Скачать или смотреть Bhadur Shah Park বাহাদুর শাহ পার্ক || Victoria park ভিক্টোরিয়া পার্ক || Old Dhaka || Bangladesh ||

ইতিহাসের সাক্ষী বাহাদুর শাহ পার্ক

যায়েদ হোসেন মিশু

সিপাহী বিপ্লবের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে পুরান ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে বাহাদুর শাহ পার্ক। ইংরেজ শাসন-শোষণ,বর্বরতা ও স্বাধীনচেতা সেনাদের আত্মত্যাগের সাক্ষী এই পার্কটিকে ঘিরে ৭টি রাস্তা একত্রিত হয়েছে। চারপাশের শত বছরের পুরনো সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে এর অবস্থান।


জনসন রোড হয়ে ঢাকা নদীবন্দর এর দিকে একটু এগোলেই দেখা মিলবে বাহাদুরশাহ পার্ক এর। পার্কের ঠিক পশ্চিম পাশে রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল,পূর্ব পাশে রয়েছে ঢাকা মুসলিম গভ হাই স্কুল,কবি নজরুল সরকারি কলেজ।।

জানা যায়,আঠারো শতকের শেষের দিকে বর্তমান পার্কের স্থানে ঢাকার আর্মেনীয়দের একটি বিলিয়ার্ড ক্লাব ছিল।যার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ঢাকার নবাব আব্দুল গণি ও নবাব আহসান উল্লাহ। বিলিয়ার্ড খেলার বলকে স্থানীয় ভাবে আণ্টা বলা হতো।সেই থেকে ক্লাব ঘরটি ‘আন্টাঘর’ নামে পরিচিতি পায়।আর আন্টাঘর সংলগ্ন ময়দান পরিচিতি পায় আন্টাঘর ময়দান নামে।


ইতিহাসের পাতায় - #আন্টাঘর - #বাহাদুর_শাহ_পার্ক - #ভিক্টোরিয়া_পার্ক - #পুরান_ঢাকা - বাংলাদেশ


১৮৫৭ সালের ২২ নভেম্বর ইংরেজ মেরিন সেনারা ঢাকার লালবাগ কেল্লায় দেশীয় সেনাদের নিরস্ত্র করার লক্ষ্যে আক্রমণ চালায়। তবে সিপাহীরা বাধা দিলে যুদ্ধ বেঁধে যায়। যুদ্ধে আহত ও পালিয়ে যাওয়া সিপাহীদের ধরে এনে সংক্ষিপ্ত কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

বিচারের পর ১১ জন সিপাহীকে আন্টাঘর ময়দানে এনে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হয়। স্থানীয় লোকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করতে লাশগুলো বহুদিন ধরে এখানকার বিভিন্ন গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

১৮৫৮ সালে রানি ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণের পর ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার এই ময়দানে বিপুলসংখ্যক মানুষের এক সমাবেশে রানী ভিক্টোরিয়ার বিখ্যাত ঘোষণা পাঠ করেন।
সেই থেকে এই স্থানের নামকরণ হয় "ভিক্টোরিয়া পার্ক"।

১৯৫৭ সালে (মতান্তরে ১৯৬১) সিপাহী বিদ্রোহের শতবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাহাদুর শাহ পার্ক। সেই থেকেই আজকের বাহাদুর শাহ পার্ক।


সিপাহী বিদ্রোহ দমনের পর ইংরেজরা তাদের সেনাদের স্মরণে আন্টাঘরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছিল। ১৮৮৪ সালে ঢাকার নবাব খাজা আহসানুল্লাহর জ্যেষ্ঠ পুত্র খাজা হাফিজুল্লাহর অকাল মৃত্যুতে নবাব পরিবারসহ পুরো ঢাকা শহর শোকে কাতর হয়ে পড়ে। তার স্মৃতিরক্ষায় এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।

ঐতিহ্যবাহী পার্কটির পুরানো ঐতিহ্য ঠিক রেখে সংস্কারের মাধ্যেমে নতুন রূপে সাজিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

বাহাদুর শাহ পার্কে চোখে পড়ে একটি স্মৃতিসৌধ। এটি চারটি পিলারের ওপর দাঁড়ানো চারকোনা একটি কাঠামো। এর ওপরে আছে একটি ডোম। অন্যপাশে একটি ওবেলিস্ক। যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও ভারতবর্ষের সম্রাজ্ঞী হিসেবে রানি ভিক্টোরিয়ার সিংহাসনে আরোহনের কথা মনে করিয়ে দেয়।