Скачать или смотреть আমের গুটি আসার পর পরিচর্যা||মার্চ- এপ্রিল মাসে আম গাছের যত্ন||আমের  গুটি ঝরা সমস্যা ও করণীয়

#আমের গুটি আসার পর পরিচর্যা
#আমের ভালো ফলন পেতে যত্ন নিন মুকুলের||মার্চ- এপ্রিল মাসে আম গাছের যত্ন||আমের  গুটি ঝরা সমস্যা ও করণীয়#
মাটিতে রসের অভাব হলেও আমের গুটি ঝরে যায়। আমের বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাটিতে রসের অভাব দেখা দেয়। মাটিতে রসের অভাব হলে আমের বোঁটায় তাড়াতাড়ি নির্মোচন স্তর গঠিত হয়। ফলে আমের গুটি ঝরে যায়।
#agriculture আধুনিক কৃষি বাতায়ন
#agriculture প্রাকৃতিক কারণেই আমের মুকুল ও গুটি ঝরে যায়? সাধারণত আমগাছে প্রতিটি পুষ্পমঞ্জুরিতে এক থেকে ছয় হাজার পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী ফুল থাকে। প্রাথমিকভাবে প্রতি থোকায় এক থেকে ৩০টি আমের গুটি ধরে। ২৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে প্রতি থোকায় মাত্র এক থেকে দু'টি গুটি থাকে। বাকি গুটি প্রাকৃতিক বা অভ্যন্তরীণ কারণে ঝরে যায়। অতিরিক্ত গুটি ঝরে না পড়লে আমের আকার ছোট হয়। তবে মুকুলে আমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ফুল ফোটার ১০ ও ২০ দিন পর দুইবার ১০ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম হারে বোরিক অ্যাসিড স্প্রে করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আবার ফুলফোটা অবস্থায় জিবেরেলিক অ্যাসিড প্রতি লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রাম হারে স্প্রে করলে আমের গুটি ঝরা কমে।

মাটিতে রসের অভাব হলেও আমের মুকুল ও গুটি ঝরে যায়। আমের বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাত কম হলে মাটিতে রসের অভাব দেখা দেয়। ফলে আমের বোঁটায় নির্মোচন স্তর গঠিত হয় এবং আমের গুটি ঝরে যায়। এ সময় গাছের চারপাশে বাঁধ দিয়ে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। আমের গুটি মোটরদানার মতো হলেই প্রথমে একবার গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হবে। প্রথম সেচ দেয়ার পর থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত ১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। সেচের পাশাপাশি হরমোন প্রয়োগ করেও আমের গুটি ঝরা কমানো যায়। যেমন, আমের গুটি মোটরদানার মতো হলে প্রতি লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার অথবা প্রতি ৫ লিটার পানিতে দুই মিলিলিটার হারে পস্নানোফিক্স হরমোন পানিতে মিশিয়ে আমের গুটিতে স্প্রে করলে গুটি ঝরা কমে।
\হপোকার আক্রমণ হলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে গুটি আসার পর প্রাথমিক পর্যায়ে আমের গুটিতে হপার পোকার আক্রমণ হতে পারে। এ পোকার আক্রমণে ২০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত আমের উৎপাদন কমে যেতে পারে। এ পোকার পূর্ণবয়স্ক মথ ও কীড়া গুটির রস শোষণ করে খায়, ফলে আমের গুটি শুকিয়ে ঝরে যায়। আমের মুকুল আসার পরপরই হপার পোকার আক্রমণ হলে মুকুলের ফুল শুকিয়ে যায় এবং কোনো ফল ধরে না। এ পোকা দমনের জন্য আমবাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আগাছামুক্ত ও খোলামেলা রাখতে হবে। মরা ডালপালা ছেঁটে ফেলতে হবে। হপার পোকা থেকে আমের গুটি রক্ষার জন্য দুইবার কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। প্রথমবার আমের মুকুল আসার পর কিন্তু ফুলফোটার পূর্বে এবং দ্বিতীয়বার আমের গুটি মোটরদানার মতো হলে। সাইপরমেথ্রিন অথবা ল্যামডা সাই হ্যালাথ্রিন গ্রম্নপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে এক মিলিলিটার হারে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপালা ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়াও ডেল্টামেথ্রিন গ্রম্নপের কীটনাশক স্প্রে করেও হপার থেকে আমের মুকুলকে রক্ষা করা যায়।

\হরোগের আক্রমণ হলে ফুল ও ফল ঝরে যেতে পারে। আমগাছে মুকুল আসার পর ছত্রাকজনিত পাউডারি মিলডিও ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। পাউডারি মিলডিউ রোগে মুকুলগুলো সাদা পাউডারে ঢেকে যায় ও পরে শুকিয়ে যায় এবং আক্রান্ত আমের গুটি ঝরে পড়ে। এছাড়াও অ্যানথ্রাকনোজ রোগের কারণেও আমের গুটি ঝরে যেতে পারে। মুকুল বা গুটি এসব রোগে আক্রান্ত হলে তা কালো হয়ে ঝরে পড়ে। পাওডারি মিলডিও রোগের জন্য ফুল আসার আগে একবার এবং ফুল ধরার পর একবার সালফার বা ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ০.২ ভাগ হারে স্প্রে করে দিতে হবে। অ্যানথ্রাকনোজ রোগের জন্য কার্বেন্ডাজিম বা হেক্সাকোনাজল গ্রম্নপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করে দিতে হবে।
আম পূর্ণাঙ্গ ফলে রূপ নেয় কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করে। প্রথমে মুকুল, মুকুল থেকে ফুল, ফুল থেকে গুটি এবং গুটি বড় হয়ে আম ফলে রূপ নেয়। প্রতিটি পর্যায়েই আমগাছের বালাই ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। তবে মুকুল আসার আগে এবং পরে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। কেননা, মুকুল ঝরে পড়েই আমের উৎপাদন বহুলাংশে হ্রাস পায়। ফলবাগানী ভাই ও বোনদের মনে রাখতে হবে যে, গাছে মুকুল ফোটা অবস্থায় কোনোভাবেই স্প্রে করা ঠিক নয়। এ সময় প্রচুর পরিমাণ উপকারী পোকা আম বাগানে আসে এবং পরাগায়ণে সহায়তা করে। মনে রাখতে হবে, যে কোনো বালাইনাশকই ক্ষতিকর বিষ। এগুলো অবশ্যয় অনুমোদিত মাত্রায় যথাযথ নিয়মে প্রয়োগ করতে হবে।