Скачать или смотреть Holika Dahan: দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়ানো হয় কেন? জানুন ইতিহাস | NEW2NEWZ

Holika Dahan: দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়ানো হয় কেন? জানুন ইতিহাস | NEW2NEWZ

#banglanews #bengalinews #new2newz #holikadahan #holikadahankikahani #holikadahanstory

দোল হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান এবং প্রাচীন উৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দেশ জুড়ে পালিত হল দোল। এই দোলের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে আরেকটি প্রথার। দোলের আগের দিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকা দহন বা ন্যাড়াপোড়া নামে পরিচিত। জানেন কি এই প্রথার সূত্রপাত কবে এবং কিভাবে হয়েছিল? এই প্রথার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে খুব সুন্দর একটি ঘটনা।

ভাগবত পুরাণ এর সপ্তম অধ্যায় অনুসারে, অসুর রাজা হিরণ্যকশিপু ব্রহ্মার কাছে বর লাভ করে অহংকারী ও উদ্ধত হয়ে ওঠে। ব্রহ্মার বর দেন, হিরণ্যকশিপুকে কোনও মানুষও হত্যা করতে পারবে না, কোন প্রাণীও হত্যা করতে পারবে না; তাকে ঘরেও হত্যা করা যাবে না, আবার বাইরেও হত্যা করা যাবে না; তাকে দিনেও হত্যা করা যাবে না আবার রাতেও হত্যা করা যাবে না; তাকে অস্ত্রের দ্বারাও হত্যা করা যাবে না আবার সস্ত্রের দ্বারাও হত্যা করা যাবে না; এমনকি স্থল, জল বা বায়ু কোথাও হত্যা করা যাবে না তাকে। এরপর হিরণ্যকশিপু সিদ্ধান্ত নেয় যে, কেবল তাকেই দেবতা হিসেবে পূজা করা হবে। কেউ তার আদেশ পালন না করলে তাকে হত্যা করা হবে। প্রজারা সেটা মানলেও হিরণ্যকশিপুর নিজের পুত্র প্রহ্লাদ তার সাথে সম্মত হয়নি।

প্রহ্লাদ একজন বিষ্ণুভক্ত ছিল, তার পিতাকে দেবতা হিসেবে পূজা করতে তাই সে অস্বীকার করে। এতে হিরণ্যকশিপু খুব রাগান্বিত হয় এবং প্রহ্লাদকে হত্যা করার বিভিন্ন চেষ্টা করে। কিন্তু প্রত্যেকবার বিফল হওয়ায় হিরণ্যকশিপু তার বোন হোলিকার কাছে সাহায্য চায়। হোলিকার একটি বিশেষ পোশাক ছিল যা তাকে আগুনে পুড়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করত। তাই প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে হোলিকা একটি চিতাকাঠে বসে। আর হিরণ্যকশিপু সেই চিতায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়। কিন্তু প্রহ্লাদ সেই আগুনে বসে নিরন্তর বিষ্ণুনাম জপ করতে থাকে। এর ফলে হোলিকার শরীর থেকে সেই বস্ত্র খুলে গিয়ে প্রহ্লাদের শরীরকে আবৃত করে। এতে হোলিকা আগুনে পুড়ে যায়, আর প্রহ্লাদ বেঁচে যায়।

এই ঘটনায় হিরণ্যকশিপুর ক্রোধের সমস্ত বাঁধ ভেঙ্গে যায়। পরের দিন রাজসভায় হিরণ্যকশিপু পুত্র প্রহ্লাদকে শেষ সুযোগ দিয়ে জানায়, প্রহ্লাদ যদি তাকে ভগবান হিসেবে মেনে নেয়, তাহলে জীবন দান দেবে। কিন্তু যে প্রহ্লাদের মন বিষ্ণুভক্তির রঙে রাঙানো, সে কিভাবে একজন অত্যাচারী অসুরকে ভগবান মনে করবে? এরপর হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে হত্যা করতে উদ্যত হলে প্রহ্লাদ প্রাসাদের একটি থামকে জড়িয়ে ধরে বিষ্ণুর নাম জপতে থাকে। সেইসময় বিষ্ণু নৃসিংহ অবতার অর্থাৎ অর্ধমানব-অর্ধসিংহ রূপে আবির্ভূত হন। সময়টা ছিল গোধূলি বেলা। অর্থাৎ দিন ও রাতের মাঝামাঝি সময়। হিরণ্যকশিপুর সাথে গদা যুদ্ধ করতে করতে বিষ্ণু তাকে ঘরের চৌকাঠে নিয়ে যান, অর্থাৎ না বাইরে না ঘরে। এরপর তাকে নিজের কোলে অর্থাৎ না বায়ুতে, না স্থলে স্থাপন করে নিজের নখ দিয়ে তাকে হত্যা করেন। এভাবে হিরণ্যকশিপুর লাভ করা বর তাকে বাঁচাতে পারেনি। ফলে প্রহ্লাদ ও মানব জাতি বাধ্যবাধকতা ও ভয় থেকে মুক্তি পায়। নৃসিংহের দ্বারা হিরণ্যকশিপু বধের এই কাহিনী অশুভ শক্তির উপর শুভ শক্তির জয়কে নির্দেশ করে।

আর হোলিকার এই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা থেকেই হোলিকা দহন বা ন্যাড়া পোড়ানোর রীতি চলে আসছে। এটি চাঁচর উৎসবের সঙ্গে যুক্ত। স্কন্দপুরাণ গ্রন্থের ফাল্গ‌ুনমাহাত্ম্য গ্রন্থাংশেও হোলিকা ও প্রহ্লাদের উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে।