Скачать или смотреть সুরধ্বনির কিনারায় II Surodhonir kinaray II Radharaman II Sreebhumi Kolkata

"সুরধ্বনির কিনারায় সোনার নুপুর দিয়া পায়" —
রাধারমণ দত্তের এক মন ছুঁয়ে যাওয়া বাউল গান,
যার প্রতিটি শব্দ যেন হৃদয়ে বেজে ওঠে এক অপার্থিব সুরে।

এই বিশেষ পরিবেশনাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল Sylhet Utsav 2003-এ,
South Kolkata Sylhet Association-এর উদ্যোগে,
যেখানে শ্রীভূমি, কলকাতা-র শিল্পীরা তাঁদের অপূর্ব সুরেলা পরিবেশনার মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।

📍 স্থান: সাউথ কলকাতা
📅 ইভেন্ট: Sylhet Utsav 2003
🎤 গান: সুরধ্বনির কিনারায়
🎼 মূল স্রষ্টা: রাধারমণ দত্ত
🎶 পরিবেশনায়: শ্রীভূমি, কলকাতা

এটি একটি কীর্তন, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর (গৌরাঙ্গ) প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবেদনমূলক।


🌿 অর্থ ও ব্যঞ্জনা বিশ্লেষণ:

🔹 সুরধ্বনি – সুরের ধ্বনি, অর্থাৎ সংগীতের অনুরণন বা কোনো অতীন্দ্রিয় শব্দপ্রবাহ। এখানে এটি কেবল সংগীত নয়, বরং আধ্যাত্মিক সুরের ইঙ্গিত দেয়, যা হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত হয়।

🔹 কিনারা – সীমানা বা প্রান্ত। এই শব্দটি এখানে এক বিশেষ মানসিক বা আধ্যাত্মিক সীমারেখার প্রতীক – যেখানে শ্রুতিসাধনার এক অবর্ণনীয় স্তরে শ্রোতা পৌঁছে যায়।

🔹 সোনার নুপুর – নুপুর সাধারণত নারীর পায়ে থাকে, কিন্তু এখানে এটি এক ঈশ্বরীয় বা আত্মার রূপক। ‘সোনার’ শব্দটি দিয়ে সেটিকে মহামূল্যবান, অলৌকিক, ও পবিত্র করে তোলা হয়েছে।

🔹 দিয়া পায় – এই অংশে বোঝানো হচ্ছে, সেই সুরের কিনারায় কোনো এক অলৌকিক অস্তিত্বের (হয়তো ভগবান, কোনো দেবী বা আত্মার) পদধ্বনি পাওয়া যায়, যা নুপুরের রিনঝিন শব্দে ধরা দেয়।
✨ আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা:

এই পংক্তিটি মূলত রাধারমণ দত্তের সেই ধারার, যেখানে ভক্তি ও প্রেম একাকার হয়ে আত্মানুসন্ধান হয়।
এই গানটি শুধু কোনো সঙ্গীত নয়, এটি সুরের মাধ্যমে ঈশ্বরকে খোঁজার চেষ্টা। সুরধ্বনির প্রান্তে এক অপার্থিব উপস্থিতি টের পাওয়া যায় — যেন ঈশ্বর বা প্রিয়তমা স্বয়ং এসেছেন নুপুরের শব্দে।
রূপক চিত্রকল্প:

সুর = সাধনার পথ

নুপুরের শব্দ = ঈশ্বরের উপস্থিতির ইঙ্গিত

কিনারা = আত্মানুভূতির সীমা, যে প্রান্তে হৃদয় থমকে দাঁড়ায়
"সুরধ্বনির কিনারায়"

গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর কীর্তন ও নামসংকীর্তন এমন এক সুরপ্রবাহের জন্ম দেয়, যা কেবল শ্রুতির জন্য নয় — আত্মার জন্যও।
এই “সুরধ্বনি” কেবল গান নয়, এটি হরিনাম সংকীর্তনের শব্দরূপে ঈশ্বরের আবির্ভাব।

ভক্ত যখন গৌরচন্দ্রের নামের কীর্তনে নিমগ্ন হয়, তখন সেই সুরধ্বনি তাকে আত্মবিস্মৃত অবস্থায় নিয়ে যায় — তার অনুভূতিতে, চৈতন্যে একপ্রকার পরমানন্দ জাগে। সেই সুরধ্বনির "কিনারা" বা প্রান্তে এসে সে টের পায় — কেউ এসেছেন…
"সোনার নুপুর দিয়া পায়"

এটি সরাসরি গৌরাঙ্গদেবের রূপ ও গমনাগমনের এক রূপক চিত্র।

🔸 গৌরচন্দ্রের শরীর ছিল “সোনার মত দীপ্তিমান” — একে অনেক সময় ‘গৌরবর্ণ’ বা ‘তেজোময় সুবর্ণ দেহ’ বলা হয়।
🔸 তাঁর চলাফেরা, বিশেষত সংকীর্তনের নৃত্যে, যেন পদ্মপত্রে কণার মতো কোমল ও অলৌকিক।
🔸 সেই সোনার নুপুরের শব্দ হলো ঈশ্বরের আগমনের পূর্বসংকেত — তাঁর উপস্থিতির আনন্দ-ঘোষ।

এখানে ‘পায়’ মানে পদচিহ্ন নয় কেবল, বরং গৌরাঙ্গদেবের আবির্ভাব — ভক্তের হৃদয়ে, পরিবেশে, কীর্তনের আসরে।