#সংগ্রামপুঞ্জিঝর্ণাসিলেট#sangrampaunjijharna sylhet।
একটা সময় ছিল যখন সিলেটের নাম শুনলেই চোখে ভেসে উঠত হজরত শাহজালাল (রঃ) ও হজরত শাহ পরানের (রঃ) মাজার। কিন্তু বর্তমান সময়ের পর্যটকদের কাছে সিলেট নামটি কেবল মাজার নয়, বরং মাধবকুণ্ড ঝর্ণা, পরিকুন্ড ঝর্ণা, জাফলং, বিছনাকান্দি, পান্থুমাই, উতমাছড়া, লোভাছড়া, লক্ষনছড়া, ভোলাগঞ্জ, লালাখাল আর রাতারগুলের অপরূপ সৌন্দর্যের পটভূমি। বর্ষায় সিলেট যেন তার রূপের বিচিত্র পসরা সাজিয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানায় বাংলার অপার সৌন্দর্য দেখার। সবুজ চা বাগান, পাহাড় আর পিয়াইন নদী সহ ছোট-বড় কয়েকটি পাহাড়ি নদী নিয়ে সিলেট যেন কোনো রূপকথার দেশ। ঢাকায় যখন প্রচণ্ড দাবদাহে সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত, সিলেটে তখন অবিরাম বর্ষণে জনজীবন ব্যাহত। তাই এ সময়ে সিলেট ভ্রমণ কেবল সৌন্দর্যপিপাসুর মনে তৃপ্তি আনে না, সঙ্গে আনে গরম থেকে মুক্তির স্বস্তি।
সাম্প্রতিককালে সিলেটে ঘুরে দেখার মত আরো কিছু নতুন দর্শনীয় স্থান উন্মোচিত হয়েছে। তেমনই একটি হলো সংগ্রামপুঞ্জি বা সেনগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা বা মায়াবী ঝর্ণা এবং আরেকটি হলো উৎমাছড়া। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত এ ঝর্ণাটি ভারতের সীমান্তে পড়েছে। তবে বিএসএফের প্রহরায় চাইলেই বাংলাদেশীরা এ ঝর্নার চূড়া পর্যন্ত উঠতে পারে। কয়েক ধাপবিশিষ্ট এমন ঝর্না কমই দেখতে পাওয়া যায়। ঝর্ণার খানিকটা দূর থেকেই এর মেঘালয়ের পাহাড় বেয়ে বয়ে যাওয়ার গর্জন কানে আসবে। সামনে যেতেই চোখে পড়বে গাছ, পাথর আর পানির অপূর্ব মেলবন্ধন। পাহাড়ের গা-বেয়ে বেশ কয়েকটি ধারায় নেমে আসছে দুগ্ধ সাদা পানির স্রোত। কখনো সবুজ ঝোপের ভেতর দিয়ে, কখনোবা নগ্ন পাথরের বুক চিরে নেমে আসে এ পানি। ঝরনার জল এসে জমা হয়ে ছোট্ট পুকুরের মতো সৃষ্টি হয়েছে, যার তিন দিকেই রয়েছে বড় বড় পাথরের চাই। চাইলে সেই শীতল জলে ডুবে থাকতে পারেন অথবা করতে পারেন চূড়ায় ওঠার অ্যাডভেঞ্চার। ঝর্ণার তৃতীয় ধাপ থেকে কিছু পানি নিচে গড়িয়ে পড়ে, আর কিছু চলে যায় বাম দিকের সুড়ঙ্গে। সুড়ঙ্গমুখের কিছুটা অংশ পর্যন্ত দৃষ্টি চলে, বাকিটা অন্ধকার। সুড়ঙ্গ পথের কোনো হদিস কারো জানা নেই। ঠাঁই পাওয়া যায় না বলে ওই পথে যাওয়া সম্ভব নয়। পিচ্ছিল পাথর আর পানি টপকে উপরে উঠতে চাই সাহস, সতর্কতা আর অবশ্যই ভালো গ্রিপের জুতা। বর্ষার সময়ে সৌন্দর্যপ্রেমী সবাই ছুটে চলে সিলেট পানে। তাই একদম নির্জনতার স্বাদ হয়তো মিলবে না তখন। তবে এখনও মাধবকুণ্ড বা বিছনাকান্দির মতো পরিচিতি না পাওয়ায় ভিড় তুলনামূলক কম হয়। ফিরতি পথে সন্ধ্যার মুখে ঘুরে আসতে পারেন হজরত শাহ পরানের (র.) মাজার।
কখন যাওয়া উচিত
জলপ্রপাতে বর্ষাকালে বেশি পানি থাকে। তাই বর্ষাকাল ঝর্ণাতে যাওয়ার উপযুক্ত সময়।
কিভাবে যাওয়া যায়
বাসে সিলেট
ঢাকা থেকে সিলেট এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে৷বাস গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পরপর ছেড়ে যায়৷ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস, এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হাজার ১৮ টাকা। ট্রেনে গেলে রাত ৯.৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে জাওয়াটাই সব থেকে ভালো কারন আপনার যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে আর আপনি যদি রাতে ট্রেনে ঘুমিয়ে নিন তাহলে সকালে ট্রেন থেকে নেমেই আপনার ভ্রমন শুরু করতে পারেন আর সময় লাগবে ৭-৮ ঘন্টা।
চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট
চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে ১ হাজার ১৯১ টাকা।ট্রেন এর টিকেট এর দাম: এসি বার্থ ৬৯৮ টাকা, এসি সিট ৪৬০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস বার্থ ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস সিট ২৭০ টাকা. স্নিগ্ধা ৪৬০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৮০ টাকা, শোভন ১৫০ টাকা, সুলভ ৯৫ টাকা।
ট্রেনের সময়সূচি এখানে দেখে নিন
(Bangladesh Railway/Train Time Schedule)
সিলেট বাই এয়ার / প্লেনে সিলেট
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন যায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে।
সিলেটে থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা বা লেগুনায় যাওয়া যায় জাফলংয়ে। জাফলং যেতে জনপ্রতি বাসভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। যাওয়া-আসার জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে জাফলংয়ে। আর জাফলংমুখী বাস ছাড়ে নগরীর শিবগঞ্জ থেকে। প্রতি এক ঘন্টা পরপর পাওয়া যাবে বাস।
জাফলং পৌঁছার পর খেয়া পার হয়ে হেঁটে যেতে পারবেন ঝর্ণায় সেক্ষেত্রে খেয়া পার হতে লাগবে জনপ্রতি ১০-২০ টাকা। আর যদি খাসিয়া পল্লিসহ ঘুরে আসতে চান তাহলে নৌকা রিজার্ভ নিতে পারেন সেক্ষেত্রে ভাড়া পরবে জনপ্রতি ৮০০-১০০০ টাকা। ঝর্ণাটা ভারতে কিন্তু বাংলাদেশিদের বিকাল পর্যন্ত যাওয়ার অনুমুতি আছে।
কোথায় থাকবেন
জেলা পরিষদের বাংলো ছাড়া জাফলংয়ে থাকার তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। এক্ষেত্রে পর্যটককে থাকতে হবে সিলেট শহরে। আর জাফলং যাওয়ার সময় খাবার সঙ্গে করে নিয়ে গেলেই ভালো হয়। কেননা খাসিয়া আদিবাসী
ভিিডিওট দেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Информация по комментариям в разработке