জানো! ওরা চিৎকার টাও করতে দেয়নি!
একটা না, দুটো না! আটটা হায়েনা ছিলো!
এইটুকু জান আমার কি করে বাঁচি বলো!

ওমা তুমি কি শুনছো?
কাউকেই বলে যেতে পারলাম না!
তোমায় না বলে কি করে যাই মা?

সকালের নাস্তা খেয়ে স্কুলে আমি যাচ্ছিলাম!
এমন সময় কেউ পিছু নিয়েছে! টের পাচ্ছিলাম!
কিছু বোঝার আগেই মা চোখ মুখ বেধে দিলো!
চারদিক আমার ঘোলা হয়ে অন্ধকার নেমে এলো!

যখন আমার জ্ঞান এলো মা!
জানো কি দেখলাম?
কাপড়ে মোড়া চেহারায় হায়েনা খুঁজে পেলাম!

দেখতে এরা অবিকল মানুষের মত!
জানোয়ার গুলো করেছে আমায় ক্ষত বিক্ষত!
জানো মা! বাঁচার অনেক চেষ্টা করেছিলাম!
একবার তো হাতের বাঁধন ও খুলে ফেলেছিলাম!

তাই দেখে মা এক জানোয়ার,
সিগারেটের আগুনে হাতটা পুড়িয়ে দিলো!
মনে হচ্ছিলো জানটা বুঝি এই বেড়িয়ে গেলো!

একের পর এক হায়েনা গুলো ঝাপিয়ে পড়ছিলো!
রুহ আমার বার বার করে কেঁপে কেঁপে উঠছিলো!
একটা সময় শেষ হয়ে গেলো চোখের পানি!
ব্যাথায় যন্ত্রণায় নড়তেও পারছিলাম না আমি!

একজন বলছিলো শুনছিলাম
এবার আমায় জংগলে ফেলে আসবে!
আরেকজন বলছিলো আরো কিছুদিন আটকে রাখবে!

সেই কণ্ঠস্বরটা খুব চেনা মনে হলো!
ধীরে ধীরে স্বরটা স্পষ্ট হতে লাগলো!
ক্ষীণ কন্ঠে ডাকলাম আমি "জামিল ভাই"!
সে বললো "শালি তো চিনে ফেলছে! আর রক্ষে নাই"!

হ্যাঁ মা ঠিক বলছি!
পাশের বাড়ির জামিল ভাই এই ছিলো!
সেই তো মা মেরে ফেলার প্ল্যানটা করলো!

বালিশ চাপা দিয়ে আমায় খুন করলো!
হাতে পায়ের রগ কেটে মরেছি কিনা দেখলো!
একটা চটের বস্তায় করে আমায় ভড়লো!
তারপর সোজা নিয়ে হাইরোডে ফেলে দিলো!

ওমা জানো! জানো!
একবার না! দুবার না! চারবার গাড়ি চাপা দিলো!
নিমিষেই মা তোমার মেয়েকে ওরা পিষে ফেললো!

এরপর জামিল ভাইয়ের বাবার হাসপাতাল এ নিলো!
জানো! তার বাবা তাকে খুব বকাবকি করলো!
আমি ভাবলাম এবার এদের প্রাপ্য শাস্তি এরা পাবে!
কিন্তু মা, চাচা চিন্তায় পড়লো এসব ধামাচাপা কিভাবে দিবে!

আমায় নিয়ে লাশকাটা ঘরে
কত্ত রকমের সওদা করলো!
শেষে দুলাখ টাকায় মাগো আমার ন্যায় বিক্রি হলো!

সাদা কাফনে মুড়িয়ে আমায় বাড়ি পাঠিয়ে দিলো!
মাগো স্কুল আমার আরনা যাওয়া হলো!
কেঁদোনা মা! কেঁদে আর কি হবে!
আমায় কি আর তুমি ফিরে পাবে!

ঐ দেখো মা দূরে
জামিল ভাই দাঁড়িয়ে আছে!
মনে মনে খিল খিলিয়ে হাসছে!

মা ভাইয়াও খুব কাঁদছে!
সবার কান্না কাটার মত আমার বুকে লাগছে!
মা শুনলে তো এবার সব কথা!
মা জামিল ভাই আমার খুনি!দিয়েছে আমায় ব্যাথা!

মা প্লিজ এই খুনিকে
সরাও আমার কাছ থেকে!
ও মৃত্যু আমার কিনেছে লাখ টাকার চেকে!

ওমা জানো শরীরে বড্ড ব্যাথা!
বাকী এখনো রয়ে গেলো কত কথা!
কোনদিন কেউ জানবেনা কিভাবে মরেছি!
ক্ষমতার কাছে আমার ন্যায় খুইয়েছি!

ওমা তনু,হিরামনি,নুসরাত
আপুরা আমায় নিতে এসেছে!
তারা সবার আগে খবর পেয়েছে!

আমায় কবরে নামালো আমার খুনিও!
একথা কেউ জানবেনা,জানবেনা মা তুমিও!
এমনি করেই নিভে গেলো আমার জীবনের আলো! আর
ভড়িয়ে দিয়ে গেলো নিকষ কালো অন্ধকার!