Скачать или смотреть প্রাচ্যবাদ | পশ্চিমের চোখে ইসলাম ও প্রাচ্য | ড. মুসতফা আস-সিবাঈ এর কালজয়ী বিশ্লেষণ

“প্রাচ্যবাদ” (Orientalism) — এই শব্দটি আধুনিক চিন্তাজগতে একটি গভীর ও বিতর্কিত ধারণা।
এটি কেবল সাহিত্য বা ইতিহাসের কোনো বিষয় নয়; বরং এটি পশ্চিমা সভ্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে “প্রাচ্য” তথা ইসলামি সভ্যতা, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের এক দীর্ঘ পর্যালোচনা ও বিকৃতি।

ড. মুসতফা আস-সিবাঈ তাঁর “প্রাচ্যবাদ” বইতে এই জটিল তত্ত্বকে সহজ, যুক্তিনির্ভর এবং ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন।
বইটি প্রমাণ করে—পশ্চিমের তথাকথিত "বস্তুনিষ্ঠ" গবেষণার আড়ালে কতটা পক্ষপাত, বিকৃতি এবং কৌশলগত উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে।

লেখক পরিচিতি:

ড. মুসতফা আস-সিবাঈ (Mustafa as-Siba’i) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, অধ্যাপক, এবং আলেম।
তিনি সিরিয়ার দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি আইন ও সভ্যতা বিষয়ে অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর লেখনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল—ইসলামি সভ্যতার মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও পশ্চিমা ভ্রান্ত ধারণার প্রতিবাদ।


পশ্চিমা প্রাচ্যবিদরা ইসলামি সমাজে বিভেদ তৈরি, সংস্কৃতির বিকৃতি, ও আত্মবিশ্বাসহীনতা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে লেখালেখি করেছেন।
তারা একদিকে ইসলামকে "অসহিষ্ণু" বলে প্রচার করেছে, অন্যদিকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থকে "সভ্যতা বিস্তার" বলে প্রচ্ছন্ন করেছে।

ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ:

লেখক দেখিয়েছেন—ইসলাম কখনও জ্ঞানকে দমন করেনি; বরং সবসময় মুক্ত চিন্তা ও সত্য অনুসন্ধানের পক্ষে ছিল।
অন্যদিকে পশ্চিমা সভ্যতা “মানবতা”র নামে যেভাবে উপনিবেশ স্থাপন করেছে, তা ইসলামি আদর্শের বিপরীত।

প্রাচ্যবাদ বনাম ইসলামি সভ্যতার পুনর্জাগরণ:

এই অংশে লেখক আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিম যুবকদের প্রতি—নিজেদের ইতিহাস, জ্ঞান ও মূল্যবোধ জানো; পশ্চিমের ধারণাকে অন্ধভাবে অনুসরণ নয়, বরং যাচাই করে গ্রহণ করো।

বইটি সাধারণত তিনটি মূল অংশে বিভক্ত—

1️⃣ প্রাচ্যবাদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
2️⃣ প্রাচ্যবিদদের মনস্তত্ত্ব ও উদ্দেশ্য
3️⃣ ইসলামি দৃষ্টিতে পশ্চিমা গবেষণার সমালোচনা

প্রত্যেক অধ্যায়েই লেখক অসংখ্য বাস্তব উদাহরণ, রেফারেন্স ও যুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন, যা বইটিকে শুধু তাত্ত্বিক নয় বরং প্রমাণভিত্তিক করেছে।

“ইসলামকে জানার আগে যেভাবে পশ্চিম ইসলামকে বিচার করেছে, সেটিই প্রাচ্যবাদের সূচনা।”

এই বইটি এমন এক আয়না, যা মুসলিম পাঠককে নিজের অবস্থান, ইতিহাস ও জ্ঞানের ভিত্তি পুনরায় খুঁজে পেতে সহায়তা করে।
এটি একাধারে আত্মসমালোচনা, জ্ঞানতত্ত্ব, ও মুক্ত চিন্তার আহ্বান।