Скачать или смотреть দুবাইয়ের আল-কোরআন পার্ক (Al Quran Park in Dubai)

সুউচ্চ ভবন, মরুভূমিতে ভ্রমণ, দারুণ উত্তেজনাকর সব অ্যাডভেঞ্চার রাইড, কেনাকাটা, পাম দ্বীপ, গ্লোবাল ভিলেজ দেখতে পর্যটকদের জন্য দারুণ ঠিকানা আরব আমিরাতের দুবাই।এসবের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন আকর্ষণ ‘আল-কোরআন পার্ক’। পবিত্র কোরআনের ঐশী বাণী আর নানা অলৌকিক ঘটনার নিদর্শন দিয়ে সাজানো হয়েছে এই পার্ক। শুধু মুসলিম নয়, বিশ্বের শান্তিকামী যে কোনো মানুষের জন্য উন্মুক্ত এই পার্ক । দর্শক বিশ্ব পরিচিতি পর্বে আমাদের আজকের আয়োজন আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত ‘আল-কোরআন পার্ক’।

দুবাইয়ের আল খাওয়ানিজ এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে আল-কোরআন পার্ক। ইসলামি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ইতিহাস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে স্থাপন করা হয়েছে পার্কটি। প্রায় ৬০ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত কোরআনিক পার্ক সাজানো হয়েছে মূলত পারিবারিক বিনোদনের লক্ষ্যে ।
আল-কোরআন পার্ক কয়েকটি অংশে বিভক্ত। পার্কটিতে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন প্রধান প্রবেশপথ, একটি ইসলামি বাগান, শিশুদের খেলার জায়গা ও উপকরণ, উমরাহ কর্নার, কোরআনের মহিমা প্রদর্শনের স্থান, একটি গ্লাস হাউস,একটি মরূদ্যান, একটি পাম বাগান সহ আরো অনেক আকর্ষণ।

কোরআনিক পার্কের প্রধান দুটি অংশের একটি হলো গ্লাস হাউস। এই গ্লাস হাউসের ভেতরে রয়েছে কোরআন ও সুন্নায় উল্লেখিত সব গাছপালা । । বিশেষ গুণসম্পন্ন এসব গাছের মধ্যে অন্যতম জলপাই গাছ, ডুমুর গাছ, কালো মেহেদী, উদ, অ্যালোভেরা। এ ছাড়া কোরআনে কীভাবে এই গাছগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে, রয়েছে তারও বর্ণনা। গ্লাস হাউসের ভেতর একটি অবজারভেশন ডেকও রয়েছে। যার ওপর দাঁড়িয়ে একসঙ্গে দেখা যায় পুরো চিত্রটি ।
গ্লাস হাউসের সবুজ গাছপালা ছাড়াও সমগ্র পার্কজুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা প্রজাতির ফুলের গাছ এবং লতাপাতা ও গাছপালা। এ ছাড়া পার্কে রয়েছে বেশ কয়েকটি ফলের বাগানও। পার্কের ভেতর সর্বমোট বাগানের সংখ্যা ১২টি।
গ্লাস হাউসজুড়ে এবং পার্কের বিভিন্ন সোলার প্যানেল ট্রিগুলোর ওপর চোখে পড়বে আরবি ক্যালিগ্রাফি।পার্কে একটি লেকও আছে যেখানে চোখে পড়বে নজরকাড়া ঝর্না । ছবি তোলার জন্যও আছে কিছু আদর্শ জায়গা । পার্কে আছে একটি খেলার মাঠ, যেখানে শিশুরা নিজের ইচ্ছামতো খেলাধুলা করার বিভিন্ন উপকরণ বেছে নিতে পারবে। পার্কে একটি শিক্ষামূলক কর্নারও আছে, যেখানে শিশুদেরকে হজ ও উমরাহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।পার্কের সীমানাজুড়ে আছে জগিং এবং সাইক্লিং করার জন্য আলাদা পথ।
কেভ অব মিরাকল্স।এই গুহাগুলো মনুষ্য নির্মিত। বিভিন্ন নবী-রাসুলের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং কোরআনে বর্ণিত কিছু বিস্ময় নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এই গুহাগুলো। এসব বিস্ময়ের মধ্যে রয়েছে- ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ঘূর্ণায়মান পাখি। নবী মুসা (আ.)-এর জন্য সমুদ্র দুই ভাগ করে মাঝখান দিয়ে কুদরতি রাস্তা বানিয়ে দিয়েছিলেন আল্লাহ। এই কুদরতি রাস্তারও নিদর্শন রয়েছে পার্কে। কাদামাটি থেকে ঈসা (আ.)-এর জীবন্ত পাখি নির্মাণের নিদর্শনও রয়েছে কেভ অব মিরাকল্স-এ।
গুহার ভেতর হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। কারণ, পুরো গুহাজুড়ে একটিই পথ। আর এই পথের পাশেই চোখে পড়বে একের পর এক বিস্ময় ।
৭৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো এই পার্কের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। তিনটি পর্যায়ে কাজ সমাপ্ত করা হয়। পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় ও জাতিগত ভেদাভেদ নেই। যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে এই পার্কে । পার্কটির সৌন্দর্যবর্ধণের কাজ এখনো চলামান।ধারণা করা হচ্ছে, দুবাইয়ের অন্যান্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার মতোই পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হবে আল-কোরআন পার্ক ।