Скачать или смотреть First Tea State of Bangladesh | Vlog 7 | Stand By You |Travel Vlog|

চা বাগান বলতেই আমরা সিলেট বুঝি। সম্প্রতি পঞ্চগড়ে চা বাগান তৈরি হলেও খোদ চট্টগ্রামেই যে বিশাল চা বাগান আছে এটা হয়ত আমরা অনেকেই জানিনা। কর্ণফুলী নদীর তীরে এই চা বাগানটি কিন্তু নতুনও নয়, বরং বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন চা বাগান গুলোর একটা, কেউ কেউ বলে প্রথম চা বাগান এটাই।

কোথায়: কোদালা চা বাগান চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীরে বানানো হয়েছে। স্থানীয় ইতিহাস বলে, ব্রিটিশরা কর্ণফুলী নদী দিয়ে আসা-যাওয়ার সময় কোদালায় বিস্তীর্ণ জায়গা দেখে চা বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। সেই ১৮৯৪ সালে বাগানটি শুরু হয় ব্রিটিশ মালিকানায়, এর পরে বিভিন্ন সময় এর মালিকানা হাতবদল হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৬ সালে তৎকালীন সরকার ব্যক্তি মালিকানায় লিজে চা বাগানগুলো ছেড়ে দেয়। এর মধ্যে প্ল্যাটাস বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে কোদালা চা বাগান পরিচালনা করে আসছে। লোকসানের কারণে ১৯৯৩ সালে প্ল্যাটাস বাংলাদেশ থেকে আনোয়ার গ্রুপ চা বাগানটি লিজ নেয়। তারাও লাভের মুখ দেখতে না পাওয়ায় ২০০৪ সালে ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্র্যাক কোদালা চা বাগানের লিজ নেয়। অন্যরা লাভের মুখ না দেখলেও ব্র্যাক এর নির্দেশনায় কোদালা চা বাগান লাভের মুখ দেখে আর উন্নতমানের চা উৎপাদন করায় বর্তমানে সুনাম অর্জন করেছে।



যাবার পথে পাবেন কর্ণফুলী নদী। ফেরি বা ট্রলার পাবেন নদীতে যা হবে একটা চমৎকার অভিজ্ঞতা।

কিভাবে যাবেন: চট্টগ্রাম থেকে সড়ক এবং নদীপথে দুভাবেই কোদালা চা বাগানে যাওয়া যায়। যারা ঢাকা থেকে আসবেন, তারা ঢাকা থেকে রাতে বাস নিয়ে চট্টগ্রামে আসতে পারেন, তারপরে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম রোডে বিভিন্ন বাস যায়, সেগুলো নিয়ে আসবেন সফর-ভাটা। সেখানে নেমে সিএনজি নিয়ে সরাসরি চলে আসবেন চা বাগানে। নিজস্ব গাড়ি বা ভাড়া করা গাড়ি নিয়েও সরাসরি চা বাগানে আসা যায়। এছাড়া অন্য উপায় হল, চট্টগ্রাম শহর থেকে মরিয়ম-নগর চৌমুহনীতে আসবেন, সেখান থেকে রিকশা নিয়ে কর্ণফুলী নদীর পাড়, সেটা পার হলেই আপনি চা বাগানে। এখানে আসতে অগ্রিম অনুমতি লাগে না। খাবারে ব্যবস্থা নিজেকেই করে নিতে হয়।



চা তোলার পরে এখানে ছায়ায় রাখা হয় দুই দিন।

কি দেখবেন: আপনার জন্য বিশাল এলাকা জুড়ে আছে সবুজ চায়ের বাগানের সমারোহ। আলো ছায়ার খেলা আর ব্রিটিশ স্থাপত্য রীতিতে বানানো বাংলো-বাড়ি গুলোও দেখার মত একেকটা জিনিস। উঁচু নিচু টিলা আছে, তাতে আছে আকা বাঁকা সরু রাস্তা। মন চাইলে সেই রাস্তা দিয়ে উঠে গিয়ে কোন নিরিবিলি টিলায় বসে একটু নিজের মাঝে হারিয়ে যেতে পারেন। হঠাৎ করেই হয়ত দেখবেন অটোমেটিক মেশিন দিয়ে বৃষ্টির মত করে চা গাছে পানি দেয়া হচ্ছে। চা বাগানের বিভিন্ন অংশ ভাগ করা আছে, তাতে একেক সময় একেক এলাকায় চা পাতা তোলার কাজ হয়। পাতা তোলার সিজনে গেলে দেখতে পারবেন অনেক মানুষ পিঠে বাঁশের ডালা নিয়ে দুটি পাতা একটি কুড়ি তুলে যাচ্ছে দ্রুত হাতে। কাজটি যতটা সহজ মনে হয়, অতটা অবশ্য সহজ নয়! কারও কাজের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে আপনিও চেষ্টা করতে পারেন একবার।

ছবি তোলার জন্য খুবই চমৎকার একটা জায়গা, সবুজ প্রকৃতি আর নীল আকাশের নিচে এলাকাটি আসলেই অনেক সুন্দর। নিয়মিতভাবে এখানে টিভি নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমার শুটিং হয়। আপনার ভাগ্যে থাকলে কোন টিভি স্টারের সাথে ছবি তোলার সুযোগও হয়ে যেতে পারে! একটু চেষ্টা করলে চা পাতা থেকে চা বানানোর পদ্ধতি দেখতে পারবেন।

ঘোরাঘুরি শেষে বাংলোতে ফ্রেশ হয়ে নিতে পারবেন, সম্প্রতি একটি কৃত্রিম লেকও তৈরি করা হয়েছে, সেটাও খুব চমৎকার একটি দৃশ্য। সেই লেকে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন, একটু দূর থেকে চা বাগানটি দেখাও যাবে। চা বাগানের পাশাপাশি রাবার ও অন্যান্য গাছের বনায়নও করা হচ্ছে। এক জায়গায় হয়ত দেখবেন গাছ থেকে রাবার রস সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেটা দিয়ে রাবারের বিভিন্ন আকারের প্লেট বানিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে শুকাবার জন্য।

চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দুরে এই জায়গাটি এক দিনে ঘুরে আসার জন্য খুবই চমৎকার। ছুটির দিনে গেলে একটু ভীড় পাবেন, অন্য দিনগুলোতে গেলে বেশ নিরিবিলিতে আপনি সময় কাটিয়ে আসতে পারবেন।

#Bangladesh
#প্রথম #চা_বাগান
#কোদালা