মহাস্থানগড়ের প্রাচীন ইতিহাস || মহাস্থানগড় বগুড়া || History of Pundranagar || Mohasthangarh

Описание к видео মহাস্থানগড়ের প্রাচীন ইতিহাস || মহাস্থানগড় বগুড়া || History of Pundranagar || Mohasthangarh

#Pundranagarh_bogra
#মমহাস্থানগড়_বগুড়া
#Pundranagar




মহাস্থানগড়: বাংলার প্রাচীনতম নগর

বাংলাদেশের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান মহাস্থানগড়। প্রাচীন এই পুরাকীর্তিটি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এটি প্রাচীন বাংলার পুণ্ড্রবর্ধনের অংশ ছিল।


পুণ্ড্রবর্ধন ছিল প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ। এই পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী ছিল পুণ্ড্রনগর, যা পরবর্তী সময়ে মহাস্থানগড় হিসেবে পরিচিত হয়। এটি মৌর্য সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল।

ইতিহাস ও পরিচিতি
'মহাস্থান' মানে পবিত্র স্থান, এবং 'গড়' মানে দুর্গ। আজ থেকে প্রায় ২,৫০০ বছর আগে গড়ে ওঠা এই স্থানটি বৌদ্ধ শিক্ষার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। চীন ও তিব্বত থেকে অনেক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এখানে লেখাপড়ার জন্য আসতেন। এরপর তারা দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তেন এ শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে। স্থানটি সম্পর্কে চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ তার ভ্রমণকাহিনীতে লিখে গেছেন।
এটি ছিল মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন রাজাদের সময়ে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এছাড়া মুসলিম শাসনামলেও এর গুরুত্ব ছিল। কিন্তু এখন সেসবের ধ্বংসাবশেষ অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র। তবু সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে মহাস্থানগড়। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত। ২০১৬ সালে একে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এখানে শহর গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ হলো, এটি বাংলাদেশের উঁচু অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬ মিটার উঁচু এ অঞ্চল প্রাকৃতিকভাবে বন্যামুক্ত।

মহাস্থানের চারদিক বেষ্টন করে রেখেছে প্রাচীর। প্রাচীর বেষ্টিত এ নগরীর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত দুর্গটি উপর থেকে দেখতে আয়তাকার। এটি উত্তর-দক্ষিণে ১.৫২৩ কিলোমিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১.৩৭১ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। আশেপাশের এলাকা থেকে দুর্গ প্রাচীরটি প্রায় ১১ থেকে ১৩ মিটার উঁচু।


জনপ্রিয় কাহিনি
সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন গৌড়ের রাজা থাকার সময়ে এই গড় অরক্ষিত ছিল। সেসময় মহাস্থানগড়ের রাজা ছিলেন নল। কিন্তু ভাই নীলের সাথে তার বিরোধ লেগেই থাকত। সেসময় এক অভিশপ্ত ব্রাহ্মণ এ এলাকায় আসেন। তিনি তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে ভারতের দাক্ষিণাত্যের শ্রীক্ষেত্র থেকে এখানে আসেন। তিনি পরশু বা কুঠার দিয়ে নিজের মাকে হত্যার দায়ে অভিশপ্ত ছিলেন। তিনি এই দুই ভাইয়ের বিরোধ মেটানোর নাম করে কৌশলে নিজেই রাজা হয়ে যান। ইতিহাসে তিনি পরশুরাম হিসেবে পরিচিত হলেও তার আসল নাম ছিল রাম।

কিন্তু রাজা হওয়ার পর তিনি অত্যাচারী শাসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার অত্যাচারে যখন এলাকার জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে, তখন এখানে একজন আধ্যাত্মিক শক্তিধারী দরবেশের আগমন ঘটে। তার নাম ছিল হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র.)।


কিংবদন্তি অনুযায়ী, তিনি মাছ আকৃতির নৌকা করে (অন্য তথ্য অনুযায়ী, মাছের পিঠে করে) সেসময়ের বিশাল করতোয়া নদী পার হয়ে মহাস্থানগড়ে আসেন। এজন্য তার আরেক নাম মাহিসাওয়ার, যার অর্থ 'মাছের পিঠে আরোহণকারী'। তিনি বর্তমান আফগানিস্তানের বলখী নগর থেকে এসেছিলেন। তিনি সাথে করে অনেক অনুসারীও নিয়ে আসেন এ অঞ্চলে।

মহাস্থানগড়ে এসে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করলে স্থানীয় রাজা পরশুরামের সাথে তার বিরোধ হয়। একসময় (আনুমানিক ১২০৫-১২২০ খ্রিস্টাব্দ) তাদের মাঝে যুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত ও নিহত হন।

কথিত আছে, জিয়ত কুণ্ড নামে একটি কূপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত। তাই হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র.) একটি ঈগলের মাধ্যমে এই কূপে একটি মাংসের টুকরো ফেলেন। আর তাতেই কূপের পানি তার আশ্চর্য গুণ হারিয়ে ফেলে। এর ফলেই পরশুরাম যুদ্ধে পরাজিত হন।


মহাস্থানগড়ের দুর্গ প্রাচীরের দক্ষিণ-পূর্বে অথবা মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ডের কিছুটা পশ্চিমে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র.)-এর মাজার শরীফ রয়েছে। মাজারের সামনে বিভিন্ন দোকানে কটকটি নামে একপ্রকার মিষ্টিজাতীয় খাবার পাওয়া যায়। এটি এখানকার প্রসিদ্ধ খাবার।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке