কবিতা : স্বাধীনতা ..... অতঃপর কবি ও কণ্ঠ : কামরান চৌধুরী
Poem : Swadhinota..... Aotoppor Poet and Recitation By : Kamran Chowdhury
যোগাযোগ : ০১৮১৮৪৮১৫১১
ফেসবুক প্রোফাইল / kamran.chowd. .
ফেসবুক পেজ / kamranchowdh. .
স্বাধীনতা...... অতঃপর ।। কামরান চৌধুরী
শত সহস্র বছর ধরে বাংলার ভূমি অনেক নৃপতি করেছে শাসন
শষ্যে পূর্ণ এ উর্বর ভূমি করেছে উজাড় তারা
শোষণের যাতাকলে পিষ্ট হয়েছে ক্রমশঃ বাঙালির দেহ মন
তবু আশায় আশায় তারা, করে দিন গুজরান।
অতীষ্ঠ বাঙালি মাঝে মাঝে জানিয়েছে প্রতিবাদ যতটা ক্ষমতা ছিল তার
বাঁশের লাঠি নিয়ে লড়েছে তিতুমীর
ইংরেজের উপর বোমা মেরে হাসতে হাসতে ফাঁসিতে ঝুলেছে ক্ষুদিরাম।
বিনোদ, বাদল, দীনেশ বোমা মেরে আতঙ্কিত করেছিল ইংরেজ শাসনের
সূর্যসেন, প্রীতিলতার অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, ইলামিত্রের তেভাগা আন্দোলন তুলেছিল ঝড়
নেতাজী সুভাস বোস, বাঘা যতিন, বিপিন পাল, চিত্তরঞ্জন ..আরো বাঙালি লড়েছে শৃঙ্খল মুক্তিতে।
লড়াই থাকেনি থেমে, বাঙালির বুকে আঘাতের ক্ষত, দাউ দাউ জ্বলে দিবানিশি
অসহযোগ আন্দোলন শেষে দ্বিজাতি তত্ত্বে বিভক্ত দুটি দেশ ভারত-পাকিস্তান।
তবুও থামেনি শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন, নিপীড়ণ।
ক্ষমতায় বসে যারা, তারাই হয়ে ওঠে দানব, হুঙ্কারে-নখের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হয় মানব।
কেড়ে নিতে চায় বাঙালির মাতৃভাষা, চলে ভাষার আগ্রাসন,
ক্ষোভে ফুসে ওঠে বাংলার সমগ্র মানুষ স্বাধীকার আন্দোলনে।
উনিশ'শ একাত্তর সাত মার্চ, লাখো জনতা সম্মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দীপ্ত কণ্ঠ
গর্জে ওঠে- “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”
নির্দেশ দেন যুদ্ধের, শৃংখল মুক্তির; যেন তিনি শাসকের উপর শাসক।
সেই গর্জন ধ্বনি প্রতিধ্বনি তুলে ছড়িয়ে পড়ে দেশময়
সেই ডাকে- মুক্তি মন্ত্রে জেগে ওঠে দেহ-মন, জেগে ওঠে দেশপ্রেম।
এরপর..... চলে নয়মাস যুদ্ধ, ঘাতকের নির্বিচার গণহত্যা,
পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির উপর
লাখো মানুষের আত্মত্যাগ, বোনের সম্ভ্রম হানি, ছিন্ন ভিন্ন পরিবার,
স্বজন হারা মানুষের আহাজারি আর্তনাদে প্রকম্পিত আকাশ বাতাস
ভীত মলিন মুখ, অশ্রু-সজল চোখ, খুজে চলে আশ্রয়।
খেয়ে না খেয়ে,পালিয়ে পালিয়ে কোটি মানুষের উদ্বাস্ত জীবন
ক্রমে ক্রমে মনে সাহস সঞ্চার, রুখে দাঁড়ায় বাঙ্গালি বুক চেতিয়ে।
দৃঢ় সাহসে, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে প্রতিহত করে শত্রুর দুর্ভেদ্য দূর্গ
ঘাতকেরা পরাজয় নিশ্চিত জেনে, বুদ্ধিদীপ্ত সূর্য সন্তানদের হত্যা করে নীলনক্সায়
তবুও পারেনি শেষ করতে বাঙালির মনোবল; অবশেষে......অবশেষে করে আত্মসমর্পণ।
উনিশ’শ একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষণা, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তরেই বিজয়
বিশ্ব মানচিত্রে এক নতুন দেশ, পতাকা, জাতিসত্ত্বার উদয়
শোষণ- নিষ্পেষণের যাতাকলে পিষ্ট জাতি, মুছে নিল পরাধীনতার গ্লানি।
শহীদের রক্তে উর্বর এই বাংলার শ্যামল মাটিতে চলে দেশ গড়ার পালা। কিন্তু আবারো আঘাত....
পচাত্তরে কুচক্রি শক্তির থাবায়, জাতি হারায় তার পিতা, আশ্রয়, আদর্শ, নৈতিকতা।
কেটে যায় দেড় যুগ, অন্ধকারে, স্বৈরশাসনের বেড়াজালে।
একানব্বয়ে গনতন্ত্রের উদয়, মুক্তচিন্তা, মুক্তবাক....... ক্রমেই উন্নয়নের জোয়ার।
প্রশ্ন জাগে মনে-আজো পেয়েছি কি স্বাধীনতা? পেরেছি কি রুখতে আগ্রাসন?
এখনো সিন্ডিকেট, চলে ষড়যন্ত্র, গুপ্ত হামলা
শতশত বছরের ষড়যন্ত্র বীজ, এই আমাদের মাঝেই রয়েছে সুপ্ত
তাকে নির্মূল করে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রজন্মের মাঝে শুদ্ধতার বীজ ঢেলে দিতে হবে।
আর পিছু ফিরে দেখা নয়, এগোতে হবে সামনে; সুন্দর কল্যাণ জয়গানে।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার করেছে বাংলাদেশ; কিন্তু যুদ্ধ থামেনি আজো
এবার যুদ্ধ নিজেকে গড়ার, বিশ্ব মানবের যোগ্য হওয়ার
নিজের নায্যতা, অধিকার বুঝে নেওয়ার
দেশের সম্পদ লুটে নিয়েছে যারা, বিদেশে পাচার করেছে যে দস্যুরা,
তাদের খুঁজে, ফিরিয়ে আনতে হবে এই বাংলায়।
আমাদের অর্থেই উঠবে গড়ে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
Информация по комментариям в разработке