Скачать или смотреть ওপেনহাইমার মুভি বাংলা রিভিউ | Oppenheimer Movie Bangla Review | Christopher Nolan

গত একুশে জুলাই মুক্তি পেয়েছে ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ছবি ‘ওপেনহাইমার’। মুক্তির অনেক আগে থেকেই দর্শকের চর্চায় রয়েছে হলিউডের এই ছবি। ‘প্রেসটিজ’, ‘ইন্টারস্টেলার’, ‘ইনসেপশন’, ‘টেনেট’-এর মতো ছবির পরে এ বার ‘ওপেনহাইমার’ নিয়ে আসছেন নোলান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার লস অ্যালামস ল্যাবরেটরির অধিকর্তা ছিলেন পদার্থবিদ জে রবার্ট ওপেনহাইমার। তাঁর জীবন ও ‘ম্যানহাটান প্রজেক্ট’- এ তাঁর ভূমিকা দেখানো হয়েছে এই ছবিটিতে। ছবিতে দেখা যেতে চলেছে ‘ট্রিনিটি টেস্ট’-এর পারমাণবিক বিস্ফোরণের দৃশ্যও। এ দিকে নোলানের দাবি, আইম্যাক্স ক্যামেরায় শুট করা এই ছবিতে কোনও ধরনের সিজিআই ব্যবহার করেননি তিনি। তা হলে বোমা বিস্ফোরণের দৃশ্যে কি সত্যিকারের বোমাই ব্যবহার করেছেন পরিচালক?

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নোলান জানান, পর্দায় অভিনেতাদের প্রতিক্রিয়া ও প্রেক্ষাগ়ৃহে দর্শকের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে ছবির শুটিং করেছেন তিনি। সব দৃশ্যই যাতে বাস্তবের সঙ্গে খাপ খায়, সে কথা ভেবে সিজিআই ও ব্যবহার করেননি ছবিতে। বোমার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে নোলান বলেন, ‘‘এটা ভেবে বেশ মজা লাগে যে দর্শক ভাবেন, বাস্তবের সঙ্গে সাযুজ্য রাখতে গিয়ে আমি এতটাও বাড়াবাড়ি করে ফেলব। তবে এটা ভাবলে কিছুটা ভয়ও লাগে বটে।’’ ঠিক কী ভাবে তা হলে বোমা বিস্ফোরণের দৃশ্যের শুটিং করেছিলেন তিনি? সেই রহস্য যদিও এখনও ফাঁস করেননি হলিউডের নামজাদা এই পরিচালক।
ওপেনহাইমার’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘পিকি ব্লাইন্ডার্স’ ওয়েব সিরিজ় খ্যাত অভিনেতা কিলিয়ান মার্ফি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন ম্যাট ডেমন, রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, এমিলি ব্লান্ট, রামি মালেকের মতো বড় অভিনেতারা। হলিউডের তারকা ছাড়াও একটি বিশেষ চরিত্রে ‘ওপেনহাইমার’-এ দেখা যাবে নোলানের বড় মেয়ে ফ্লোরাকে। নোলান জানান, পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের একটি দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য হঠাৎ করেই ফ্লোরাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। ফ্লোরাও রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন তৎক্ষণাৎ। ছবিতে ফ্লোরার চরিত্রের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সংযোগ রয়েছে পদার্থবিদ ওপেনহাইমার।

পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র যে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল তার নাম ছিল 'ম্যানহাটান প্রজেক্ট' আর সেই বোমা তৈরির প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন রবার্ট ওপেনহাইমার। তাকে নিয়ে হলিউডে তৈরি একটি সিনেমা মুক্তি পায়েছে শুক্রবার, আর সে কারণেই এই বিজ্ঞানীকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন করে আগ্রহ। জাপানের দুটি শহরে এই বোমা ফেলার পর যে বিপুল প্রাণহানি আর ধ্বংসলীলা ঘটেছিল তা এই বোমা তৈরির সময়ই অনুমান করেছিলেন ওপেনহাইমার, গীতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিলেন, তিনি এখন সাক্ষাৎ মৃত্যু আর বিশ্ব ধ্বংসকারীতে পরিণত হয়েছেন।
পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের আগে তিনি ঘুমিয়েছিলেন মাত্র চার ঘণ্টা। একদিকে দুশ্চিন্তা, আরেক দিকে ধূমপানজনিত কাশি - তাকে জাগিয়ে রেখেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের একটি মরুভূমিতে ষোলই জুলাই উনিশশো পঁয়তাল্লিশ সালের ভোরবেলা, সেখানে বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা হতে যাচ্ছে - যার সাংকেতিক নাম ট্রিনিটি।
ওপেনহাইমারের জীবনে উনিশশো পঁয়তাল্লিশ সালের সেই দিনটি ছিল তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর অন্যতম।
সেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ঔজ্জ্বল্য সূর্যকেও ম্লান করে দিল। একুশ কিলোটন টিএনটির ক্ষমতাসম্পন্ন সেই বিস্ফোরণ ছিল তখন পর্যন্ত পৃথিবীর বৃহত্তম।

এর ফলে বাতাসের যে ঝাপটা তৈরি হয়েছিল তা একশো মাইল দূর থেকেও অনুভব করা গিয়েছিল। প্রচণ্ড গর্জনে মরুভূমি কেঁপে উঠলো, আকাশে পাকিয়ে উঠলো মাশরুম আকৃতির মেঘ।

পরবর্তী দিনগুলোতে ওপেনহাইমারের মধ্যে একটা বিষণ্ণতা ভর করেছিল।

রবার্ট চুপচাপ আর আনমনা হয়ে গিয়েছিল, কারণ সে জানতো কী ঘটতে যাচ্ছে।"

একদিন তাকে জাপানীদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে বিড়বিড় করতে শোনা যায়। তিনি বলছিলেন, 'আহা ওই ছোটখাটো বেচারা লোকগুলো, ওই ছোটখাটো বেচারা লোকগুলো!"

কিন্তু কয়েক দিন পরই তার হাবভাব আবার পাল্টে যায়। সামরিক নেতাদের সাথে কথা বলার সময় তিনি বারবার তাদের বলে দিচ্ছিলেন যেন বৃষ্টি বা কুয়াশার সময় বোমাটা ফেলা না হয়, বা খুব বেশি উঁচুতে বিস্ফোরণ ঘটানো না হয় - তাহলে ততটা ক্ষয়ক্ষতি হবে না।"

হিরোশিমায় সফলভাবে বোমা ফেলার পর সহকর্মীদের সামনে তিনি মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে যে ভঙ্গী করেছিলেন - তা ছিল বিজয়ী যোদ্ধার মতই।


তার ওপর দুই হাজার পাঁচ সালে "আমেরিকান প্রমিথিউস" নামে একটি জীবনীগ্রন্থ লেখেন ইতিহাসবিদ কাবার্ড আর মার্টিনজে শেরউইন। হলিউডে ওপেনহাইমার নামে ছবিটি রচিত হয়েছে এ বইটিকে ভিত্তি করেই।
#ওপেনহাইমার_মুভি_বাংলা_রিভিউ
#oppenheimermoviereview
#christophernolan