Скачать или смотреть বন্ধন লোন নিয়ে মেয়েদেরকে কি বললেন হুজুর জানলে অবাক হবেন মাওলানা মুক্তার হোসেন নদীয়া

ইসলামী ব্যাংকগুলো সাধারণত সরাসরি 'লোন' বা ঋণের পরিবর্তে শরীয়াহ-সম্মত আর্থিক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে, যেগুলোকে তারা সুদ (রিবা) মুক্ত বলে দাবি করে। তবে কিছু আলেম এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এই পদ্ধতিগুলো নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক থেকে অর্থ নেওয়ার ক্ষেত্রে 'হারাম' (নিষিদ্ধ) কেন হতে পারে—এই প্রশ্নের মূল কারণগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. প্রচলিত 'সুদ' (রিবা) এর সাথে সাদৃশ্য
ইসলামী শরিয়তে সুদ বা রিবা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। প্রচলিত (কনভেনশনাল) ব্যাংকগুলো সরাসরি ঋণের উপর সুদ নেয়, যা হারাম। ইসলামী ব্যাংকগুলো ঋণের পরিবর্তে কিছু শরীয়াহ-সম্মত চুক্তি যেমন: মুরাবাহা (Murabaha), ইজারা (Ijarah), মুশারাকা (Musharakah) ইত্যাদি ব্যবহার করে।
মুরাবাহা (ক্রয়-বিক্রয়): এই পদ্ধতিতে ব্যাংক গ্রাহকের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যটি (যেমন: গাড়ি, যন্ত্রপাতি বা বাড়ি) কিনে নেয় এবং তারপর লাভ (Profit/Mark-up) যোগ করে কিস্তিতে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে।
বিতর্ক: অনেকে মনে করেন, এই পদ্ধতি সুদকে আড়াল করার একটি কৌশল মাত্র। কারণ, পণ্যটির ক্রয়মূল্য, লাভের হার এবং মোট কিস্তির পরিমাণ শুরুতে নির্দিষ্ট করা হয়, যা শেষ পর্যন্ত প্রচলিত ব্যাংকের ঋণের সুদের হারের মতোই কাজ করে। যদি কিস্তি পরিশোধে দেরি হয়, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই জরিমানা আরোপ করা হয়, যা সুদের মতো মনে হতে পারে।
২. চুক্তির শর্তাবলীর কঠোরতা
ইসলামী ব্যাংকিং-এর ভিত্তি হলো লাভ-লোকসানের ভাগাভাগি (Risk-Sharing)। কিন্তু মুরাবাহার মতো পদ্ধতিতে (যা বাংলাদেশে খুবই প্রচলিত) ব্যাংক তার পুঁজি ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা রাখে এবং একটি নির্দিষ্ট লাভ নিশ্চিত করে।
মুরাবাহাতে ব্যাংক মুনাফা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকের ব্যবসায় লোকসান হলেও ব্যাংককে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়।
অনেকের মতে, এটি ইসলামে অনুমোদিত প্রকৃত অংশীদারিত্বমূলক ব্যবসা (মুশারাকা/মুদারাবা)-এর নীতির পরিপন্থী।
৩. শরীয়াহ পরিপালনের প্রশ্ন
যদিও প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি থাকে, তবুও কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন যে, বাস্তবে ব্যাংকগুলো তাদের কার্যক্রমের সব ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতিগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করে কি না।
যেমন: মুরাবাহার ক্ষেত্রে, ব্যাংককে প্রকৃতপক্ষে পণ্যটির মালিকানা গ্রহণ করতে হয় এবং তার কাছে পণ্যটির দায়-দায়িত্ব নিতে হয়। এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনুসরণ না করে কেবল কাগজে-কলমে চুক্তি সম্পন্ন করা হলে তা শরীয়াহ সম্মত হয় না।
সারসংক্ষেপ:
ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সুদ (রিবা) এড়িয়ে শরীয়াহ-সম্মতভাবে গ্রাহকদের অর্থায়ন করা। তবে, 'লোন নেওয়া হারাম কেন' এই প্রশ্নটি মূলত ইসলামী ব্যাংকগুলোর ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলোর (বিশেষ করে মুরাবাহা) বাস্তবিক প্রয়োগ এবং সেগুলোর সাথে প্রচলিত সুদের কাঠামোর দৃশ্যমান সাদৃশ্য নিয়ে আলেম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে বিতর্ক রয়েছে, তার ফল।
আপনি কি এই বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি (যেমন: মুরাবাহা বা ইজারা) সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান?
ইসলামে সুদ (রিবা) খাওয়া সম্পূর্ণভাবে হারাম (নিষিদ্ধ)।
পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে সুদকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কোরআনে নির্দেশ: আল্লাহ তাআলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। যারা সুদ খায়, তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে "যুদ্ধের ঘোষণা" পর্যন্ত বলা হয়েছে (সূরা বাকারা: ২৭৫, ২৭৮-২৭৯)।
সুদের ভয়াবহতা: সুদকে কবিরা (মহাপাপ) গুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। হাদিসে সুদখোর, সুদদাতা, এর লেখক এবং সাক্ষীদের ওপর আল্লাহর অভিশাপের কথা বলা হয়েছে এবং এই অপরাধের ক্ষেত্রে সকলকে সমান অপরাধী বলা হয়েছে।
শাস্তি ও পরিণতি: সুদখোরদের জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। এক হাদিসে বলা হয়েছে, সুদের গুনাহ নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক।
মোটকথা, ইসলামে কোনো প্রকারের সুদ গ্রহণ, প্রদান, বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
আপনার যদি ইসলামে সুদের বিষয়ে আরও কোনো নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকে, তাহলে জিজ্ঞেস করতে পারেন।