#Ajan #Salat #ETCTv
ইসলামী খেদমতের সময় আজান হলে কি করবেন ..?? মুফতি মাওলানা আশরাফুল ইসলাম সিদ্দিকী l ETC Tv
,পৃথিবীর সবচেয়ে সুমধুর ধ্বনির নাম আজান—এটি মুসলিম-অমুসলিম-নির্বিশেষে কোটি মানুষের উপলব্ধি।তা হবে না কেন? এ আজান তো সৃষ্টির প্রতি মহান সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তার আহ্বান। একজন মানুষকে যখন তার মহান মালিকের প্রতি আহ্বান করা হয়, তার উপলব্ধি তখন কেমন হতে পারে?
তাই আজানের আওয়াজ শুধু মুসলমানের অন্তরেই নাড়া দেয় না, বরং তা অমুসলিমের অন্তরকেও আকর্ষণ করে। যুগে যুগে যার অজস্র উদাহরণ রয়েছে।
হ্যাঁ, হিংসুক ও নিন্দুকের কথা ভিন্ন। আল্লাহর ভাষায়, ‘যার অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দেন, সে (হেদায়েতের) আলো থেকে বঞ্চিত হবেই।’
তাই ইসলামে আজানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আজান শুনে আজানের জবাব দেওয়ারও রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। আজান শ্রবণকারীরও মৌখিকভাবে আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, এর জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১১)
আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতিগুলো আমাদের প্রত্যেকেরই জানা রয়েছে, মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে।কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’ বলবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩৮৫)
তবে কোনো কোনো বর্ণনায় ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময়ও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানি, হাদিস: ৪৫৮)
আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউমের জবাব ইসলামী ফিকহের বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনামতে, ফজরের আজানে ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’-এর জবাবে ‘সাদাকতা ও বারারতা’ বলতে হবে।‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’শব্দের অর্থ হল ' ঘূম থেকে নামায উত্তম ।
কেননা হাদিস শরিফে এসেছে , আজানের জবাবে তোমরাও মুয়াজ্জিনের অনুরুপ বলবে ।প্রচলিত কিছু ভুল আছে সেরকম ২ টি ভুল ও আলোচনা করছি , কেউ কেউ আজানে ' আল্লাহু আকবার ' -এর জবাবে ‘জাল্লা জালালুহু’ পড়ে থাকেন। এটি সুন্নাহপরিপন্থী।
অনেকেই আজানের সময় জবাব দিতে গিয়ে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জবাবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলে থাকে।এটিও উচিত নয়। কেননা এ সময় দরুদ পড়ার নির্দেশ নেই।আয,এহপ
বরং তখনো মুয়াজ্জিনের অনুরূপ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলাই সুন্নাত।
এই দরুদ পাঠ করবে আজান শেষ হওয়ার পর। আমাদের দেশে আজানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলার সময় অনেকেই বৃদ্ধাঙুলে চুমু খেয়ে চোখে মুছে থাকে।
কেউ কেউ আবার সঙ্গে ‘কুররাত আইনি’—এ দোয়াও পড়ে থাকে। অথচ ইসলামী শরিয়তে এর কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং এটি বর্জনীয়।
প্রসিদ্ধ আছে, আজানের জবাব না দিলে বা আজানের সময় কথা বললে বেঈমান হয়ে যায় কিংবা বেঈমান অবস্থায় মারা যাওয়ার ভয় আছে
—এরূপ কোনো বর্ণনা হাদিসের কিতাবে নেই। সুতরাং এটি ভ্রান্ত বিশ্বাস। তবে আজানের সময় চুপ থাকতে হবে।
যারা আজানের জবাব দেবে না তাড়া হলেন , নামাজ আদায়কারী, পানাহার অবস্থায়, ইস্তিনজাকারী, মহিলাদের ঋতুকালীন ইত্যাদি সময়।
তবে অনেক আলেমের মতে, আজানের পরক্ষণেই যদি উল্লিখিত কাজ থেকে অবসর হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দিয়ে দেওয়া উত্তম।
কোরআন তেলাওয়াতকারী তেলাওয়াত সাময়িক বন্ধ রেখে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম।
জুমার দ্বিতীয় আজানের সময় যখন খতিব সাহেব মিম্বরে উপবিষ্ট থাকেন, তখন ফেকাহবিদদের নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী জুমার দ্বিতীয় আজানের জবাব মৌখিক না দেওয়াটাই উত্তম।
তা সত্ত্বেও কেউ দিতে চাইলে মনে মনে জবাব দিতে পারে।
আজানের সময় দুনিয়াবি কথা ও কাজে লিপ্ত থাকা ,আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত।
একান্ত প্রয়োজন না হলে সাধারণ দ্বিনি ও দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকা অনুচিত।
বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখবে।
ওয়াজ বা কোনো দ্বিনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে সবাইকে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম।
মনে রাখতে হবে, একজন আজানের জবাব দিলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না।
কেননা আজানের জবাব দেওয়া শ্রবণকারী সব মুসলমানের জন্য সুন্নত। '
রেডিও-টেলিভিশনের আজানের সরাসরি সম্প্রচার করা হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নাত।
রেকর্ড করা হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নাত নয় । আজানের পর দুরুদ শরীফ ও দোয়া পাঠ করা সুন্নাত । হাদিস শরিফে এর ফজিলত বর্নিত হয়েছে ।
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনে বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি আজানের পর আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াস-সালাতিল কায়িমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবআছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়া আদ্তাহ’
তার জন্য কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত ওয়াজিব হবে।’ (তিরমিজি, বুখারি, ইবনে মাজাহ)
অন্য বর্ননায় রয়েছে , তোমরা মুয়াজ্জিনের অনুরুপ শব্দে আজানের জবাব দাও , অতঃপর দরুদ পাঠ করো , এরপর আমার জন্য
বেহস্তের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থানের জন্য দোয়া করো । আশা করি , আল্লাহ তায়ালা আমাকেই সে স্থান দান করবেন।
যে ব্যক্তি এ দোয়া করবে , তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যায় । (মুসলিম হাদিসঃ৩৮৪)
Информация по комментариям в разработке