Скачать или смотреть রাজা গৌড় গোবিন্দের ভয়ঙ্কর গুহা || হারং-হুরং || সিলেট ||

হারং-হুরং, এক প্রাচীন ঐতিহাসিক ভয়ংকর সুরঙ্গ। সিলেটি ভাষায় হারং মানে সাঁকো বা বিকল্প পথ আর হুরং মানে সুরঙ্গ।অর্থাৎ হারং-হুরং মানে হল বিকল্প সুরঙ্গ পথ। এটিকে কেন্দ্র করে নানা লোককাহিনী স্থানীয়দের মাঝে প্রচলিত আছে। স্থানীয়দের মতে যারাই এর মধ্যে প্রবেশ করেছেন তাদের কেউই জীবিত বের হয়ে আসেনি। এটি গৌড় গোবিন্দ গুহা নামেও পরিচি। রাজা গৌড় গোবিন্দ ১৩ শতকের বর্তমান সিলেটের খন্ড রাজ্য গৌড়ের শাসক ছিলেন। সিলেট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে হিলুয়াছড়া চা বাগানে এই ঐতিহাসিক সুরঙ্গ রাজা গৌড় গোবিন্দ তৈরি করেছিলেন বলে জানা যায়।
চা বাগানের মেঠো পথ ধরেই যেতে হয় প্রাচীন এই সুরঙ্গের সন্ধানে। এক দেড় কিলোমিটার পরেই বাগানের বালুময় পথের শুরু। দুপাশে উঁচু টিলায় সুবিন্যস্ত চায়ের বাগান,তার মাঝে সোজা আকাশের দিকে উঠে যাওয়া শেড গাছ মিলে আশ্চর্য এক সবুজের ধারা তৈরি করেছে। তেলাহাটির দক্ষিণে হিলুয়াচড়া চা বাগানের ১৪ নং সেকশনের পাশে অবস্থিত হারং-হুরং। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক,পাহাড় আর জঙ্গল যেন আমন্ত্রণ জানালো হারং হরং এ। হারং হুরং এ তিনটি সুরঙ্গ । সুরঙ্গগুলো বেশ অন্ধকার। একদিকে সবুজ নিস্তব্ধ পাহাড়ি অরণ্য, আরেক দিকে সুরঙ্গ -যেন এক ভয়ঙ্কর মায়াবী পুরী। অন্ধকার আর ভয়াল পরিবেশের কারণে সুরঙ্গের ভেতরে বেশিদূর যাওয়া যায় না। প্রচন্ড স্যাঁতস্যঁতে, দেওয়ালে শ্যাওলা, মোবাইলের আলোয় সুরঙ্গের অন্ধকার ভেদ করা যায় না । সুরঙ্গের ভেতরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।বিষাক্ত সাপ, হিংস্র প্রাণী বা ভৌতিক কিছু থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না । স্থানীয়দের মতে এই সুরঙ্গটির বয়স প্রায় 700 বছর বা তারও বেশি। অনেকে বলেন সিলেট থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে জৈন্তা পর্যন্ত এই সুরঙ্গ গেছে, আবার কেউ কেউ বলেন সিলেট শহরের চৌহাট্টা গৌরগোবিন্দের রাজবাড়ী থেকে সুরঙ্গ শুরু হয়ে প্রায় 15 কিলোমিটার দূরে এই গহীন জঙ্গলে এসে শেষ হয়েছে। স্থানীয়দের মতে যারাই এই রহস্যময় সুরঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করেছেন তাদের কেউই জীবিত বের হয়ে আসেনি। আর যদিওবা বের হয়েছেন তারা কিছুদিনের মধ্যেই অপ্রকৃতস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। জানা যায় ভারত থেকে বেশ কয়েক বছর আগে তিনজন তান্ত্রিক এখানে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকে মাত্র একজন ফিরে এসেছিলেন এবং খুব অল্পদিন বেঁচে ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনিও অস্বাভাবিক ছিলেন। এছাড়াও সিলেটের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এই সুরঙ্গ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, পরবর্তীতে তিনি অস্বাভাবিক স্বপ্ন দেখে সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেন। এই গ্রামের এক বুড়ো যুবক বয়সে এই সুরঙ্গে ঢুকেছিলেন, এরপর কি যেন দেখে ভয়ে বেরিয়ে আসেন, এরপর পাগল হয়ে যান।
আসলে এসব কথা বিশ্বাসযোগ্য না হলেও মনে শিহরণ জাগায়। প্রকৃতি রহস্যময়। প্রকৃতি তার নিজ খেয়ালেই অনেক রহস্য ধারণ করে যা মানুষের পক্ষে উন্মোচন করা সম্ভব হয় না। তাই অমীমাংসিতই থাক এই ভয়ঙ্কর সুন্দর সুরঙ্গের মায়াবী রহস্য, তাতে ক্ষতি কী?

#হারং হুরং
#গৌড় গোবিন্দ গুহা
#রাজা গৌড় গোবিন্দের গুহা
#গৌড় গোবিন্দের সুরঙ্গ
#travel video
#historical place