হরেকৃষ্ণ শ্রী শ্রীমদ বাগবদ গীতা lecturer by siromani Nitai Das
Phone -8597183940/8670466423
মাহাত্ম্য ----
শৌনক বলিলেন- হে সূত, ব্যাসদেব যেভাবে গীতার মাহাত্ম্য বর্ণনা করিয়াছিলেন তাহা সেভাবে বর্ণনা কর। ।।১।।
সূত বলিলেন- মহাশয়, গীতার মাহাত্ম্য অতি গোপনীয়। তাহা ঠিকভাবে বলিবার শক্তি তো কাহারও নাই।।২।।
শ্রীকৃষ্ণ ইহা সবচেয়ে ভাল জানেন, তবে অর্জুন, ব্যাসদেব, শুকদেব, যাজ্ঞবল্ক্য ও জনক রাজা ইহার কিছুটা জানেন।।৩।।
ব্যাসদেবের মুখে আমি যাহা শুনিয়াছি তাহাই আপনার নিকট বলিতেছি শুনুন।।৪।।
উপনিষদগুলি গাভীস্বরূপ, শ্রীকৃষ্ণ হইলেন সেই সব গাভীর দোহনকারী। অর্জুন সেই গাভীর বাছুর (বৎস) আর গীতার উপদেশরূপ অমৃত হইল সেই গাভীর দুধ।।৫।।
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের সারথিরূপে গীতামৃত দান করিয়া ছিলেন। আমি সেই জন্য শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করি।।৬।।
যে ব্যাক্তি ঘোর সংসাররূপ- সমুদ্র পার হইতে চান তিনি গীতারূপ-তরণীর সাহায্যে সুখে পারাপার হইতে পারেন।।৭।।
গীতাগ্রন্থ পাঠ না করিয়া যে ব্যক্তি মুক্তি লাভ করিতে চায়, সেই ব্যক্তি অজ্ঞান। বালকেও তাহাকে উপহাস করে।।৮।।
যিনি রাত্রিদিন গীতা পাঠ করেন বা শ্রবণ করেন তিনি মানুষ নন দেবতুল্য।।৯।।
গীতাজ্ঞান হইলে ব্রহ্মতত্ত্ব জানা যায়। ব্রহ্মতত্ত্ব জানিলে স্বভাবতই ভক্তির উদয় হয়।।১০।।
গীতার আঠারটি অধ্যায়। তাহাতে ভক্তি-মুক্তির কথা আছে। তাহা জানিতে পারিলে ক্রমে ক্রমে চিত্তশুদ্ধি হয়।।১১।।
গীতাশাস্ত্র-জলে শ্রদ্ধার সহিত স্নান করিলে পাপ নষ্ট হয়, কিন্তু শ্রদ্ধাহীনের সব কিছু নষ্ট হয়।।১২।।
যে ব্যক্তি গীতার পঠন-পাঠন করে না, তাহার সমস্তই বিফল হয়।।১৩।।
যে ব্যক্তি গীতার মাহাত্ম্য জানে না, সে অজ্ঞান। তাহার জীবন বিফল।।১৪।।
যে গীতার অর্থ বুঝে না, সে অধম। তাহার শরীর আচরণ, বিত্তসম্পাদিতে ধিক।।১৫।।
যে গীতা জানে না, সে সকলের অধম। তাহার প্রারব্ধ, পূজা, প্রতিষ্ঠা, দান- সমস্তই বিফল।।১৬।।
গীতাশাস্ত্রে যাহার মন নাই, তাহার জ্ঞান, জ্ঞানদাতা, ব্রত, নিষ্ঠা সব বৃথা।।১৭।।
যে অর্থ বুঝিয়া গীতা পাঠ করে না, তাহার জ্ঞান আসুর জ্ঞান। তাহা নিষ্ফল হয়।।১৮।।
গীতা গ্রন্থ ধর্মময়। ইহা সমস্ত জ্ঞান দান করে। ইহার সমান পবিত্র আর কিছু নাই।।১৯।।
বিষ্ণুর পর্বদিনে যিনি গীতা পাঠ করেন, শত্রু কখনও তাহার কোন অনিষ্ট করিতে পারে না। ২০।।
শালগ্রামের নিকটে, দেবালয়ে, তীর্থস্নানে, নদীতীরে গীতাশাস্ত্র পাঠ করিলে অপার সৌভাগ্য লাভ হয়।।২১।।
দেবকীনন্দন শ্রীকৃষ্ণ গীতাপাঠে যত তুষ্ট হন, যজ্ঞ ব্রতাদিতেও তত তুষ্ট হন না।।২২।।
যে ভক্তির সহিত গীতা পাঠ করে তাহার অন্তরে পুরাণাদি সমস্ত শাস্ত্রের জ্ঞান ফুটিয়া উঠে।।২৩।।
যোগস্থানে, সিদ্ধপীঠে, শিলাগ্রে, সজ্জনের সভায়, যজ্ঞে বা বিষ্ণু ভক্তের নিকটে গীতা পাঠ করিলে সিদ্ধিলাভ হয়।।২৪।।
প্রতিদিন গীতা পড়িলে বা শুনিলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়।।২৫।।
যিনি গীতার অর্থ শোনেন, অন্যকে শোনান অথবা কীর্তন করেন, তিনি মুক্তি লাভ করেন।।২৬।।
যে ভক্তির সহিত গীতা দান করে তাহার ভার্যা প্রিয় ও গ্রহলক্ষী হয়।। ২৭।।
সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য আরোগ্য যশঃ ও সুখ লাভ করে। তাহার কোন দুঃখ হয় না।।২৮।।
যে বাড়ীতে প্রতিদিন গীতার অর্চনা হয়। সে বাড়ীতে কোনরূপ দুঃখ বা অশুভ ঘটিতে পারে না।।২৯।।
সেই বাড়ীতে অধ্যাত্মিক, আদিভৈৗতিক ও আদি দৈবিক- এই তিনি প্রকার দুঃখ আসিতে পারে না।।৩০।।
হরে কৃষ্ণ।।
দানের মাহাত্ম্য:-
সনাতন ধর্মে দান-দক্ষিণাকে পুণ্যকর্ম মনে করা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী দান করলে পুণ্য বৃদ্ধি হয়। এর ফলে শুধু ইহজন্মই নয়, বরং পরজন্মেও এর পুণ্য ফল ভোগ করতে পারেন সেই ব্যক্তি। শাস্ত্র মতে মৃত্যুর পরও দান-দক্ষিণার পুণ্য ফল ভোগ করা যায়। পাশাপাশি দান-দক্ষিণা করলে দেবতারাও প্রসন্ন হন। তবে দরিদ্র ব্যক্তিদের পক্ষে দান করা কঠিন। তাই দান তখনই করা উচিত, যখন ব্যক্তি আর্থিক দিক দিয়ে সক্ষম হয়।
নিজের আয়ের ১০ শতাংশ দান করা উচিত।
গরুড় পুরাণের আচারকাণ্ডের নীতিসার অধ্যায়ে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনের জন্য একাধিক কর্মের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল দান করা। এখানে একটি স্লোকের মাধ্যমে দানের মাহাত্ম্য ও কখন দান করা উচিত, তা বর্ণনা করা হয়েছে। এই উপদেশ মান্য করে চললে ব্যক্তিকে নিজের জীবনে কখনও অর্থাভাবের শিকার হতে হয় না।
গরুড় পুরাণে উল্লিখিত স্লোকটি হল--
দাতা দরিদ্রঃ কৃপণোর্থযুক্তঃ পুত্রোবিধেয়ঃ কুজনস্য সেবা।
পরাপকারেষু নরস্য মৃত্যুঃ প্রজায়তে দিশ্চরিতানি পঞ্চ।।
অর্থাৎ, দরিদ্র ব্যক্তি উচিত নয়। দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও দান করলে ব্যক্তি কাঙাল হতে পারে। এ ছাড়াও লোক দেখানোর জন্য কখনও দান করতে নেই। বরং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করা উচিত। এর থেকে বেশি দান করলে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারেন।
শাস্ত্র মতে, ব্যক্তিকে নিজের অর্জিক অর্থের দশ শতাংশ দান করা উচিত। পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন ব্যক্তিকে দান করা উচিত। তখনই দানের ফলে পুণ্য ফল লাভ করা যায়।
দানের সঠিক নিয়ম
১. ব্যক্তিকে নিজের উপার্জনের ন্যূনতম দশাংশ অর্থাৎ দশ শতাংশ দান কাজে ব্যয় করা উচিত।
২. সবসময় সৎপাত্র অর্থাৎ যাঁদের দানের প্রয়োজন রয়েছে তাঁদেরই করা উচিত।
৩. ধর্মীয় রীতিতে উপার্জিত অর্থ, ধন-সম্পত্তি ও দ্রব্যের দান করার কথা বলা হয়েছে।
৪. কারও আমানত হিসেবে রাখা ধন-সম্পত্তির দান করা উচিত নয়।
৫. ঋণ নিয়ে দান করা উচিত নয়।
৬. নিজের সংকট সময়ের জন্য যে অর্থ সঞ্চয় করে রাখা হয়, তা কখনও দান করতে নেই।
৭. প্রসন্ন চিত্ত ও নিঃস্বার্থ থেকে দান করা উচিত।
এই রীতিতে দান করলে তা নষ্ট হবে
১. যে দান করার পর দাতার মনে অনুতাপ হয় সেই দান নষ্ট হয়ে যায়।
২. অশ্রদ্ধা ভরে দান করলেও তা বিফল হয়।
৩. যে দানের ফলে মনের মধ্যে দ্বেষ ও রাগের আবেগ সঞ্চারিত হয়, তার কোনও অর্থই নেই।
৪. ভয়ে পেয়ে দান করলেও বিফলে যায়।
৫. যে দানের সঙ্গে স্বার্থ জড়িত থাকে তা-ও নষ্ট হয়ে যায়।
শ্রী রাধে 🙏
Информация по комментариям в разработке