Скачать или смотреть ধানের জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষক ভাইদের করণীয়

ধানের জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষক ভাইদের করণীয়
ধানের ক্ষতিকর বাদামি গাছ ফড়িং (কারেন্ট পোকা) ও তার প্রতিকার

বাদামি গাছ ফড়িং:
বাদামি গাছ ফড়িং ধানের একটি মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। অধিকাংশ কৃষকের কাছে এটি "কারেন্ট পোকা" বা "গুনগুনী" পোকা নামে পরিচিত। পূর্ণবয়স্ক এবং বাচ্চা উভয় অবস্থায় এরা ধান গাছের ক্ষতি করে থাকে। এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পারে।

আক্রমণের লক্ষণ:
পূর্ণবয়স্ক বাদামি গাছ ফড়িং এবং এর বাচ্চা (নিন্ফ) ধান গাছের কাণ্ডের রস শুষে খায়। আক্রান্ত গাছগুলো হলদে হয়ে পরবর্তীতে শুকিয়ে খড়ের মতন হয় যাকে "হপার বার্ণ" বলে। ক্ষেত দেখে বাজপোড়ার মতো হয়ে যায়। সাধারণত কাইচ থোড় আসা পর্যন্ত থেকে এ পোকার আক্রমণ দেখা যায়। বাদামি গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণে ধানের ফলন ২০-১০০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে।

বাদামি গাছ ফড়িং এর আক্রমণের অনুকূল পরিবেশ:
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া (গুমট অবস্থা) এবং ছায়াযুক্ত স্থানে বাদামি গাছ ফড়িং দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। চারা ঘন করে রোপন করলে, জমি স্যাঁতস্যাঁতে হলে ও জমিতে দাড়ানো পানি থাকলে। অধিক হারে ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে।

দমন ব্যবস্থাপনা:
বোরো মৌসুমে ফেব্রুয়ারি ও আমন মৌসুমে আগস্ট মাস থেকে ধান গাছের গোড়ায় পোকার উপস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

স্বল্প জীবনকাল বা আগাম পাকে এমন জাতের ধান চাষ করতে হবে। (বোরো মৌসুমে ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮৬, ব্রি ধান৮৮, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান১০০, ব্রি ধান১০৮, বিনা ধান২৫, ব্রি হাইব্রিড ধান৩, ব্রি হাইব্রিড ধান৫, ব্রি হাইব্রিড ধান৮ এবং আমন মৌসুমে ব্রি ধান৭৫, বিনা ধান১৭, ব্রি হাইব্রিড ধান৪ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৬)

চারা লাইনে লাগানো (২০ x ২০ সে.মি. অথবা ২৫ x ১৫ সে.মি. অথবা ২০ x ১৫ সে.মি) এবং দশ লাইন পরপর এক লাইন বাদ দিয়ে লগো করে লাগাতে হবে।

আক্রান্ত জমিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার না করা।

আক্রান্ত জমিতে দুই হাত দূর দূরে "বিলি কেটে" আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করা।

আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে, জমিতে হাঁস ছেড়ে পোকা দমন করা যায়।

আক্রান্ত জমির পানি ৭-৮ দিনের জন্য সরিয়ে ফেলা।

প্রতি গোছায় ২ থেকে ৪টি গর্ভবতী বাদামি গাছ ফড়িং বা ৮ থেকে ১০টি নিম্ফ দেখা গেলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ধান গাছের গোড়ায় ডাবল নজেল স্প্রেয়ার দিয়ে স্প্রে করতে হবে। একই গ্রুপের কীটনাশক বারবার ব্যবহার না করে বিভিন্ন গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
যেমন-পাইমেট্রোজিন (প্লেনাম, পাইটাফ, হপারসট, কোটান ইত্যাদি) ৬ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।

অথবা
পাইমেট্রোজিন+নাইটেনপাইরাম (পাইরাজিন-৭০ ডাব্লিউডিজি)- ৪ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।

অথবা
গ্লামোর ৫ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।

অথবা
থিয়ামিথোক্সাম ২৫ ডব্লিউজি (একতারা, কনফিডর, স্পাইক)- ১.২ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।

অথবা
আইসোপ্রোকার্ব (মিপসিন ৭৫ ডব্লিউপি, সপসিন ৭৫ ডব্লিউপি)- ২৬ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।

অথবা
ইমিডাক্লোপ্রিড (ইমপেল ২০ এসএল) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মি.লি হারে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা।



#কারেন্টপোকা #বাদামীগাছফড়িং #গুণগুণীপোকা #ধানচাষেপোকাদমনব্যবস্থাপনা