যোগবিভূতি - ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবৃত্তির যোগক্রিয়া। পতঞ্জলির যোগদর্শন - ETERNAL PEACE SEEKER - SSPF

Описание к видео যোগবিভূতি - ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবৃত্তির যোগক্রিয়া। পতঞ্জলির যোগদর্শন - ETERNAL PEACE SEEKER - SSPF

এই প্রশ্নের একটা উত্তর আছে,পতঞ্জলির যোগদর্শন বইতে। এখানে বিভূতিপাতে শ্লোক নং ৩০-এ বলা হচ্ছে "কণ্ঠকূপে ক্ষুৎপিপাসা-নিবৃত্তিঃ" অর্থাৎ কণ্ঠকূপে বা জিহ্বামূলে সংযম করলে ক্ষুধা তৃষ্ণার নিবৃত্তি হয়। জিহ্বার মুলদেশের নিচে হচ্ছে তন্তু স্থান। এর নিচের অংশকে বলে কন্ঠ, আবার এই কন্ঠের নিচের অংশকে বলে কণ্ঠকূপ। ঋষি পতঞ্জলি বলছেন, এই কণ্ঠকূপে সংযম করলে ক্ষুধাতৃষ্ণা থাকে না। এই প্রক্রিয়ায় যে সাফল্য আছে, তা আমাদের অভিজ্ঞতা লব্ধ।
বিষয়টি আরো একটু খুলে বলি। আমাদের শরীরের কন্ঠ হচ্ছে, আমাদের বাকযন্ত্র। এখানে যেসব উপশিরা অর্থাৎ তন্তু বা তার আছে, তা অনেকটা বীনার তারের মতো। আমাদের যখন কথা বলার বা শব্দ করবার ইচ্ছে হয়, তখন অদ্ভুত ভাবে এই ইচ্ছেশক্তির প্রভাবে তন্তু ঝংকৃত হয়। আর আমাদের আকাঙ্খ্যা অনুযায়ী শব্দ বা ধ্বনি বের হয়। এই বাকযন্ত্রের নিচে আছে আমাদের শ্বাসনালী ও খাদ্য নালী। এই যে শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর যেখানে সন্ধিস্থল একেই বলে কণ্ঠকূপ। যোগীগণ এই কণ্ঠকূপে সংযম করে, ক্ষুধা-তৃষ্ণা থেকে রেহাই পান। এখন কথা হচ্ছে সংযম কাকে বলে।
ঋষি পতঞ্জলি বলছেন, "দেশবন্ধশ্চিত্তশ্য ধারণা, তত্র প্রত্যয়-একতানতা ধ্যানম, তদেবার্থমাত্র নির্ভাসং স্বরূপ শূন্যমিব সমাধিঃ। ত্রয়মেকত্র সংযমঃ।"
অর্থাৎ বিশেষ দেশে অর্থাৎ স্থানে চিত্তের স্থিত বা বন্ধ হলো ধারণা। ধারণা-জনিত প্রত্যয় অর্থাৎ জ্ঞান বৃত্তির একতানতা হলো ধ্যান। আর সেই ধ্যান যখন তার বিষয়মাত্র প্রকাশে স্বরূপ-শুন্য মতো হয়, তখন তা হলো সমাধি। আর এই তিনটি অর্থাৎ ধারণা-ধ্যান-সমাধি এই তিনটেকে একত্রে একটি বিষয়ে যুক্ত করলে হয় সংযম। অর্থাৎ ধারণা-ধ্যান-সমাধিতে যিনি সিদ্ধি লাভ করেছেন, তিনি সংযমী পুরুষ।
তো যখন ধ্যানসিদ্ধ সমাধিবান পুরুষ তাঁর কণ্ঠকূপে সংযম অভ্যাস করেন, তখন তিনি ক্ষুধা-তৃষ্ণার উর্দ্ধে চলে যান। আসলে যোগশাস্ত্র বলছে, আমাদের কন্ঠের বিপরীতে আছে আমাদের বিশুদ্ধচক্র। আমাদের শরীর পঞ্চভূতের মিশ্রণ। বিশেষ করে, বায়ু,অগ্নি ও অপ এই তিন ভূতের প্রভাবে, আমাদের শরীর আকাশভূতের মধ্যে যে ইথারীয় শক্তি আছে তাকে আকর্ষণ করে ক্রিয়াশীল থাকে। এই ইথার আমাদের শরীরের জড় কোষসমূহের মধ্যে যে শূন্য স্থান আছে, তার মধ্যে পূর্ন হয়ে আছে। তো সাধক যখন এই বিশুদ্ধ চক্রে মনসংযোগ করেন, তখন তিনি এই ইথারীয় শক্তিবলে নিজেকে প্রাণবন্ত রাখতে সমর্থ হন।
এবার আমরা আরো একটু সহজ করে ব্যাপারটা বুঝবার চেষ্টা করবো। দেখুন প্রাণায়ামের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রাণশক্তির সঞ্চয়ের মাধ্যমে দেহকে প্রাণবান করে তোলা। স্থুল দৃষ্টিতে এটাই প্রাণায়ামের কার্যকারিতা। আমাদের ধারণা হচ্ছে, প্রাণীর মধ্যেই প্রাণশক্তি আছে। জড় বস্তুর মধ্যে প্রাণশক্তি নেই। আসলে ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। প্রাণশক্তি একাংশ জড়বস্তু রূপেও আছে। তো জড়বস্তুর মধ্যেও মহাপ্রাণশক্তির দিব্য অবতরণ ঘটেছে প্রতিনিয়ত । একসময় যা বাষ্প বা মেঘ ছিল, তা একসময় জল হয়েছে, জল একসময় বরফ হয়েছে। অর্থাৎ সূক্ষ্ম থেকে স্থুল হয়েছে। আরো একটা কথা হচ্ছে, আমাদের ধারণা হচ্ছে, বাতাসের মধ্যে থেকে আমরা প্রাণশক্তি সংগ্রহ করি। কিন্তু সত্য হচ্ছে, জল, বা খাদ্যবস্তু থেকেও আমরা প্রাণশক্তি সংগ্রহ করি।
আরো একটা জিনিস জানবেন, খাদ্য ও খাদক ভিন্ন নয়। প্রাণই প্রাণের খাদ্য, আবার প্রাণই প্রাণের রক্ষাকর্তা। তো যে খাদ্যে অধিক প্রাণশক্তি আছে, সেই খাদ্যকে আমরা পুষ্টিকর খাদ্য বলে থাকি। আমাদের শরীর হচ্ছে অসংখ্য কোষের সমষ্টি। এই যে অসংখ্য কোষ এর মধ্যে শতকরা ৮৬ ভাগ কোষ বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকে। এই অক্সিজেনের অভাব হলে এদের মৃত্যু হয়। উদ্ভিদ যেমন সূর্য থেকে প্রাণশক্তি সংগ্রহ করে, তেমনি মাটির ভিতরে, জলের ভিতরে, এমনকি পাথরের ভিতরে শিকড় প্রবেশ করিয়ে প্রাণশক্তিকে আহরণ করতে পারে। কিন্তু মানুষের এই ক্ষমতা নেই। এইজন্য মানুষকে প্রানধারনের জন্য উদ্ভিজ প্রাণীর অথবা উদ্বিজপ্রাণীর মাংসের উপরে নির্ভর করতে হয়। আলো বাতাস থেকে উদ্ভিদ খাদ্যপ্রাণ সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু মানুষের মধ্যে এই আলো -বাতাস থেকে সরাসরি খাদ্যপ্রাণ সংগ্রহ করবার ক্ষমতা নেই। আর এই কারণেই মানুষ বা জীবজন্তু প্রকৃতির ভাণ্ডারে যে অফুরন্ত খাদ্যপ্রাণ আছে, তাকে সে সংগ্রহ করতে পারে না। আর অনাহারে প্রাণের অভাবে মৃত্যু বরণ করে। যেদিন মানুষ প্রকৃতির এই অক্ষয় ভান্ডার থেকে গিরিবালা দেবীর মতো, বা আমাদের মুনিঋষিদের মতো নিজের দেহ রক্ষার প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ সংগ্রহ করবার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে পারবে, সেদিন মানুষের খাদ্য সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এমনকি মানুষে মানুষে এই যে মারামারি কাটাকাটি, এমনকি জীবকুলের মধ্যে যে হিংসা তা লোপ পাবে। তাই আশাবাদী স্বামী শিবানন্দ সরস্বতী মহাশয় বলছেন, ভাবীযুগের অন্ন সমস্যা সমাধানে একদিন এই প্রাণায়াম শুধু সহযোগী হয়, প্রধান সহায়ক হতে পারে।
আমরা যদি প্রাণায়াম ইত্যাদির সাহায্যে আমাদের ফুসফুসকে শক্তিশালী করতে পারি, এবং বাতাসের মধ্যে যে খাদ্যপ্রাণ তাকে সহজে আলাদা করে নিজেদের শরীরে কাজে লাগাতে পারি, তবে আমাদের শরীর রক্ষা হতে পারে, তথাকথিত খাদ্য ছাড়াই। আমরা যে শ্বাসবায়ু গ্রহণ করি, তার মধ্যে বড়োজোর ১৮-২০ ভাগ আছে অক্সিজেন, যা আসলে খাদ্যপ্রাণ । ৭৭ ভাগ আছে নাইট্রোজেন। বাকিটা অন্যান্য গ্যাসীয় পদার্থ। কিন্তু এই যে ১৮-২০ ভাগ অক্সিজেন বা খাদ্যপ্রাণ এর মধ্যে আমরা মাত্র ৩-৪ ভাগ অক্সিজেন আমরা সংগ্রহ করতে পারি, বাকিটা আমাদের প্রশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। বায়ুর মধ্যে যে কার্বন গ্যাস আছে, তা আমাদের শরীরের তাপ উৎপন্ন করে, দেহের প্রাণকোষের নির্মাণ করে থাকে। আবার এই কার্বন গ্যাস প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকলে, শরীরের যে অক্সিজেন থাকে তাকে ধংশ করে দেয়। আবার নাইট্রোজেন-এর সাহায্যেই অক্সিজেন দেহপুষ্টির কাজে লাগে। ETERNAL PEACE SEEKER - SASANKA SEKHAR PEACE FOUNDATION

Комментарии

Информация по комментариям в разработке