#গরুর কৃমির ঔষধ# গরুর কৃমি
পশু পালন এবং খামার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরজীবী কৃমি এক নীরব ঘাতক । এটি কেবল একটি সাধারণ রোগ নয়, বরং খামারের অর্থনৈতিক
ভিত্তিকে নীরবে ধ্বংস করে দেওয়া এক দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। কৃমি হলো এক ধরনের অন্তঃপরজীবী যা পোষক প্রাণীর দেহের ভেতরে বাস করে এবং এর পরিপাককৃত পুষ্টি ও রক্ত শোষণ করে বেঁচে থাকে ।
এর ফলে পশুর স্বাস্থ্যহানি ঘটে, উৎপাদন ক্ষমতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পায় এবং খামারিকে বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশে গবাদি পশুর রোগগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশই কৃমিজনিত,
। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে রোগাক্রান্ত গবাদি পশুর প্রায় ৫১ শতাংশই কোনো না কোনো ধরনের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত, যা প্রমাণ করে কৃমি দমনই সুস্থ পশুপালনের অন্যতম প্রধান শর্ত ।
অর্থনৈতিক প্রভাব: খামারির লোকসানের হিসাব
। কৃমিতে আক্রান্ত পশু পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করার পরেও তার পুষ্টি পরজীবী দ্বারা শোষিত হয়ে যায়, ফলে পশুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় না 1। এর ফলে খামারিকে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ করতে হয়, যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেয়, তেমনই পশুর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং চিকিৎসার জন্য আলাদা অর্থ ব্যয় করতে হয় 2।
, কৃমিনাশকের জন্য ১ টাকা ব্যয় করলে পশুর দুধ বা মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে আয় প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে 2। এই তথ্য প্রমাণ করে যে, সঠিক কৃমি ব্যবস্থাপনা খামারের অলাভজনকতার দুষ্টচক্র ভাঙার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। যে চক্রে কৃমির কারণে পশুর স্বাস্থ্য খারাপ হয়, উৎপাদন কমে, খামারির আয় হ্রাস পায় এবং ফলস্বরূপ খামারি পশুর যত্ন ও কৃমিনাশক প্রয়োগে অবহেলা করে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
সংক্রমণের চক্র: কৃমি কিভাবে ছড়ায়?
কৃমি সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে এর জীবনচক্র বা ছড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা অপরিহার্য। অধিকাংশ কৃমি মূলত মল-মুখের মাধ্যমে (fecal-oral route) এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়ায় 1। প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
১. আক্রান্ত পশুরমলের সাথে কৃমির ডিম পরিবেশে নির্গত হয় 1।
২. এই ডিমগুলো চারণভূমির ঘাস, পশুর খাবার বা পানির উৎসকে দূষিত করে 12।
৩. সুস্থ পশু দূষিত ঘাস, খাবার বা পানি গ্রহণ করার সময় সেই ডিম খেয়ে ফেলে এবং সংক্রমিত হয়।
কিছু কৃমির জীবনচক্র সম্পূর্ণ করার জন্য মাধ্যমিক পোষক বা ইন্টারমিডিয়েট হোস্টের প্রয়োজন হয়। যেমন, কলিজা কৃমির জীবনচক্রে শামুক একটি অপরিহার্য অংশ 2। কৃমির ডিম থেকে লার্ভা বের হয়ে শামুকের দেহে প্রবেশ করে এবং সেখানে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিকশিত হওয়ার পর আবার পরিবেশে ফিরে আসে। এই লার্ভা পরবর্তীতে ঘাসের ডগায় লেগে থাকে এবং গরু ওই ঘাস খাওয়ার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়। এ থেকে বোঝা যায়, পশুর স্বাস্থ্যের পাশাপাশি খামারের পরিবেশগত স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্যাঁতস্যাঁতে চারণভূমি, আবদ্ধ জলাশয় এবং অপরিকল্পিত মল ব্যবস্থাপনা কেবল পরিবেশ দূষণ করে না, বরং কৃমির বংশবিস্তারের জন্য একটি উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করে, যা পশুপালের জন্য ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া, কিছু কৃমি গর্ভবতী গাভীর মাধ্যমে গর্ভের বাছুরকে অথবা জন্মের পর দুধের মাধ্যমেও সংক্রমিত করতে পারে 7।0
গরুর কৃমি শনাক্তকরণ: বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ লক্ষণসমূহ
কৃমি সংক্রমণ শনাক্ত করার জন্য বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। কিছু লক্ষণ সাধারণ, যা প্রায় সব ধরনের কৃমির আক্রমণে দেখা যায়, আবার কিছু লক্ষণ নির্দিষ্ট কৃমির আক্রমণকে নির্দেশ করে।
সাধারণ লক্ষণ
এই লক্ষণগুলো যেকোনো ধরনের কৃমি সংক্রমণের প্রাথমিক সূচক হিসেবে কাজ করে এবং খামারিকে সতর্ক হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
স্বাস্থ্যহানি ও ওজন হ্রাস: এটি কৃমি সংক্রমণের সবচেয়ে সাধারণ এবং সুস্পষ্ট লক্ষণ। আক্রান্ত পশু পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া সত্ত্বেও দিন দিন দুর্বল ও শীর্ণ হয়ে যায়, শরীরের ওজন কমে যায় এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় । অনেক খামারি পশুর এই অবস্থাকে পুষ্টির অভাব বা জেনেটিক দুর্বলতা বলে ভুল করেন। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার পরেও যদি পশুর স্বাস্থ্যের উন্নতি না হয়, তবে এটি প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, কৃমির সংক্রমণের লক্ষণ।
খাবারে অরুচি: আক্রান্ত পশু ধীরে ধীরে খাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে.
শরীরের লোম: সুস্থ পশুর লোম মসৃণ ও চকচকে থাকে । কিন্তু কৃমিতে আক্রান্ত পশুর পশম বা লোম রুক্ষ, খসখসে ও উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে .
হজম সংক্রান্ত সমস্যা: কৃমি পরিপাকতন্ত্রে বাস করে বলে হজমের সমস্যা একটি সাধারণ লক্ষণ। এর মধ্যে রয়েছে:
ডায়রিয়া: ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়া, যা অনেক সময় দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে । এটি মূলত অন্ত্রের প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ঘন ঘন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য: কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার পরিবর্তে বা পর্যায়ক্রমে কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দিতে পারে 1।
পেট ফাঁপা: ঘন ঘন পেট ফাঁপা বা পেটে গ্যাস জমাও কৃমি সংক্রমণের একটি সাধারণ লক্ষণ
নির্দিষ্ট ও গুরুতর লক্ষণ
কিছু লক্ষণ রয়েছে যা সংক্রমণের ধরন বা তীব্রতা সম্পর্কে আরও সুনির্দিষ্ট ধারণা দেয়।
#পশুচিকিৎসা #প্রাণীস্বাস্থ্য #পশুপালন #গবাদিপশু #গরু #ছাগল #কুকুর #বিড়াল #গরুচিকিৎসা #ছাগলচিকিৎসা
#কুকুরচিকিৎসা #বিড়ালচিকিৎসা #পোষাপ্রাণী #পোষাপ্রাণীরযত্ন #কুকুরপ্রেমী #বিড়ালপ্রেমী #খামারটিপস #ভ্যাকসিন #রোগপ্রতিরোধ #ভেটেরিনারি
#veterinary #animalhealth #animalcare #petcare #pethealth #pets #livestock #petlovers #doglover #catlover #cow #goat #dairyfarming #animaltreatment #diseaseprevention #vaccination #VetBangladesh
Информация по комментариям в разработке