Скачать или смотреть যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা-ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পদের সন্ধান | দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন | Sheikh Hasina

#shaikhhasina #bangladesh #moneytrail
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমাতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমান সম্পদের সন্ধান মিলেছে যুক্তরাজ্যে। শনিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাজ্যে আবাসন খাতে হাসিনা-ঘনিষ্ঠ ওইসব মন্ত্রী-এমপি ও ব্যবসায়ীদের সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ৪০ কোটি পাউন্ড বা ৬ হাজার কোটি টাকা কিংবা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেন, ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ না করে বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা অর্থ দিয়েই এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হাসিনা সরকারের আমলে দেশ থেকে অন্তত ১৭ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার থেকে আরও বেশি।
ব্রিটিশ দৈনিক অবজারভার ও বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেই অনুসন্ধান নিয়েই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা-ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তির নামে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে।
অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা এই সম্পত্তির অনেকগুলোর মালিকানায় রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এর মধ্যে মাঝারি মানের ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে সুবিশাল অট্টালিকা (ম্যানশন) পর্যন্ত রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও দেশটির বাইরের বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির নামে সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সালমানের পরিবারের সদস্যদের লন্ডনের মেফেয়ার এলাকার গ্রোসভেনর স্কয়ারে সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানা বা মালিকানায় অংশীদারত্ব রয়েছে।
এর মধ্যে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান। সেখানে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ডে কেনা তার একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। ২০২২ সালে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা লন্ডনে শায়ান রহমানের একটি বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন বলে খবর বেরিয়েছিল।
এই পরিবারের আরেক সদস্য আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের গ্রোসভেনর স্কয়ারে এবং এর কাছাকাছি ২ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড মূল্যের আরও চারটি সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তিও অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের ৩০০টির বেশি সম্পদ রয়েছে। এগুলোর মূল্য অন্তত ১৬ কোটি পাউন্ড।
গত সেপ্টেম্বরে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে । সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির রয়েছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনীতিকদের বাইরে বাংলাদেশের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদেরও যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সারে এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যদের দুটি সম্পত্তি রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড দিয়ে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এ সম্পত্তি কেনা হয়েছে। এছাড়া অবজারভার এলাকাটিতে পরিদর্শনে গিয়ে আহমেদ আকবর সোবহানের এক ছেলের মালিকানাধীন একটি অট্টালিকারও সন্ধান পেয়েছে।
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার পরিবারের লন্ডনের কেনসিংটনে ৩ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের পাঁচটি সম্পত্তি রয়েছে ।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন