Скачать или смотреть Class 9 vugol o poribesh. নবম শ্রেণীর ভূগোল ও পরিবেশ।পঞ্চম সপ্তাহ

প্রশ্ন:(২)স্থূল জন্মহার নির্ণয়ের পদ্ধতি লিখা জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

(২ )নং প্রশ্নের উত্তর
স্থূল জন্মহার নির্ণয়ের পদ্ধতি: স্বাভাবিক জন্মহার নির্ণয়ের একটি বহুল প্রচলিত ও গ্রহণযােগ্য পদ্ধতি হচ্ছে স্থূল জন্মহার নির্ণয়। এই পদ্ধতি হাজারে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কোনাে বছরে জন্মিত সন্তানের মােট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মােট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল জন্মহার নির্ণয় করা হয়।

স্থূল জন্মহার =
কোনাে বছরের জন্মিত সন্তানের মােট সংখ্যা ÷ বছরের   মধ্যকালীন মােট জনসংখ্যা  X ১০০০

কোনাে একটি স্থান বা দেশের মােট জনসংখ্যা এবং ঐ বছরে জন্মিত সম্তান ও জনসংখ্যা জানা থাকলে স্থূল জন্মহার বের করা সহজ।


জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হলাে:

ভূমি:
জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে ভূমির উপর। একটি দেশের ভূমি সীমিত হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রয়ােজন দেখা দেয়। বেশি খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভূমি অধিক ব্যবহার হয়।
ভূমির অধিক ব্যবহার, খন্ডিতকরণ প্রভৃতির কারণে দিন দিন উৎপাদনযােগ্য ভুমি কমে যাচ্ছে। বসতি বিস্তারের ফলে উন্মুক্তস্থান, জলাশয় প্রভৃতি কমে যাচ্ছে। মাটিতে যে সকল অণুজীব, ক্ষুদ্রজীব বাস করে তা বাধাগ্রস্ত হয়। দূষিত মাটিতে উদ্ভিদ জন্মাতে পারে না। ফলে ভূমি মরুকরণ হতে থাকে। তাই যে কোনাে দেশের ভূমির ব্যবহার সঠিকভাবে করার জন্য জনসংখ্যার ভারসাম্য থাকা দরকার।

ভূমির ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিক নিম্নে উল্লেখ করা হলাে:

১। অধিক ফসল চাষে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়। মাটির জৈব উপাদান কমে। ২। অধিক ফলনের জন্য অধিক সার, কীটনাশক ব্যবহারর ফলে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে।

৩। বন, পাহার কেটে আবাদি ভূমিকরণের ফলে ভূমি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। ৪। কৃষিভূমি খণ্ডিত হয়ে বসত বাড়ি ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়।

৫। নতুন অবকাঠামাে স্থাপন ও বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভূমির বিভাজন হয়।

৬। যােগাযােগের জন্য ভূমির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। স্কুল, কলেজ, প্রশাসনকেন্দ্র স্থাপনের জন্যও ব্যাপকভাবে ভূমি ব্যবহার করা হয়।

পানি:
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পানির উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। পৃথিবীর শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ পানি। কিন্তু সকল পানির শতকরা ৯৭ ভাগ লবণাক্ত বা লােনা। তাহলে আমাদের খাবার উপযুক্ত পানি মাত্র শতকরা ৩ ভাগ।

পানির ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিক নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

১। কৃষিক্ষেত্রে, সেচকার্যে পানির ব্যবহারের ফলে ভূগর্বস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।

২। পানি বা খাবার পানি হিসেবে ভূনিম্নস্থ পানির অধিক ব্যবহারের ফলে মাটির নিচের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে এবং লােনা পানি তলদেশে প্রবেশ করছে যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

৩। যােগাযােগের ক্ষেত্রে পানির ব্যবহার হয়, এতে তেল, বর্জ্য সংযুক্ত হচ্ছে।

৪। শিল্পক্ষেত্রে পানির ব্যবহার হয়, এতে রং, গ্রিজ, রাসায়নিক দ্রব্য সংযুক্ত হচ্ছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে উপরিউক্ত কাজগুলো বৃদ্ধি করার প্রয়ােজন হয়, যা পানির উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে। জলজ ক্ষুদ্র উদ্ভিদ, প্ল্যাংটন, কচুরিপানা, শেওলা প্রভৃতি জন্মাতে পারছে না। পর্যায়ক্রমে ছােট মাছ ও বড় মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে জলজ সম্পদ দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।

অধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আবাসস্থল নির্মাণ, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি ভূমি হ্রাস প্রভৃতির কারনে বন, পাহাড় প্রভৃতি কাটা হচ্ছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছ।