Скачать или смотреть কবরে বা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা প্রকাশের প্রতীক ফুলের বদলে প্রার্থনা হোক রীতি

কবর ও স্মৃতিস্তম্ভে ফুল নয়, শ্রদ্ধা প্রকাশের প্রতীক হিসেবে ফুলের বদলে প্রার্থনা যুক্ত করা হউক

ঢাকা, ১৬ আগস্ট ২০২৫ — কবর, স্মৃতিস্তম্ভ বা শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া আমাদের সমাজে শোক ও শ্রদ্ধার প্রচলিত রীতি। তবে ইসলামি শিক্ষায় মৃতের প্রকৃত উপকার হয় দোয়া, ইস্তিগফার ও সওয়াবের কাজ থেকে—ফুল থেকে নয়। আলেমদের মতে, শোক প্রকাশ প্রতীকী হতে পারে ফুলে; কিন্তু মৃতের জন্য ফলপ্রসূ হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, সদকা ও নেক আমল।

কোরআনে বলা হয়েছে—

“মানুষের জন্য কেবল সে-সবই আছে, যা সে অর্জন করেছে।” (সূরা আন-নাজম, ৩৯–৪০)



রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—

“মানুষ মারা গেলে তার আমল বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ছাড়া: সদকায়ে জারিয়া, উপকারী জ্ঞান, আর নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।” (সহিহ মুসলিম)



আরেক হাদিসে কবরে যাওয়ার অনুমতির কথা এসেছে—

“আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করা থেকে নিষেধ করেছিলাম; এখন তোমরা কবর জিয়ারত করো, তা আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।” (সহিহ মুসলিম)



এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক এস এম মেহেদী হাসান বলেন,

“আগে সরকারি নানা অনুষ্ঠানে বা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিতে যেতাম—শখও ছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনেকটা আড্ডার পরিবেশই হয়; মৃতদের কোনো উপকার হয়—এমন প্রমাণ নেই। আমি আমার বাবার কবরে ফুল দিইনি। বরং নিয়মিত কবর জিয়ারতে যাই, কোরআন তিলাওয়াত করি, দরুদ পড়ি, তারপর দোয়া করি। উম্মতে মুহাম্মদীর সবার জন্য—আদি থেকে অন্ত—মাগফিরাত চাই; এখানে কোনো ভেদাভেদ করি না, করাও উচিত নয়। তাই আমি জোর দাবি জানাচ্ছি—কবরে বা স্মৃতিস্তম্ভে ফুলের বদলে সরকারি ব্যবস্থায় দোয়া-মোনাজাত বা প্রত্যেকে যার যার ধর্মীয় মতে প্রার্থনার আয়োজন হোক; তাতেই মৃতদের কল্যাণ হতে পারে।”



ঢাকার এক মসজিদের খতিব জানান—

“আমরা শহীদদের সম্মান করব, প্রিয়জনদের স্মরণ করব, তবে তা হবে শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী। ফুল নয়, দোয়া ও সওয়াবের কাজই হবে প্রকৃত শ্রদ্ধা।”



ইসলামি গবেষকদের ব্যাখ্যায়, মৃতের জন্য উপকারী কাজগুলো হলো—তার হয়ে দোয়া, সদকা/দাতব্য কাজ করা, উপকারী জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া, আত্মীয়তার হক আদায় ও মানুষের উপকার করা। এক সাহাবির প্রশ্নে যে মায়ের পক্ষ থেকে দান করলে উপকার হবে কি-না—রাসুল ﷺ উত্তরে বলেছেন, ‘হ্যাঁ।’ (সহিহ বুখারি)—এটি সদকার মাধ্যমে সওয়াব পৌঁছার দলিল হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বার্তা: শ্রদ্ধা প্রকাশের প্রতীক হিসেবে ফুলের বদলে প্রার্থনা যুক্ত করা হউক।