৩০,০০০ কর্মী ছাটাই করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ- কারন কি এবং এর প্রভাব কি হতে পারে? | Beximco Group News
বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের শিল্প খাতের অন্যতম প্রধান একটি নাম। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, এবং আরও অনেক খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে। একাধিক শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই যাত্রায় বেক্সিমকো লাখ লাখ মানুষের জীবিকা সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছু কারনে বেক্সিমকোর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। সম্প্রতি বেক্সিমকো তাদের গাজীপুরের ১৬টি পোশাক কারখানা থেকে ৩০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্ডারের অভাব, আর ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা না পাওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। এর ফলে হাজারো পরিবার এখন জীবিকা হারিয়েছে এবং জীবন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে।
এখন গাজীপুর শিল্প পার্কে ৭৫ শতাংশ কর্মী তাদের কাজ হারিয়েছেন। টেক্সটাইল আর পিপিই বিভাগে কেবল ১০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। আর যারা কাজ হারিয়েছেন, তাদের ভবিষ্যৎ এখন এক কঠিন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে।
বেক্সিমকোর অর্থ ও কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী বলেন, 'কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খুলতে না পারায় উৎপাদন চালানো যাচ্ছে না।'
কারখানাগুলোর মধ্যে আছে—শাইনপুকুর গার্মেন্টস, আরবান ফ্যাশনস, ইয়েলো অ্যাপারেলস, প্রিফিক্স ফ্যাশনস, আরআর ওয়াশিং, বেক্সিমকো ফ্যাশনস, বেক্সিমকো গার্মেন্টস, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস, এসেস ফ্যাশনস, এসকর্প অ্যাপারেলস, ক্রিসেন্ট ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন ও ক্রিসেন্ট এক্সেসরিজ লিমিটেড।
তবে এমনটা হঠাৎ করে হয়নি। এবছর আগস্ট মাসে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই পোশাক শিল্প একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডার কমে আসে, ব্যাংকিং সহায়তা কঠিন হয়ে ওঠে, আর এর প্রভাব সরাসরি পড়ে শ্রমিকদের জীবনে এবং পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে।
বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ বর্তমানে ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। দেশের ১৬টি ব্যাংক ও সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এই ঋণ রয়েছে। গত চার মাসে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে, যার বড় অংশই শ্রমিকদের বেতন দিতে খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রতি মাসে বেতন দিতে ৬০ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়, যা তাদের জন্য আর সহজ নয়। ফলে বাধ্য হয়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সালমান এফ রহমান ও তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের সঙ্গে জড়িত একের পর এক আর্থিক অনিয়ম প্রকাশ্যে আসছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত নভেম্বর পর্যন্ত বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর অর্ধেকের বেশি খেলাপি হয়ে পড়েছে।
ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। তাদের অধিকাংশই বয়স্ক কিংবা অন্য কোনো কাজ শেখার সুযোগ পাননি। এ অবস্থায় তাদের সামনে নতুন কাজ খোঁজা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।
বেক্সিমকোর এই সংকট শুধু তাদের নিজেদের নয়। এটি পুরো পোশাক শিল্পে প্রভাব ফেলতে পারে। যদি ক্রেতারা আস্থা হারান, তাহলে দেশের রপ্তানি খাতেও বড় ধাক্কা আসবে। আমাদের শিল্পের ভবিষ্যৎ এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।
এই সংকট থেকে বের হতে হলে সরকার, ব্যাংক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং শিল্পকে পুনর্গঠন করার মতো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এখন অত্যন্ত জরুরি।
Keyword:
বেক্সিমকো কেন ৪০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে?,beximco group news,future of beximco group,বেক্সিমকো কেন চরম আর্থিক সংকটে?,beximco layoffs bangladesh,গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম বেতনের গ্রেজেট প্রকাশ করেছে ২০২৪,beximco debt crisis and banks,beximco financial crisis explained,impact of beximco layoffs on workers,ডিসেম্বর থেকে বর্ধিত বেতন-ভাতা পাবেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা,tbs news,news live,গার্মেন্টস শ্রমিকদের গেজেট ২০২৪ পিডিএফ লিংক,bangla news,breaking news
Информация по комментариям в разработке