Скачать или смотреть বিলুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্র ব্যাঞ্জোর বাদক নুরু ফকির আর বেঁচে নেই 😢😢

ব্যাঞ্জো বাদ্যযন্ত্রটির জন্ম মূলত: ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। এটিকে আফ্রো-আমেরিকান সংগীতের মধ্যমণি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফিউশন মিউজিকে ব্যাঞ্জোর ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। একে আমেরিকার ওল্ড টাইম মিউজিক ইনস্ট্রুমেন্টও বলা হয়। ১৭ শতকের শেষ দিকে পশ্চিম আফ্রিকায় ব্যাঞ্জো সদৃশ বাদ্যযন্ত্র দেখা গেছে বলে জানা যায়। ১৮ শতকে এটি উত্তর আমেরিকায় বেশ পরিচিত হয়ে ওঠে। সেই সময় আঞ্চলিক গানে এর ব্যবহার শুরু হয়। তবে

বাণিজ্যিকভাবে এর সহজলভ্যতা কিংবা প্রসার ঘটতে আরও প্রায় অর্ধশতাব্দীর মতো লেগে গিয়েছিলো।
এর নামকরণ নিয়ে একাধিক মত রয়েছে। কারও মতে, কিমবুন্দু শব্দ “বাঞ্জা” থেকে “ব্যাঞ্জো” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। কারও মতে আবার, পর্তুগিজ শব্দ “ব্যানডারিয়া” থেকে নামটি এসেছে। এর মতো দেখতে কিছু যন্ত্র বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত আছে। জাপানিজ “শামিজেন”, পার্সিয়ান “টার” ও মরক্কোর “সিন্তির” উল্লেখযোগ্য। সেনেগাম্বিয়ার জোলা আদিবাসীরা “অ্যাকোনটিং” নামের একটা যন্ত্র বাজাতো, যা অনেকটা ব্যাঞ্জোর মতোই।

মূলতঃ ৪ ধরনের ব্যাঞ্জো দেখা যায়। প্লেকট্রাম, টেনর, সেলো ও লো। এর মধ্যে প্লেকট্রামকেই স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কিছু হাইব্রিড ভার্সনও। যেমন: বেজ ও কন্ট্রাবেজ ব্যাঞ্জো। স্ট্রিংয়ের ওপর ভিত্তি করেও এর জাত-ভেদ করা যায়। যেমন ফোর স্ট্রিং, ফাইভ স্ট্রিং ও সিক্স স্ট্রিং। ইউকেলেলের মতো ব্যাঞ্জোতে রয়েছে “ব্যাঞ্জোলেলে”।
প্লেকট্রাম ব্যাঞ্জোয় ৪টি তার ও ফ্রেট ২২টি। নেকের দৈর্ঘ্য ২৬-২৮ ইঞ্চি। একে গিটারের ওপরের চার স্ট্রিংয়ের মতো করেও টিউন করা যায়। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাঞ্জোর মূল বডি কাঠের তৈরি। গোলাকার ফ্রেমে পাতলা রেজোনেটর স্কিন বা চামড়া লাগানো থাকে। এর ওপরে বসানো হয় ব্রীজ।

টেনোর ব্যাঞ্জো হলো শর্ট ভার্সন। এর নেক ১৭-১৯ ইঞ্চি হয়। বাকি সবকিছু প্লেকট্রামের মতোই। এর ফ্রেট ১৭টি। ১৯১০ এর দিকে এর প্রচলন শুরু হয়। লো বা সেলো ব্যাঞ্জো বাজানোর ধরন একটু আলাদা থাকে। একে “ব্যাঞ্জোলিন” বলা হয়ে থাকে।

বেজ ও কন্ট্রাবেজ বডির ক্ষেত্রে টোন একটু ভারী হয়ে আসে। এর বডি সবচেয়ে বড়। এই ব্যাঞ্জোগুলো তিন ও চার তারের হয়।

সিক্স স্ট্রিং ব্যাঞ্জোর প্রচলন মূলতঃ ইংরেজদের হাত ধরে হয়। উইলিয়াম টেমলেট নামের এক ব্যাঞ্জো নির্মাতা ও বাদক এ ভার্সন নিয়ে আসেন বাজারে। মূলতঃ ব্যাঞ্জোর গোলাকার অংশটির পেছনের দিকটা খোলা কিন্তু জিথারের পেছনের দিক বন্ধ থাকে।

ব্র্যাকেট, আইবানেজ, মরগ্যান মনরি, এপিফোন, ফেন্ডার, মার্টিন স্মিথ, সাগা, লুজি প্রভৃতি ব্র্যান্ড বাজারে এই বাদ্যযন্ত্রের জন্য বেশ পরিচিত। বিশ্বখ্যাত ব্যাঞ্জো প্লেয়ারদের মধ্যে রয়েছেন টড টেইলর, অবি বার্থম্যান, স্টিভ মার্টিন, রয় ক্লার্ক, ডেভ হিউম প্রমুখ ব্যক্তিরা।

এশিয়ায় এ যন্ত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া শুরুতে কিছুটা কঠিন হলেও ইদানীং তা মানানসই হয়ে উঠেছে। ফিউশন মিউজিকে এর ব্যবহার এখন চোখে পড়ার মতো। স্টুডিও গুলোতে একটা আলাদা আবহ তৈরি হচ্ছে এই বাদ্যযন্ত্রের গুণেই।