Скачать или смотреть আজীবিক কারা? | ভারতে প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলন | Who are the Ajivikas? | আজীবিকরা কেন হারিয়ে গেল?

ভারতবর্ষ হিন্দুরাষ্ট্র নয়। এখানে অনেক ধর্ম জন্মলাভ করেছে। এরমধ্যে শ্রমণ ধর্মগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মনে হয়। বৌদ্ধ, জৈন, চার্বাক, এবং #আজীবিক এগুলোকে বলা হয় শ্রমণ ধর্ম। ভারতে যারা বেদ মানে না তাদের বলা হয় নাস্তিক। সেই হিসেবে এরা সবাই ছিল নাস্তিক্যবাদী। তাদের কাছে বিশ্বাসের চেয়ে যুক্তির প্রাধান্য ছিল।

শ্রমণ ধর্মগুলোর মধ্যে আজীবিকদের সম্পর্কে তেমন জানা যায় না, বৌদ্ধ শাসক বিন্দুসারের সময় তারা বৈদিক, বৌদ্ধ, এবং জৈনদের ধর্মীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। রাজা বিন্দুসার তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। আজীবিকরা ছিল নাস্তিক, তাঁরা কোন ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করত না। সময়ের সরলরৈখিক হিসাব, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বিশ্বাস করত না। তাঁরা কণাবাদে বিশ্বাস করত, মনে করত সবকিছু এটম বা পরমাণু দিয়ে তৈরি। এতদসত্ত্বেও আজিবকরা কঠোর তপস্যা করত। তাঁরা অহিংসা বা নন-ভায়োলেন্সে বিশ্বাস করত এবং পোশাক-আশাকের ধার ধারত না, সম্পূর্ণ নগ্ন থাকত।

মাখখালী ঘোষাল নামে নিম্ন বর্ণের এক সাধু এই ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন। তার বাবা ছিল ভ্রাম্যমান (মাঙ্খা) এন্টারটেইনার , পথে- ঘাটে ছবি দেখিয়ে মানুষের মনোরঞ্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এরকম এক ভ্রমণের সময় তখনকার শ্রাবস্তী নগরের নিকটবর্তী এক গ্রামে হাজির হন। তার স্ত্রী তখন গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু সামাজিক জাতপাতের কারণে তাঁরা কোন বাসাবাড়িতে স্থান পায়নি। সেজন্য বৃষ্টিবাদলের হাত থেকে বাঁচতে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে তার বাবা এক গোয়াল ঘরে আশ্রয় নেন। মাখখালী ঘোষাল সেই গোয়ালঘরে জন্ম নেন, বড় হয়ে বাবার মত পথেঘাটে মানুষের মনোরঞ্জনের কাজে যোগ দেন। এই পথে ঘুরতে ঘুরতে একসময় তিনি মহাবীরের সান্নিধ্যে আসেন।

জানা যায় তিনি জৈন ধর্মের তীর্থঙ্কর মহাবীরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তাঁর সাথে কিছুদিন ভ্রমণ করে পরে মতের অমিল হওয়ায় আলাদা হয়ে যান। আজকে আমরা আজিবিকদের সম্পর্কে যা জানতে পারি সব সেকেন্ডারি সোর্স থেকে, #জৈন, #বৌদ্ধ, এবং বৈদিক হিন্দুদের টেক্সট থেকে। যেহেতু এরা আজীবিকদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল সেজন্য যা জানা যায় সবই নেগেটিভ। জাতকের গল্প থেকে জানা যায় আজীবিকরা একাকী, নির্জন জীবন যাপন করত। বৌদ্ধ উৎস থেকে বলা হয়, ঘোষাল নাঙ্গা সাধু হয়েছেন কারণ একবার গ্রাম থেকে কোন অপরাধের কারণে পালানোর সময় গ্রামের মানুষ তার কাপড়চোপড় খুলে তাকে ন্যংটো করে দিয়েছিল।

আগেই উল্লেখ করেছি মৌর্য্য সম্রাট অশোকের পিতা সম্রাট #বিন্দুসার এর সময়ে আজীবিকরা বিখ্যাত হয়েছিলেন। বিন্দুসার এবং তাঁর স্ত্রী আজীবকদের অনুসারী ছিলেন। সম্রাট #অশোক এবং তার নাতি সম্রাট দশরথও আজীবকদের পৃষ্ঠাপোষকতা করেন। অশোক তাদেরকে #বারাবার গুহা দান করেন যাতে আজীবক সাধুরা সেখানে তপস্যা করতে পারেন। পাথর কেটে বানানো এসব গুহা এখনো টিকে আছে।
#Ajivika
#Barabar #Sramana