Скачать или смотреть কোরান মতে জন্মান্তরবাদ রহস্য উন্মোচন! সূরা রাদ-এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ।

সূরা রা’দ-এর ব্যাখ্যা কোরান দর্শন
সদর উদ্দিন আহমদ চিশতী। 💞🙏💞

১। কেতাব অর্থ একটা জীবসত্তা। আল-কেতাব অর্থ প্রতিষ্ঠিত মানবসত্তা তথা অতিমানব বা মহাপুরুষ। সর্বকালীন মোহাম্মাদুর রসুলের সর্বকালীন 'আল' অর্থাৎ পুত্রগণ। ইঁহারাই হইলেন অতিমানবের নিদর্শন বা পরিচয়। ইঁহারা রক্তের নয় মোহাম্মদের আলোর বংশধর। মোহাম্মদ অর্থ প্রশংসিত। সর্বকালীন মোহাম্মদ কোন এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নহেন । যেকোন মানুষ যিনি এই নূরের পরিপূর্ণ অধিকারী হন তিনিই ‘মোহাম্মদ’ এবং এইরূপ মোহাম্মদগণ হইলেন অতিমানব। মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ নিজেকে লক্ষ করিয়া নিজেই বলিতেছেন ঃ এবং যে প্রতিষ্ঠিত সত্য তোমার রব হইতে তোমার দিকে নাজেল হইয়াছে ইহা তাহাই কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তোমার এই পরিচয়ের সহিত ইমানের কাজ করে না।
২। বিষয়বস্তু অর্থাৎ বিষয়মোহ মনের খুঁটি বা স্তম্ভ। জীবগণের মন বিষয় নির্ভর, শিরিক নির্ভর। যে মন
বিষয়কে স্তম্ভরূপে গ্রহণ করে না সেই মন সমুন্নত হইয়া আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে। বিষয় ভিত্তিক মন ভঙ্গুর, দুর্বল । বিষয়ের খুঁটিহীনতা দ্বারা আল্লাহতা'লা মানুষের মনকে সমুন্নত করিয়া তোলেন। ইহা অবশ্য আমরা দেখিয়া থাকি যে, সাধু-সন্ন্যাসীগণ বিষয়মোহ শূন্য । সুতরাং তাঁহাদের মধ্যেই আল্লাহর বিকাশ ঘটে এবং তাঁহারাই আল্লাহর আর্শে পরিণত হইয়া থাকেন। আল্লাহর আর্শে পরিণত হইবার পর তাঁহারা চন্দ্র ও সূর্যকে অর্থাৎ কামালিয়াতের উচ্চতম দুইটি পর্যায়কে আপন এখতিয়ারভুক্ত করিয়া তোলেন। মুক্তপুরুষ ব্যতীত সকলেই আজলের অধীন, তাই
তাহাদের অনন্ত ভ্রমণের শেষ নাই। 'মালেকে ইয়াওমুদ্দিন' অর্থাৎ ধর্মের কালের রাজা। এইরূপ না হওয়া পর্যন্ত জন্ম-মৃত্যুর জীবনচক্রে আবদ্ধ হইয়া অনন্ত ভ্রমণের অধীন থাকিতে হয়। ধর্মের কাল তথা আজল উচ্ছেদ করিতে না পারিলে মুক্তি নাই। তিনি কর্মের নিয়ন্ত্রক, কর্মের রাজা; কর্ম তাঁহার অধীন, তিনি কর্মের তথা ধর্মের অধীন নহেন। তাঁহার এইসকল গুণের পরিচয় তিনি আমাদিগকে দান করেন যেন আমরা আমাদের রবের অবিরাম মোলাকাতের সাহায্যে আত্মপ্রত্যয় লাভ করিতে পারি এবং মুক্তিপথে নিরাশ না হই। এখানে মোলাকাত অর্থ নিছক সাক্ষাৎকার নয় বরং রবের ভাবের সঙ্গে, তাঁহার গুণাবলীর সঙ্গে অনুশীলনের সাহায্যে সম্মিলিত হওয়া।
৩। আল্লাহ নিজেই দেহকে আকারে এবং সংখ্যায় বর্ধিত করেন এবং তাহার মধ্যে স্থাপন করেন মাথা এবং নহর। মাথাই দেহের পরিচালক এবং ইহার মধ্যে রহিয়াছে নহর বা প্রবাহ। এই প্রবাহ, জ্ঞানের প্রবাহ এবং সাধারণের জন্য চিন্তার প্রবাহ, যাহা ভাষায় প্রবাহিত হয়। প্রত্যেক ফলকের অর্থাৎ মাথাওয়ালা জীবের উৎপাদনকে তিনি জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করিয়াছেন । মানুষ সালাত না করিলে ধর্মরাশির অন্ধকারে বাস করে এবং এই অন্ধকার ‘দিনকে’ অর্থাৎ ধর্মরাশির মধ্যে নিহিত জ্ঞানের আলোকে ঢাকিয়া ফেলে। নিশ্চয় তাফাক্কুরকারী কাওমের জন্য অর্থাৎ সালাতের পূর্ণতাপ্রাপ্ত কাওমের জন্য ইহাতে অর্থাৎ সালাত প্রক্রিয়ায় রহিয়াছে সত্যের পরিচয়।
৪। মানব দেহের বৃত্তিগুলি এবং ইন্দ্রিয়সমূহ প্রত্যেকটি পরস্পর সংলগ্ন। জান্নাতবাসীর আচার-আচরণের সবকিছু একইরূপে তাহাদের চরিত্রে সন্নিবেশিত হইয়া থাকে। স্বভাবের কোন অংশই অসংলগ্ন থাকে না। তাহাদের অভিব্যক্তির সকল অংশই সুসন্নিবেশিত থাকে, একটি আর একটির সঙ্গে অসংলগ্ন এবং বেমানান থাকে না। তাহাদের সদগুণগুলি পরস্পর ভাঁজে ভাঁজে এই কয়টি ফলের মত সংলগ্ন হইয়া থাকে। অর্থাৎ জীবনের অভিব্যক্তিগুলি সর্বদিক হইতে সংযত এবং সংহত। বৃত্তিসমূহ যদিও এক অসীম জ্ঞানবারি দ্বারা পরিপুষ্টি লাভ করে; তথাপি ভোগ্য ফলগুলি যেমন একটি হইতে অপরটি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে তেমনই একই ব্যক্তির মধ্যে বৃত্তিসমূহের একটি হইতে অপরটি অধিক সৌন্দর্যমণ্ডিত হইয়া থাকে । বুদ্ধি প্রয়োগকারী কাওমের জন্য ইহাতে রহিয়াছে আত্ম-পরিচয়।
৫। ইহা একটি আশ্চর্য বিষয় যে, মানুষ পুনর্জন্মে তথা জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস করিতে চায় না। মৃত্যু দ্বারা দেহ মাটি হইয়া গেলে আবার নূতন একটি সৃষ্টির মধ্যে মানুষ আসিয়া পড়ে, এই কথা মানুষের নিকট অবিশ্বাস্য মনে হয়। এই জাতীয় অবিশ্বাসকারী লোকেরা কাফের। ইহাদের গলায় রহিয়াছে কঠিন ফাঁসি। অর্থাৎ বিষয় মোহের এমন কঠিন ফাঁসি যে, তাহা শিথিল হয় না বরং পুনরায় জীবজগতে জাহান্নামে টানিয়া লইয়া আসে। আবার তাহারা জাহান্নামকে আঁকড়াইয়া ধরিয়া থাকে। আপন অবস্থান ত্যাগ করিতে চায় না।
৬। এবং জাহান্নামবাসীদের স্বভাব হইল : তাহারা সকল বিষয়ে মন্দের সহিত বা মন্দ দ্বারা ত্বরান্বিত করে সালাতের পূর্বেই। বিষয়ের ওপর সালাত প্রয়োগ ব্যতীত সকল বিষয়ই মন্দ। লোকেরা সালাত না করিয়াই বিষয়াশয়ে ত্বরান্বিত হয়, যাহার ফলে সত্যের বিকাশ না হইয়া শেরেকের অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকে, ভাসিয়া উঠে না। ইহা নফসের ওপর বিরাট জুলুম। এইরূপ জুলুমের উপর ক্ষমাশীল রহিমরূপে আল্লাহতা'লা মানুষের মধ্যে বিরাজ করেন যদি মানুষ সালাতী হয়। এবং তাহা না হইলে তিনি তাঁহার বিধান মতে শক্ত প্রতিফল দাতা ।
৭। কাফেরগণ আরও বলে : “প্রত্যেক কাওমের মধ্যেই যেহেতু একজন হাদি থাকেন তবে হে মোহাম্মদ, কেন ইহা শুধু তোমার উপর নাজেল হইল, অন্য কোন কাওমের মধ্যে এইরূপ কথা শুনি না কেন? তাহাদের কাহারো উপরে কেন ইহার একটা নিদর্শনও নাজেল হয় না?”
৮। নারীর ভ্রূণ কি বহন করে এবং ভ্রূণের কখন কি চাহিদা এবং উহাতে কি বৃদ্ধি লাভ করে তাহা তিনি জানেন। প্রতিটা বিষয়ের সঙ্গে যে একটা কর্মবৃত্ত রহিয়াছে যাহার উপর যথাবিহিত আমল প্রয়োগ অবশ্য করণীয় তাহাও তাঁহার নিকট জানা আছে। ইহা দ্বারা বুঝাইতে চাহেন যে, কোন্ পাত্রে আয়াত নাজেল হওয়ার যোগ্য এবং উহাতে তাহা বর্ধিত ও লালিত হইতে থাকিবে তাহা তিনি সম্যক জ্ঞাত আছেন যেমন তিনি নারীগর্ভে অবস্থিত বিষয়ে পরিজ্ঞাত।
৯। তিনি অদৃশ্য বিষয় জানেন এবং প্রতিটি ধর্ম বিষয়ের প্রতিষ্ঠিত বড় সাক্ষ্যদাতা, তাই তিনি উচ্চতাপ্রাপ্ত । অর্থাৎ বিষয়রাশির উপরে স্থিত, ভাসমান। ১০ +১১। জায়গা নেই তাই সম্পূর্ণ দিতে পারি নাই তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। 💞💞🙏💞💞