🌑 ১️⃣ কলিযুগ কী?
সনাতন মতে সময়কে বলা হয় “যুগচক্র (Yuga Chakra)”।
এটি এক অবিরাম ঘূর্ণন —
সত্যযুগ → ত্রেতাযুগ → দ্বাপরযুগ → কলিযুগ → আবার সত্যযুগ।
এই চার যুগের অনুপাত —
সত্যযুগ : ত্রেতা : দ্বাপর : কলি = 4 : 3 : 2 : 1
একটি পূর্ণ চক্র (মহাযুগ) = ৪৩২,০০০০ বছর।
তার মধ্যে:
সত্যযুগ = ১৭,২৮,০০০ বছর
ত্রেতাযুগ = ১২,৯৬,০০০ বছর
দ্বাপরযুগ = ৮,৬৪,০০০ বছর
কলিযুগ = ৪,৩২,০০০ বছর
বর্তমান কলিযুগ শুরু হয়েছিল —
👉 মহাভারতের যুদ্ধের পর (প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৩১০২ অব্দে)
অর্থাৎ প্রায় ৫,১২৭ বছর অতিবাহিত হয়েছে।
তাহলে এখনো প্রায় ৪,২৬,৮০০ বছর বাকি।
🌘 ২️⃣ কলিযুগের বৈশিষ্ট্য (শাস্ত্রানুসারে)
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণে (১২.২ অধ্যায়ে) কলিযুগের লক্ষণ বলা হয়েছে —
“ধর্মে নষ্টে তদা কলিঃ” —
কলিযুগে ধর্মের পতন ঘটবে।
🔹 চার ধর্ম স্তম্ভ:
সত্য (Truth)
দয়া (Compassion)
তপ (Austerity)
দান (Charity)
সত্যযুগে চারটিই পূর্ণ থাকে,
ত্রেতায় তিনটি,
দ্বাপরে দুটি,
আর কলিযুগে মাত্র এক — “দান” বা “নামস্মরণ” থাকে।
🔹 কলিযুগের লক্ষণ:
মানুষ স্বার্থপর হবে
ধর্মের নামে ভণ্ডামি
রাজারা লোভী হবে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধ বৃদ্ধি
নারী ও পুরুষের চরিত্রহীনতা
সন্তানেরা পিতামাতাকে সম্মান করবে না
ভক্তির পরিবর্তে ভোগের সংস্কৃতি
🌗 ৩️⃣ কলিযুগের পরিণতি — “প্রলয়”
সনাতন শাস্ত্র বলে, কলিযুগের শেষ দিকে বিশ্বে চরম অধর্ম, দুঃখ, ও অরাজকতা ছড়িয়ে পড়বে।
তখন ভগবান বিষ্ণু অবতার নেবেন “কল্কি অবতার” রূপে।
🌕 ৪️⃣ কল্কি অবতার — কলিযুগের শেষ সংকেত
📜 “বিশ্ণু পুরাণ”, “ভাগবত পুরাণ”, ও “ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ”-এ বর্ণিত।
⚔️ কল্কির আগমন:
কলিযুগের শেষ প্রান্তে, যখন ধর্ম সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হবে,
তখন ভগবান বিষ্ণু “কল্কি” রূপে জন্ম নেবেন শম্ভলা গ্রামে।
তাঁর পিতা দেবদত্ত নামের এক ব্রাহ্মণ।
তিনি এক শুভ্র অশ্বে আরোহণ করবেন, হাতে নেবেন দীপ্ত তলোয়ার।
🌩️ তাঁর কাজ:
অধর্ম, অসুর, দুষ্ট ও পাপী মানুষদের বিনাশ করবেন।
পৃথিবীকে পুনরায় ধর্মে প্রতিষ্ঠা করবেন।
এই ধ্বংসের পর পৃথিবী পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে।
🌞 ৫️⃣ কলিযুগের অবসান ও নতুন যুগের সূচনা
যখন কল্কি অবতার পৃথিবীকে পাপমুক্ত করবেন, তখন:
পৃথিবী পুনরায় নবজীবন পাবে,
প্রকৃতি পুনরুজ্জীবিত হবে,
মানুষ আবার সত্য, দয়া ও ধর্মে ফিরে আসবে,
শুরু হবে নতুন সত্যযুগ।
এভাবেই যুগচক্র আবার ঘুরে দাঁড়াবে —
কলিযুগ → প্রলয় → সত্যযুগ (নব সৃষ্টির সূচনা)
🌺 ৬️⃣ আধ্যাত্মিক অর্থে
সনাতন দর্শন বলে —
“কলিযুগ” কেবল ক্যালেন্ডার সময় নয়, এটি অন্তরের অবস্থাও।
যখন মনের মধ্যে অধর্ম, লোভ, হিংসা — তখনই কলিযুগ।
আর যখন হৃদয়ে সত্য, প্রেম, দয়া — তখনই সত্যযুগ।
অর্থাৎ কলিযুগের অবসান বাইরে নয়, ভিতরেও ঘটে।
✨ সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ:
বিষয় অর্থ
কলিযুগের সূচনা খ্রিষ্টপূর্ব ৩১০২ অব্দে
মোট স্থায়িত্ব ৪,৩২,০০০ বছর
অবশিষ্ট সময় প্রায় ৪,২৬,৮০০ বছর
অবতার কল্কি (বিষ্ণুর শেষ অবতার)
সমাপ্তি চিহ্ন অধর্মের বিনাশ, প্রলয়, সত্যযুগের সূচনা
দার্শনিক ব্যাখ্যা কলিযুগ মানসিক অন্ধকার; কল্কি জাগরণের প্রতীক
তুমি চাইলে আমি কল্কি অবতারের আগমনের নিদর্শন (যা পুরাণে ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে আছে) বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি — যেমন পৃথিবীর অবস্থা, মানবজাতির পরিবর্তন, ও আকাশীয় লক্ষণ।
চাও কি আমি সেটাও লিখি? 🌠
Информация по комментариям в разработке