মলমাস /অধিমাস/ পুরুষোত্তম মাস/ ব্রত মাহাত্ম্য, PURUSOTTAM Vrat MAHATMYA
starting - 18th July 2023 tues day - End- 16th August 2023 wednesday
পুরুষোত্তম নামের মহিমা:-
পুরুষোত্তম পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি নাম। ‘পুরুষ’ অর্থাৎ ভোক্তা বা ভগবান; উত্তম মানে আধ্যাত্মিক। পুরুষোত্তম মানে ‘আধ্যাত্মিক পরম ভগবান’। ভগবদগীতার ১৫তম অধ্যায়কেও পুরুষোত্তম যোগ বলা হয়।🌿পুরুষোত্তম
মাসের/ব্রতের মহিমাঃ-
বছরে বারোটি মাসের আধিপত্য দেখে, অধিকমাস বৈকুণ্ঠাধিপতি শ্রীনারায়ণকে নিজ দুঃখ জ্ঞাপন করেছিলেন। তিনি কৃপাপূর্বক অধিমাসকে সঙ্গে নিয়ে গোলকে শ্রীকৃষ্ণের কাছে উপনীত হলেন। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তখন বললেন -
“হে রমাপতি! আমি যেরূপ এ জগতে পুরুষোত্তম নামে বিখ্যাত -এই অধিমাস ও তদ্রূপ ত্রিলোকে পুরুষোত্তম বলে বিখ্যাত হবে। আমাতে যে সমস্ত গুণ আছে, সে সব আমি এই মাসে অর্পণ করলাম। আমার সদৃশ হয়ে এই অধিমাস অন্য সকল মাসের অধিপতি হবে। এই মাস জগৎপূজ্য ও জগৎবন্দ্য। অন্য সকল মাস সকাম, এই মাসটি নিষ্কাম। যিনি সকল প্রকার কামনাশূণ্য বা কামনা যুক্ত হয়েও এই মাসের পূজা করেন, তিনি সকল কর্ম ভস্মসাৎ করে আমাকে প্রাপ্ত হন। যদিও আমার ভক্তদের কদাচিৎ অপরাধ হয়, কিন্তু এই পুরুষোত্তম মাসে ভক্তদের কখনই অপরাধ হবে না।
যে সকল মহামূঢ় এই অধিমাসে জপ-দানাদি বর্জিত ও সৎকর্ম-স্নানাদি রহিত থাকে এবং দেব, তীর্থ ও দ্বিজগণের প্রতি বিদ্বেষ করে, সেই সকল দুষ্ট দুর্ভাগা পরভাগ্যোপজীবী হয়ে স্বপ্নেও কোনো সুখ পায় না। এই পুরুষোত্তম মাসে যিনি আমাকে ভক্তিপূর্বক অর্চন করেন, তিনি ধন-পুত্রাদি লাভে সুখ ভোগ করে অবশেষে গোলোকবাসী হন।”
নারদ মুনিকে ভগবান শ্রীনারায়ণ পুরুষোত্তম ব্রতের মহিমা সম্পর্কে বললেন- “এটি শুধু জড় জাগতিক সুখই প্রদান করে না, ভগবদ্ধামে ফিরে যাবার যোগ্যতা প্রদান করবে।”
ভগবান নারায়ণের নিকটে এই পুরুষোত্তম মাসের মহিমা শ্রবণ করে নারদ মুনি অত্যন্ত প্রীত হলেন । তিনি বারবার দণ্ডবৎ প্রণতি নিবেদন করে বলতে লাগলেন,“এই পুরুষোত্তম মাস সকল মাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এমনকি যদি কেউ ভক্তিভরে কেবল এই ব্রত মাহাত্ম্য শ্রবণও করে, সে অচিরেই ভগবত সেবা লাভ করেন এবং সকল পাপ কর্ম ফল থেকে মুক্ত হন । পুরুষোত্তম ব্রত প্রভাবে অচিরেই সকল সৌভাগ্য লাভ করে গোলক বৃন্দাবনে গমন করেন।”
দ্রৌপদীর পূর্বজন্মের কাহিনী
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, যুধিষ্ঠির ও দ্রৌপদীর দিকে করুণাদৃষ্টি নিক্ষেপ করে অর্জুনকে বলতে লাগলেন,“হে পুরুষব্যাঘ্র, তোমরা কি তোমাদের দুঃখের কারণ জানো ? তোমরা আমার প্রিয় ও অত্যন্ত দুর্লভ পুরুষোত্তম ব্রত পালন করনি। এজন্য তোমরা দুঃখ পাচ্ছ। তোমরা ব্যাসদেবের উপদেশে সমস্ত বর্ণাশ্রমোচিত আচার পালন করেছ। কিন্তু পুরুষোত্তম মাসের পূজা না করা পর্যন্ত আমাতে শুদ্ধভক্তি লাভ করতে পারবে না।”
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলতে লাগলেন, “আমি এখন দ্রৌপদীর পূর্বজন্ম বৃত্তান্ত বলব। পূর্বজন্মে দ্রৌপদী মেধা ঋষির কন্যা ছিলেন। শৈশবেই তার মাতৃবিয়োগ হলে তিনি পিতার তত্ত্বাবধানে পালিত হন। এর মধ্যেই হঠাৎ একদিন তার পিতৃবিয়োগ হলো। তখন তার অবস্থা আরও শোচনীয় হলো। সৌভাগ্যক্রমে একদিন দুর্বাসা মুনি সেখানে আগমন করলেন। দুর্বাসা মুনিকে তিনি তার সমস্ত দুঃখ-দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন।
দুর্বাসা মুনি বললেন, “পুত্রী, আগামী তিন মাসের মধ্যে পরমপবিত্র পুরুষোত্তম মাস শুরু হবে। এই পবিত্র মাসটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট সবথেকে প্রিয়। দয়া করে আসন্ন পুরুষোত্তম মাসকে যত্ন সহকারে পূজা করতে ভুলো না।”
দুর্ভাগ্যবশত সেই ব্রাহ্মণকন্যা তাঁর কথায় বিশ্বাস করলেন না। বরং ক্রোধান্বিতা হয়ে নিন্দাপূর্ণ বাক্য বলতে লাগল,“হে মহামুনি, আপনি মিথ্যা বলছেন। কীভাবে এই অতিরিক্ত মাসটি, যাকে মলমাস বলা হয়, তা অন্য সকল মাস এমনকি, কার্তিক বা মাঘ বা বৈশাখ হতেও শ্রেষ্ঠ হবে ?
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলতে লাগলেন,“হে অনঘ ! দুর্বাসা মুনি চলে যাওয়ার সাথে সাথে ব্রাহ্মণকণ্যা তার সমস্ত ঐশ্বর্য হারালো। পুরুষোত্তম মাসের প্রতি অপরাধের ফলে সে কুৎসিত দেহ লাভ করল। তখন সে মহাদেব শিবের আরাধনা করতে মনস্থ করল।” ধ্যানে তার নয় হাজার বছর অতীত হলে শ্রীশিব তার সম্মুখে আবির্ভূত হলেন ও বর দিতে চাইলেন, তখন ব্রাহ্মণকন্যা বলতে লাগল,“হে দীনবন্ধু, আমাকে গুণবান স্বামী প্রদান করুন।”একথাটি সে পরপর পাঁচবার বলল। তখন শিব বললেন, “যেহেতু তুমি পাঁচবার এ কথাটি বলেছ, তাই তোমার পঞ্চস্বামী হবে।”
পরবর্তীতে ব্রাহ্মণকণ্যা দ্রুপদ রাজার কন্যা দ্রৌপদী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঘটনাক্রমে পঞ্চপাণ্ডবকে পতি হিসেবে লাভ করেন। অতঃপর ক্রমান্বয়ে বস্ত্রহরণ, বনবাস, পুত্রবিয়োগাদি নানা দুঃখসমুদ্রে পতিত হন। বনবাসের সময় তাঁরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে এত দুঃখের কারণ এবং নিস্কৃতির উপায় জিজ্ঞেস করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তখন দ্রৌপদীর পূর্বজন্মে পুরুষোত্তম ব্রতের অবজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এই ব্রত আচরণ করে, সকলে বনবাস দুঃখের পার প্রাপ্ত হন।
নৈমিষারণ্যে ঋষিগণ পরস্পর বলতে লাগলেন,“ওহে! এই পুরুষোত্তম মাস সব থেকে মহিমাপূর্ণ এবং এর ইতিহাস অতি প্রাচীন। এটি কল্পতরুর ন্যায় ভক্তদের সমস্ত বাসনা পূরণে সমর্থ। পুরুষোত্তম মাসের জয় হোক।
পুরুষোত্তম ব্রত উৎযাপনের সুফলঃ
১. পৃথিবীর সমস্ত পবিত্র তীর্থ দেহে বিরাজ করে।
২. যে ব্যক্তি গভীর বিশ্বাস ও ভক্তি সহকারে পুরুষোত্তম মাস পালন করেন, তিনি জীবনের অন্তিমে প্রকৃত আলয় গোলক বৃন্দাবনে ফিরে গিয়ে শ্রীশ্রীরাধামদনমোহনের সেবাধিকার প্রাপ্ত হন।
পদ্মপুরাণে পুরুষোত্তম মাস মাহাত্ম্যে নিম্নোক্ত সমস্ত ব্রতের উল্লেখ রয়েছে।
#পুরুষোত্তমব্রতমাহাত্ম্য
(স্কন্ধপুরাণ ও পদ্মপুরাণ থেকে)
শ্রীযুগালাষ্টকম/ • Видео
শ্রীশ্রীচৌরাগ্রগণ্যপুরুষাষ্টকম্- • Видео
• কিভাবে পুরুষোত্তম ব্রত পালন করবেন? পুরুষো...
Информация по комментариям в разработке