✅খাগড়াছড়ি জেলাঃ
খাগড়াছড়ি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পাহাড়, ছোট ছোট নদী, ছড়া ও সমতল ভূমি মিলে এটি একটি অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত ঢেউ খেলানো এলাকা। এটি একটি পার্বত্য জেলা।
✅আয়তন ও অবস্থানঃ
খাগড়াছড়ি জেলার মোট আয়তন ২৬৯৯.৫৬ বর্গ কিলোমিটার। জেলার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে রাঙ্গামাটি এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য অবস্থিত।
✅নামকরণ ও ইতিহাসঃ
খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠেছিল বলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির পূর্বে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা হিসেবে রুপান্তরিত হয়।
✅উপজেলা সমূহঃ
খাগড়াছড়ি জেলা মোট ৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপজেলাগুলো হলো খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, মানিকছড়ি, মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও রামগড়।
✅সংসদীয় আসনঃ
২৯৮ পার্বত্য খাগড়াছড়ি – এ সংসদীয় আসনটি সমগ্র খাগড়াছড়ি জেলা নিয়ে গঠিত এর এমপি হচ্ছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা যিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী।
✅অর্থনীতিঃ
এ জেলায় উল্লেখযোগ্য তেমন কোন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। ধান, গম, আদা, হলুদ, ভুট্টা, সরিষা, তুলা, আখ, আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, তরমুজ ইত্যাদি থেকে এ জেলার মানুষ আয় করে থাকে। জেলায় রয়েছে সেমুতাং গ্যাসফিল্ড, মানিকছড়ি। অপার সম্ভাবনার এই পাহাড়ী জনপদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অতি ঊর্বর জমি কৃষিক্ষেত্রে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা গেলে এ পার্বত্য জেলা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হতে পারে।
✅শিক্ষা ব্যবস্থাঃ
জেলার শিক্ষার হারঃ ৪৪.০৭%
✅নদ-নদীঃ
জেলার নদীগুলোর মধ্যে চেঙ্গী, মাইনী ও ফেণী
✅ঐতিহ্যঃ
নানা ইতিহাস, বৈচিত্রতা রয়েছে খাগড়াছড়ি জেলার। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠিদের মধ্যে মোট ১৩ টি নৃ-গোষ্ঠি শ্রেণীপেশার লোকজনের বসবাস রয়েছে এ জেলায়। স্বতন্ত্র জীবন যাত্রা, বৈচিত্রময় রীতিনীতির জন্য অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এ জেলার মানুষজন। জেলায় বসবাসকারী নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে রয়েছে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা অন্যতম। সরকারি ও কথ্য ভাষা হিসেবে বাংলা প্রচলিত। স্থানীয় চাটগাঁইয়ারা চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে। এছাড়াও অন্যান্য আদিবাসী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ইত্যাদি প্রচলিত।
✅পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিতে খাগড়াছড়ি জেলার ইতিহাসঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিটি মূলত একটি রাজনৈতিক চুক্তি যা বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এর মধ্যে ১৯৯৭ সালের ২ রা ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনগণ ও উপজাতিদের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করে এবং শান্তিবাহিনী ও সরকারের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা বিদ্রোহের অবসান ঘটায় বলে মনে করা হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা স্বাক্ষর করেন।
✅খাগড়াছড়ি জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর
সেনাবাহিনী ব্রিগেডঃ ০২টি (খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন এবং গুইমারা সেনা রিজিয়ন)।
বিজিবি সেক্টরঃ ০২টি (খাগড়াছড়ি এবং গুইমারা)
১টি এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টার
৯ টি থানা
✅দর্শনীয় স্থানঃ
খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম কিছু দর্শনীয় স্থান হল:
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ও আলুটিলা গুহা
তুয়ারি মাইরাং
ভগবান টিলা
ফেনী নদীর উৎপত্তি স্থল
পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, খাগড়াছড়ি
জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক
তকবাক হাকর
তৈদুছড়া ঝর্ণা
মাতাই পুখিরি
পানছড়ি রাবার ড্যাম
রামগড় চা বাগান
রামগড় বিজিবি স্মৃতিসৌধ
মং রাজবাড়ি
মাটিরাঙ্গা জলপাহাড়
মায়াবিনী তৈসা লেক, ভাইবোনছড়া
রিছাং ঝর্ণা
লক্ষ্মীছড়ি জলপ্রপাত
পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুটির
মায়ুং কপাল বা হাতিমাথা পাহাড়
তৈলাফাং ঝর্ণা
তৈছামা ঝর্ণা
দিঘীনালা বনবিহার
ব্যাম্বো শুট ইকো ফুড কোর্ট
ম্যাগনেট ক্যাফে
ডিসি পার্ক, খাগড়াছড়ি
✅উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বঃ
খাগড়াছড়ি জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন:
বীরেন্দ্র কিশোর রোয়াজা - গণপরিষদ সদস্য (পূর্ব পাকিস্তান), রাজনীতিবিদ
বীর মুক্তিযোদ্ধা দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী –মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।
শরদেন্দু শেখর চাকমা – গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রদূত (ভূটান)।
যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা – সাবেক সংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
এ কে এম আলীম উল্লাহ – রাজনীতিবিদ
ওয়াদুদ ভূইয়া – রাজনীতিবিদ।
সমীরণ দেওয়ান –রাজনীতিবিদ।
কল্পরঞ্জন চাকমা - রাজনীতিবিদ।
ইউ কে চিং মারমা-বীর বিক্রম
নির্মলেন্দু চৌধুরী – খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র।
বাসন্তি চাকমা– সাবেক সংসদ সদ্স্য (তিন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত আসনের) ও রাজনীতিবিদ।
প্রভাংশু ত্রিপুরা –লেখক ও গবেষক।
মনিকা চাকমা –জাতীয় দলের নারী ফুটবলার।
আনাই মগিনি –জাতীয় দলের নারী ফুটবলার।
শেফালিকা ত্রিপুরা– বিশিষ্ট সমাজসেবী ও নারী উন্নয়ন কর্মী।
কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা-মাননীয় প্রতিমন্ত্রী
Информация по комментариям в разработке