মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আইনি পরামর্শ পেতে ০১৭১৬-৮৫৬৭২৮ নম্বরে ৫১০ টাকা বিকাশ করে পরামর্শ নিতে পারবেন। সরাসরি সাক্ষাৎ করে আইনী পরামর্শ নিতে চাইলে ০১৭১৬-৮৫৬৭২৮ নম্বরে ১৫৩০ টাকা বিকাশ করে সাক্ষাতের সময়সূচি জেনে নিয়ে নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যদি থাকে) নিয়ে চেম্বারে আসতে হবে। ঠিকানা: ব্যারিষ্টার দোলন এন্ড এ্যাসোসিয়েটস, প্রেস্টিজ হোমস (২য় তলা), চিটাগাং হোটেলের সামনে, সেগুনবাগিচা, ঢাকা। অথবা প্রামাণিক ল’ চেম্বার, জজ কোর্ট চত্ত্বর, কুষ্টিয়া। This Channel does not promote and encourage any illegal content, illegal activities. The aim and objects of this channel is to create a law-conscious population.
জমি বন্টন বা ভাগবাটোয়ারা সম্পর্কিত যে মামলা আদালতে করা হয় সেগুলো বিভাগ বন্টন মামলা, বাটোয়ারা মামলা, পারটিশান স্যুট বা বিভাগ মামলা নামে পরিচিত। পৈত্রিক সম্পত্তি ওয়ারিশদের মাঝে সমবন্টন না হলে কিংবা ফিতা বন্টন চিহ্নিত না হলে কিংবা জমির সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধ হলে কিংবা সম্পত্তি অন্যান্য শরীকরা জোর করে দখলে রাখলে কিংবা প্রাপ্য অংশ কম দিলে কিংবা প্রাপ্য অংশ দিতে অস্বীকার করলে কিংবা অন্যান্য শরীকরা দাবীকৃত অংশ বন্টন অস্বীকার করলে সাধারণত এ মামলার উদ্ভব হয়।
যে আইনের আলোকে এ মামলাটি করতে হয়ঃ
আইনটি পার্টিশন অ্যাক্ট, ১৮৯৩ নামে পরিচিত। এ আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী বিভাগ বন্টন মামলাটি করতে হয়। মোট ৯টি ধারা সন্নিবেশিত আছে। আগেই জানিয়ে রাখি, এ মামলাগুলো রক্তসম্পর্কীয় শরীকদের সাথে বেশী হয়ে থাকে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আপনাদের মাঝে আরও পরিস্কার হয়ে উঠবে। নয়ন আর চয়ন দু’ভাই। তার বাবার মোট ১৪ বিঘা জমি আছে। বাবার মৃত্যুর পর দু’ভাইয়ের মধ্যে এ সম্পত্তি সমভাবে বন্টিত হবে, আইনও তাই বলে। কিন্তু নয়নের ৮ বিঘা আর চয়নের নামে ৬ বিঘা জমি আর.এস রেকর্ডে প্রস্তুত হয়। সে অনুযায়ী তারা জমি ভোগ দখলরত অবস্থায় আছে। এক্ষেত্রে চয়নের যেকোন ওয়ারিশ বাদী হয়ে, নয়ন বা নয়নের যেকোনো ওয়ারিশকে বিবাদী করে সমবন্টনের নিমিত্তে বিভাগ বন্টন মামলা করতে পারে। আদালতের মাধ্যমে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন করে নিলে জটিলতা কম থাকে বলে আদালতে এ মামলার সংখ্যাও বেশী।
আমরা সবাই জানি, সম্পত্তির শরিক দুই ধরনের। এক. উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক যা ইংরেজিতে কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স বলা হয় আর দ্বিতীয়টি খরিদ সূত্রে শরিক যা ইংরেজিতে কো-শেয়ারার বাই পারচেজ বলা হয়। বাটোয়ারা মামলা করার সময় সকল অংশীদারকে মামলায় পক্ষভুক্ত করতে হয়। কোনো একজন শরিক বাদ থাকলে বণ্টননামা শুদ্ধ হয় না। এ মামলা করতে হলে কিন্তু সম্পত্তির মালিকানা সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যেমন ভূমি জরিপ খতিয়ান, নামজারি খতিয়ান, মালিকানা দলিল, উত্তরাধিকার সনদ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। কারণ নালিমী আর্জিতে সম্পত্তির মালিকানা অর্জনের বিবরণ যেমন করিদ, দানসূত্রে কিংবা ওয়ারেশ সূত্রে কিনা, উত্তরাধিকার সূত্রে কি-না, যৌথ মালিকানার মাধ্যমে কি-না, দখলের প্রেক্ষিতে স্বত্ব অর্জন কি-না, বন্ধক বা অন্য কোনভাবে স্বত্ব অর্জন কি-না ইত্যাদি বিষয়সমূহ ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করতে হয়।
সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে ভাগবণ্টন করে বণ্টননামা দলিল করে নেয়ায় ভাল। তবে দলিলটি অবশ্যই রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে। কারণ ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতে, বিক্রি করতে, রেকর্ড করাতে, ব্যাংক থেকে লোন করাতে গেলে, ভবিষ্যতে মামলা মেকদ্দমা থেকে বাঁচতে বন্টননামা দলিল রেজিস্ট্রি অবশ্যই দরকার হবে। এ মামলা করতে বিরোধ দেখা দেওয়ার ছয় বছরের মধ্যে আদালতে যেতে হয়। নতুবা তামাদি দোষে বারিত হয়ে যায়। এই মোকদ্দমা চলাকালে কেউ মারা গেলে সেই মৃত ব্যক্তির ওয়ারেশদের মামলায় পক্ষভুক্ত করতে হয়।
বাটোয়ারা মামলা করার পূর্বে নিশ্চিত হতে হবে যে, সম্পত্তি আগে উইল বা হেবা করা হয়েছে কিনা। যদি হয়ে থাকে তাহলে উইলের ক্ষেত্রে ১/৩ অংশ বাদ দিয়ে কিংবা হেবা করা হলে হেবার দলিলে যে পরিমাণ মালিকানা আছে সেটা বাদ দিয়ে অন্য সহ শরীকের অংশ বের করতে হবে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, এ মামলায় দু’বার ডিক্রি হয়।
প্রাথমিক ডিক্রির পর বণ্টন না করা হলে আদালত এ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করে অংশ নির্ধারণ করে দেন এবং চূড়ান্ত ডিক্রি প্রদান করেন। মামলা চলাকালীন আদালতের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে। বণ্টন ডিক্রি পাওয়ার পরও দখল না পেলে কিংবা পক্ষগণ দখল বুঝিয়ে না দিলে কিংবা হিস্যা বুঝিয়ে না দিলে ‘উচ্ছেদের মামলা’ করা যেতে পারে, স্বত্ব দখলের মামলা করা যেতে পারে।
এছাড়া অংশীদারদের ভয়-ভীতি ও হুমকি দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট ও নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা যেতে পারে। ভয়-ভীতি-হুমকি ও জীবননাশের আশঙ্কায় আদালতে ফৌজদারি মামলাও করা যায়। এ মামলা করার আগে মনে রাখবেন, বর্তমান রেকর্ড যদি বাদীর নাম বা তার পূর্বসূরীর নামে না থাকে কিংবা খতিয়ানে যেভাবে উল্লেখ আছে তা নালিশী সম্পত্তির সাথে না মিলে থাকে তাহলে বাদীর সত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে। সুতরাং সত্ত্বের আবেদন না করে শুধু পার্টিশন মামলা করলে মামলা খারিজ হতে পারে। এ বিষয়ে ১৭ বিএলডি, ১৭৯ পৃষ্ঠায় এ্যাপিল্যাট ডিভিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত রয়েছে।
আর পার্টিশন মামলায় বর্তমান রেকর্ডেড মালিককে অবশ্যই পক্ষ করতে হবে কেননা এই পক্ষভূক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অন্যথায় মামলা খারিজ হবে বলে ৩৭ ডিএলআর, ২১৬ পৃষ্ঠায় এ্যাপিল্যাট ডিভিশনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত রয়েছে। যখন আবশ্যকীয় কোন শরীকানকে বাদ দিয়ে মামলা করা হয়, তখন পক্ষদোষ হয়। তবে জ্ঞাত হওয়ার পরেই পক্ষভূক্ত করা যায়। আবার যিনি সম্পত্তির শরীকান নয়, তাকে পক্ষভূক্ত করা হলে, তখন পক্ষদোষে অচল হয়। এ মামলার সকল শরীকানগণকে পক্ষব্যতীত মামলা অচল হবে বলে (১৯৮৬ বিএলডি, এ্যাপিল্যাট ডিভিশন, ১০৯) সিদ্ধান্ত রয়েছে। আর শরীকান সম্পত্তি বিক্রি হলে, যিনি কিনেছেন তাকে আবশ্যকীয় পক্ষ করতে হয়।
Информация по комментариям в разработке