Скачать или смотреть ডাংগুলি খেলা | Danguli game | childhood village game | ছেলেবেলা-Chelebela

ডাংগুলি খেলা | Danguli game | childhood village game | ছেলেবেলা-Chelebela

শৈশবের স্মৃতিময় সব ভিডিও দেখতে ছেলেবেলা-Chelebela চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন।
Facebook page: www.facebook.com/90s.chelebela
#ছেলেবেলা
#Chelebela
#villagegame
#Danguli

ডাংগুলি বাংলার সর্বাঞ্চলীয় একটি জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশে অঞ্চলভেদে খেলাটি ড্যাংবাড়ি, গুটবাড়ি, ট্যামডাং, ভ্যাটাডান্ডা ইত্যাদি নামে পরিচিত। প্রধানত কম বয়সের ছেলেরা এটি খেলে থাকে;

মাত্র দুইটি উপকরণ নিয়ে খেলা হয় এই খেলাটি। একটি হলো দেড় ফুট লম্বা লাঠি যেটাকে (ডাং বা ডাণ্ডা) বলা হয়, অপরটির নাম গুলি, এটা 5/6 ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। যার দুই প্রান্ত কিছুটা সূঁচালো করা থাকে।

শৈশবে ডাংগুলি খেলেননি এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খেলা ডাংগুলি এখন প্রযুক্তির ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে।

তবে, একটা সময় বেশ ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হতো এই খেলাটি। গ্রামাঞ্চলের অনেক শিশুর দিনের প্রায় অর্ধেকটা সময় কেটে যেত ডাংগুলি খেলে। গ্রামে জন্ম নিয়েছে অথচ ডাংগুলি খেলায় মাতেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া ছিল ভার। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগে মোবাইল ফোনের বদৌলতে বদলে গেছে সেই প্রেক্ষাপট।

দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা একটি বা দুটি লাঠি (ডাং বা ডান্ডা), অপরটি প্রায় দুই ইঞ্চি লম্বা ও আরেকটি ছোট লাঠি (যা গুলি নামে পরিচিত)। গুলির বানানো লাঠিটির দুই প্রান্ত কিছুটা সুচাল করা থাকে। প্রথমটিকে ডান্ডা ও দ্বিতীয়টিকে গুলি বা ফুত্তি বলা হয়। প্রধানত কম বয়সের ছেলেরা খেলাটি খেললেও ডাংগুলি মেয়েরা খেলে না বললেই চলে। দুই থেকে পাঁচ-ছয়জন করে দুই দলে বিভক্ত হয়ে এটি খেলা হয়।

খেলার মাঠে ছোট্ট করে একটি লম্বালম্বি গর্ত করা হয়। টসের মাধ্যমে দু’দলের মাঝে যারা দান পায় (টসে জিতে), তাদের একজন গর্তের ওপর গুলি রেখে ডান্ডা মেরে তুলে শূন্যে থাকা অবস্থায় সেটিকে পরের বাড়িতে দূরে ফেলার চেষ্টা করে। প্রতিপক্ষ তখন চারদিকে ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে গুলিটি ধরে ফেলার জন্য। তারা যদি গুলিটি মাটিতে পড়ার আগে ধরে ফেলতে পারে, তাহলে ডান্ডা মারা খেলোয়াড়টি আউট হয়। আর না ধরতে পারলে প্রথম খেলোয়াড়টি তার ডান্ডা গর্তের ওপর রাখে এবং প্রতিপক্ষ গর্তের ওপর রাখা ডান্ডা লক্ষ করে গুলিটি ছুড়ে মারে। গুলিটি ডান্ডা ছুঁলে সে দান হারায়, আর না ছুঁলে সে আবার গুলিটি ডাণ্ডা দিয়ে তুলে দূরে পাঠায়। পরে সে গুলি থেকে গর্ত পর্যন্ত ডান্ডা দিয়ে মাপতে থাকে।

এ মাপ হয় ৭টি পদ্ধতিতে। বাড়ি, দুড়ি, তেড়ি, চাঘল, চাম্পা, ঝেঁক ও মেক। এমন সাত মাপে হয় এক ফুল বা গুট, আর সাত ফুলে হয় এক লাল। ফুল ভাঙা থাকলে তা পরের খেলায় যোগ হয়। আউট না হওয়া পর্যন্ত একজন খেলোয়াড় খেলতে পারে, আউট হলে দ্বিতীয় একজন একই পদ্ধতিতে খেলবে। এভাবে সবাই আউট হয়ে গেলে বিপক্ষ দল দান পেয়ে খেলা শুরু করে। এভাবে যে দলের পয়েন্ট বেশি, খেলায় সেই দল হবে জয়ী। বস্তুত এ খেলাটি অনেকটা বর্তমান যুগের ক্রিকেটের সমতুল্য। এক্ষেত্রেও ক্যাচ হলে অথবা ডান্ডার আঘাত করে আউট করার নিয়ম আছে। বলা হয়ে থাকে, ভারতবর্ষের ডাংগুলি খেলা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্রিটিশরা ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিল।

খেলাটিতে তেমন কোনো সরঞ্জামের দরকার হয় না, হলে অন্যসব খেলার মতো এ খেলায়ও বেশ কিছু ঝুঁকি আছে। খেলার উপকরণ গুলিটি প্রতিপক্ষ ছুড়ে মারলে সেটা চোখে লেগে অনেক সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। দ্বিতীয়বার মারার পর এর তীব্র বেগ ও সুচাল প্রান্তের চোট এই খেলাকে দুর্ঘটনাপ্রবণ করে তুলতে পারে।