Скачать или смотреть এক অভিযুক্ত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সত্য বচন!

”আমি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়ে কোন প্রশিক্ষণ নেইনি আর কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে একত্রিত হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করিনি, তবে আমি মুক্তিযোদ্ধা,” এমনটি জানালেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের তালুক হারাটি (সেনপাড়া) গ্রামের সৈয়দ আলী (৭0) নামের এক অভিযুক্ত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আরো বলেন, “এক লাথ ত্রিশ হাজার টাকা খরচ করে আমি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছি আর গেল ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পেয়ে আসছি। তবে আমার নামে ভাতার টাকার প্রায় ৬০ শতাংশ চলে যায় অন্যর পকেটে আর আমাকে ব্যাঙ্কেও যেতে দেয়া হয়না।” সৈয়দ আলী বলেন, “লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আবু বক্কর, সাবেক সদস্য সচিব নুরুজ্জামান আহমেদ, হারাটির মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার ও আজগর আলীর সহযোগিতায় আমি ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ক হই।” এসব কথা তিনি শুধু সাংবাদিকদের বলেনি, তিনি গত ১৬ ফেব্রুয়ারী লালমনিরহাট সদর উপজেলা মিলনায়তনে রুমে মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই কমিটির কাছে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে মাইকে এসব কথা বলেন। আর অভিযুক্ত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার মুখে সত্য বচন শুনে মুক্তিযোদ্ধারা করিতালি দিয়ে তাকে ধন্যবাদও জানায়।
”আমার ভাতার টাকার ব্যাংক চেক পাতায় আগাম স্বাক্ষর নিয়ে রেথেছেন কমান্ডার আবু বক্কর ও তার লোকজন। ভাতার সময় আসলে আমাকে ডেকে কিছু টাকা দেন আর আমি পুরো টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে হুমকী দেয় যে তারা অভিযোগ করে আমার গেজেট বাতিল করে দিবেন,” এমনটি বল্লেন সৈয়দ আলী।
অভিযুক্ত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী ওই গ্রামের মৃত বাচ্চু মামুদের ছেলে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি এলাকায় ছিলেন।যুদ্ধের পক্ষে তিনি কিছু কিছু কাজ করলেও স্থানীয় রাজাতারদের সাথে ছিলা উঠাবসা। এলাকার অনেকেই বলছেন যুদ্ধকালীন সময়ে সৈয়দ আলী এলাকায় মিশ্র ভুমকিা পালন করেছিলেন। মুড়ির ব্যবসা করে সংসার চালাতেন তিনি। পরে মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ক হলে তিনি স্থানীয়ভাবে কবিরাজী শুরু করেন আর এখন পযর্ন্তও তা করছেন। বর্তমানে নাত শতাংশ বসতভিটা জমি ছাড়া আর কোন সম্পদ নেই। এক বিঘা আবাদি জমি ছিল তাও মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ত হতে ব্যয় করেছেন।
তার স্ত্রী মমেনা বেগম জানালেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শে মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ত হওয়ার সময় আবাদি জমিটুকু বিক্রি করতে নিষেধ করেছিলেন কিন্তু শুনেনি। “এখন আমরা অসহায়। সরকারী টাকা ফেরত দেয়ার ভয়ে আমার স্বামী এখন দিনের বেলা বাড়িতেই থাকছেন না,” জানান মমেনা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’র কমান্ডার আবু বক্করের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্তকা অস্বীকার করে জানান, সৈয়দ আলী বিএনপি সরকারের আমলে গেজেটভুক্ত হন আর তখন তিনি কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন না। ওই সময় সংসদ’র সদস্য সচিব নুরুজ্জমান আহমেদ দায়িত্বে ছিলেন আর তিনিই এ ঘটনার পুরোটা অবগত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তবে সংসদ’র সাবেক সদস্য সচিব নুরুজ্জামান আহমদ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমান সংসদ কমান্ডার আবু বক্করের নখদর্পনে এমনটি হয়েছি আর তিনি বিষয়টি জানলেও এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই কমিটির আহ্বায়ক, সদর উপজেলা নির্বাহী াফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তারা বিস্তারিত লিখে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করবেন আর মন্ত্রণালই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেষ দিবেন।