আসসালামু আলাইকুম ওরহমাতুল্লাহ
__________________________________
১৪ টি লক্ষণ, যা বুঝায়,আপনার ঈমান দুর্বল
_________________________________________
একজন মানুষের জন্য তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে ঈমান, আর এই ঈমান কখনো মজবুত থাকে আবার কখনো দূর্বল হয়ে যায়।
রাসূল (সঃ) কে মজবুত ঈমান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ“তুমি বলো আমি আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি অতঃপর তার ওপর অবিচল থাক।”
অর্থাৎ ঈমানের হক আদায় করে তার ওপর অটল থাক। সৎ কর্মের মাধ্যমে ঈমান মজবুত হয় আর অসৎ কর্মের মাধ্যমে ঈমান দুর্বল হয়।
অতএব আমাদের ঈমান মজবুত করা খুবই জরুরী যার বিস্তারিত বিবরণ নিয়ে আমরা সামনে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
(১) দুর্বল ঈমানের লক্ষন সমূহঃ
আত্ম-সচেতনতার জন্য দুর্বল ঈমানের লক্ষনগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা আবশ্যক; দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষন হলঃ
১. পাপ করা সত্ত্বেও মনে পাপবোধ সৃষ্টি না হওয়া, যার ফলে এক সময় অন্তর পাষাণ্ড হয়ে যায়।
আর অনেক সময় মানুষ বিভিন্ন পাপকর্মে এতটাই মগ্ন হয়ে যায় যে, তার বুদ্ধিশুদ্ধি সহ পাপের হাতে বন্দী হয়ে যায়, সে ঢাকা পড়ে পাপের আবরণে ফলে কোন ওয়াজ-নসিহত ইত্যাদী তার কোন কাজে আসেনা এবং তার মাঝে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না, একটা সময় তার মৃত্যু এসে যায় সেই সময় কেউ যদি তাকে বারবার কালিমা পড়াতে চায় তখন সে ওটা শুনতে পায় না এবং বুঝতেও পারে না তার মর্ম, এভাবে তার শেষ পরিনতি হয় খুবই মন্দ।
আল্লাহ তালা বলেনঃ
ثُمَّ قَسَتۡ قُلُوۡبُكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَ فَهِیَ كَالۡحِجَارَةِ اَوۡ اَشَدُّ قَسۡوَةً
অনুবাদঃ “অতঃপর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মত অথবা তদপেক্ষাও কঠিন”। (সূরাঃ বাকারা, আয়াতঃ ৭৪)
২. ইবাদাতে আলসতা ও অবহেলা বোধ করা বা ঢিলেমি করা এবং ইবাদতে মনযোগ না থাকা।
যেমনঃ কোরআন তেলাওয়াত না করা, নির্ধারিত সময়ে সলাত আদায় না করা বা করলেও তাতে কোন মজা না পওয়া ইত্যাদি।
আল্লাহ তালা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে বলেনঃ
وَ اِذَا قَامُوۡۤا اِلَی الصَّلٰوةِ قَامُوۡا كُسَالٰی
অনুবাদঃ “তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন দাঁড়ায়, একান্ত শিথিল ভাবে ও আলসেমি ভাব নিয়ে (সূরাঃ নিসা, আয়াতঃ ১৪২)
৩. খামখেয়ালী মেজাজ।
যেমনঃ সামান্য বিষয়েই তুলকালাম করে ফেলা বা মেজাজ সবসময় তিরিক্ষে বা খিটমিটে হয়ে থাকা।
৪. কুরআনের তেলাওয়াত শুনে বিশেষ করে পাপের জন্য শাস্তি কিংবা সৎকাজের জন্য পুরুস্কারের কথা বলা হয়েছে এমন আয়াতগুলো শুনেও হৃদয়ে কোন রকমের কোন প্রভাব বা অনুভূতির তৈরি না হওয়া।
৫. আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের স্মরণ থেকে বিমুখ হওয়া এবং তাঁকে স্মরণ করা কঠিন মনে হওয়া।
৬. শারীয়াহ্ বিরুদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার পরও মনে কোন অনুশোচনা বা অনুতাপ বোধ না হওয়া।
৭. ধন-সম্পদ, সন্তানাদি, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি এসব কিছুর পিছনেই সারাক্ষন ছুটে চলা এবং এগুলো নিয়ে পরস্পরে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠা।
আল্লাহ তালা বলেনঃ
اِعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَا الۡحَیٰوةُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّ لَهۡوٌ وَّ زِیۡنَةٌ وَّ تَفَاخُرٌۢ بَیۡنَكُمۡ وَ تَكَاثُرٌ فِی الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَوۡلَادِ ؕ كَمَثَلِ غَیۡثٍ اَعۡجَبَ الۡكُفَّارَ نَبَاتُهٗ ثُمَّ یَهِیۡجُ فَتَرٰىهُ مُصۡفَرًّا ثُمَّ یَكُوۡنُ حُطَامًا ؕ وَ فِی الۡاٰخِرَةِ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ۙ وَّ مَغۡفِرَةٌ مِّنَ اللّٰهِ وَ رِضۡوَانٌ ؕ وَ مَا الۡحَیٰوةُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ.
অনুবাদঃ তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়।
(সূরাঃ হাদীদ, আয়াতঃ ২০)
তিনি আরও বলেনঃ
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ مِنۡ اَزۡوَاجِكُمۡ وَ اَوۡلَادِكُمۡ عَدُوًّا لَّكُمۡ فَاحۡذَرُوۡهُمۡ
অনুবাদঃ হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক।
(সূরাঃ তাগাবুন, আয়াতঃ ১৪)
৮. ক্রমাগত মানসিক দৈন্যতার পাশাপাশি আর্থিক কৃপণতা বাড়তে থাকা, ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবনতা, উম্মাহ’র বিপদ-আপদে তাদের কল্যাণার্থে সাহায্য করার জন্য কোন প্রকারের অস্থিরতা তৈরী না হওয়া।
আল্লাহ তালা বলেনঃ
هٰۤاَنۡتُمۡ هٰۤؤُلَآءِ تُدۡعَوۡنَ لِتُنۡفِقُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ۚ فَمِنۡكُمۡ مَّنۡ یَّبۡخَلُ ۚ وَ مَنۡ یَّبۡخَلۡ فَاِنَّمَا یَبۡخَلُ عَنۡ نَّفۡسِهٖ ؕ وَ اللّٰهُ الۡغَنِیُّ وَ اَنۡتُمُ الۡفُقَرَآءُ ۚ وَ اِنۡ تَتَوَلَّوۡا یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَكُمۡ ۙ ثُمَّ لَا یَكُوۡنُوۡۤا اَمۡثَالَكُمۡ.
অনুবাদঃ শুন, তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে, অতঃপর তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্থ। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না।
(সূরাঃ মুহাম্মদ, আয়াতঃ ৩৮)
৯. নিজে না করে অন্যকে ভাল কাজের আদেশ দেওয়া।
আল্লাহ তালা বলেনঃ
اَتَاۡمُرُوۡنَ النَّاسَ بِالۡبِرِّ وَ تَنۡسَوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ وَ اَنۡتُمۡ تَتۡلُوۡنَ الۡكِتٰبَ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ.
অনুবাদঃ “তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও আর নিজেরা নিজেদেরকে ভূলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না? (সূরাঃ বাকারা, আয়াতঃ ৪৪)
১০. অন্যের অবনতি, ক্ষয়-ক্ষতি দেখে তাদের সাহায্যে এগিয়ে না যাওয়া বরং উল্টো মানসিক তৃপ্তি বোধ হওয়া।
#islamic #viralvideo #story #alhamdulillah
#islamic #story #off #bangla
Информация по комментариям в разработке