"কখনও কি এমন মনে হয়েছে…
যার জন্য আপনি দোয়া করেছিলে, তাকেই আপনি পেয়েছেন?
যেমন স্বামী অথবা স্ত্রী আপনি চেয়েছিলেন, ঠিক তেমন কাউকে আল্লাহ আপনার জীবনে পাঠিয়েছেন?
অনেকেই তখন বলে বসে —
‘আল্লাহ ৫০ হাজার বছর আগে থেকেই জানতেন, আমি কাকে চাই।’
এই কথার সত্যতা কতটুকু? চলুন, আজ আমরা এই বিষয়টির উপর জেনে নেই।
________________________________________
তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন —
আল্লাহ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করার ৫০ হাজার বছর আগেই সব কিছুর তাকদির লিখে রেখেছেন।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬৫৩)
আপনি কাকে পাবেন, কার সঙ্গে জীবন কাটাবেন, কে হবে আপনার স্বামী অথবা স্ত্রী!
এসব কিছুই অনেক আগে থেকেই আল্লাহ জানেন।
এমনকি তিনি জানেন, কোন মুহূর্তে আপনি কাঁদবেন, কোন সময়ে আপনি দোয়া করবেন,
আর সেই দোয়ায় আপনি যাকে চাইবেন — সে কে?"
________________________________________
"আপনি যদি সত্যিই কোনোদিন বলেছিলেন:
‘হে আল্লাহ, আমাকে এমন একজন স্বামী অথবা স্ত্রী দাও, যে দ্বীনদার হবে, সহচর হবে, বন্ধু হবে…’
তাহলে জেনে রাখুন —
সেই দোয়াটা শুধু তখন করা হয়নি —
আপনার দোয়া আসলে সেই কিতাবেরই অংশ, যা ৫০ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল।
আপনি যা চান, সব সময় তা পান না —
কিন্তু যখন পান, তখন বুঝে নিবেন —
এটা কাকতালিয় নয়, বরং তাকদির।"
________________________________________
"কেউ যখন বলে,
‘আমি যেমন চেয়েছিলাম, তেমনই স্বামী অথবা স্ত্রী আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন’
তখন সেটি শুধু প্রেমের কথা না —
বরং একজন মুমিনের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের কথা।
এই বিশ্বাস, যে আমার জীবনসঙ্গী আমার দোয়ার উত্তর, আমার তাকদিরের প্রতিফলন।"
________________________________________
"আপনি যদি আজও কাউকে চান —
তাহলে দোয়া করুন, প্রস্তুত হন, আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।
হয়তো সে আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে।
আর যদি পেয়ে যান —
তাহলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। কারণ,
তাকদির মানে হচ্ছে— আপনি যা পাননি, তার জন্য আফসোস নয়;
আপনি যা পেয়েছেন, তার মাঝে আল্লাহর রহমত খুঁজে নেওয়া।"
________________________________________
"আপনি যদি বিশ্বাস করেন,
আল্লাহ ৫০ হাজার বছর আগে আপনার তাকদির লিখে রেখেছেন —
তাহলে এটা মানতেও কোনো সমস্যা নেই,
তিনি জানতেন, আপনি কাকে চাইবেন…
আর তিনি আপনার জন্য তাকেই উপযুক্ত মনে করেছেন।
সেটা যদি সত্যিই ঘটে —
তাহলে বলুন: “আলহামদুলিল্লাহ… আমার স্বামী অথবা স্ত্রী আমার দোয়ার উত্তর।”
________________________________________
"এটা শুধু একটি ভালবাসার গল্প নয় —
এটা হল আল্লাহর ‘লিখে রাখা কাহিনী’র বাস্তব প্রকাশ।
আপনি জানেন কি?
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
“তোমরা জানো না, হয়তো তোমরা যা অপছন্দ করো, তাতেই আল্লাহ অনেক কল্যাণ রেখেছেন।”
(সূরা আল-বাকারা:আয়ত ২১৬)
আল্লাহ সব জানেন। আপনি শুধু মুহূর্তটি দেখেন,
কিন্তু তিনি দেখেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
তাই যদি আপনি তাঁর উপর ভরসা করেন,
তাহলে নিশ্চিত থাকুন, আপনার জীবনের প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি সম্পর্ক,
একটি উদ্দেশ্য নিয়ে আপনার পাশে এসেছে।
আর আপনার জীবনসঙ্গী?
সে কেবল আপনার দোয়ার উত্তর নয়,
বরং আপনার ইমানের পরীক্ষার একটি অংশও।"
________________________________________
তাই বলুন:
“হে আল্লাহ, আমার স্বামী বা স্ত্রীকে আমার জান্নাতের পথের সহচর বানিয়ে দিন।”
আল্লাহ বলেন:
“তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই জীবনসঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও,
আর তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।”
(সূরা আর-রূম: আয়াত ২১)
এটি শুধু একটি সম্পর্ক নয়,
এটি শান্তি, দয়া ও ভালবাসার এক পবিত্র চুক্তি
যার সাক্ষী স্বয়ং আল্লাহ।
________________________________________
তাই যদি এখনো কাউকে ভালোবাসেন — হালাল পথে চান — দোয়া ছাড়বেন না।
আর যদি পেয়ে থাকেন, তবে তা শুধু আপনার ভাল কপাল নয় —
বরং এক মহান পরিকল্পনার অংশ,
যা লেখা হয়েছিল আসমান-জমিনের সৃষ্টি হওয়ারও ৫০,০০০ বছর আগে। আমার জীবনসঙ্গী আমার তাকদির, আমার দোয়া, আমার জান্নাতের এক অনুপম উপহার। “হে আমাদের রব! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের চোখের শীতলতা বানাও এবং আমাদের মুত্তাকীদের জন্য নেতা করো।”
(সূরা আল-ফুরকান: আয়াত ৭৪)
Информация по комментариям в разработке