একসময় দলে দু নম্বরই ছিলেন, হ্যাঁ তৃণমূলে একনম্বরে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দু নম্বরে বেশ কয়েকজন নেতা আছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ইচ্ছে খুশি মত একে এই সপ্তাহে, তাকে ঐ সপ্তাহে দু নম্বরে রাখতেন, মানে গুরুত্ব দিতেন, কখনও পার্থ, কখনও মুকুল, কখনও বক্সি দা, কখনও শোভন। এইরকম আর কি। তিনি ভাবতেন আমি দু নম্বর, তাঁর অনুগামীদের বলতেন, দ্যাখ আমি দু নম্বর, মিডিয়াও মাঝে মধ্যে সেই দু নম্বরের খেলাতে যোগ দিত। তো সেই রকমের এক সময়ের দু নম্বর নেতাকে সবান্ধবী উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিল্লিতে, তিনি বিজেপির দু নম্বর নেতার হাত থেকে পতাকা নিয়ে দুর্বোধ্য এবং অশ্রাব্য ইংরিজীতে তাঁর বিজেপিতে যাবার কথা জানিয়েছিলেন, মানুষে সেই কথা না বুঝতে পারলেও এটা বুঝেছিলেন যে ১) চুরির দায়ে জেলে না পোরার শর্তে তিনি বিজেপিতে গেলেন। ২) বিজেপিতে আগামী মন্ত্রীসভাতে তিনি এক নাহলেও দু নম্বরেই থাকবেন। অন্তত আবার কোলকাতার মেয়র তো নিশ্চই। দিলীপ ঘোষ এবং অনেকে বলেছিলেন একটার সঙ্গে একটা ফ্রির মত শোভন বাবু বৈশাখীর সঙ্গে বিজেপিতে এলেন বটে কিন্তু তা বিজেপির জন্য খুব বড় ব্যাপার নয়। আমি সেদিন বলেছিলাম, এনার পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার শেষ। ইনি আপাতত বারুদ ফুরিয়ে যাওয়া হাউই। তো সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় ওরফে জল শোভন এবার আবার তৃণমূলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই রাজনীতিটা সবাই দেখেছে, সব্বাই জানেও, কিন্তু যে সেই প্রক্রীয়ার মধ্য দিয়ে যায়, সে সম্ভবত বুঝতেই পারে না বা বোঝার অবস্থাতেই থাকে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে যে বা যারা প্রচুর গালাগালি করেছে, অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছে, অপমান করেছে প্রকাশ্যে, মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে বহুবার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ দেখতে চেয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুযোগ পেলেই তাঁকে, তাঁদেরকে দলে নিয়েছেন, সাদরে বরণ করে নিয়েছেন। সারা জগৎ সংসারের কাছে তিনি কি উদার হতে চান, উদার বড় মনের মানুষ হওয়া ইত্যাদি। না এক্ককেবারেই নয়, যাঁরা মমতাকে চেনেন, জানেন, তাঁরা ভালো করেই বোঝেন নেত্রীর কিলার অ্যাটিচুড, প্রতিহিংসাপরায়ণতার চুড়ান্ত মনোভাব, তাঁর শত্রু ঘৃণা। সে সব যাঁরা তাঁর কাছের তাঁরা জানেন। কিন্তু সে সব হল লড়াই এর সময়, হ্যাঁ এটাও মমতারই এক গুণ, যতদিন লড়াই চলবে, ততদিন তিনি ক্ষমাহীন। কিন্তু তুমি অস্ত্রত্যাগ করে দিদিগো বলে পায়ে ডাইভ দাও, উনি তার প্রতিটা কণা, প্রতিটা মুহুর্ত, প্রতিটা শব্দ যাকে বলে উপভোগ করবেন, সবার সামনে সেই তুমি যে মমতাকে কালিঘাটের বেবুশ্যে বলেছিলে, তৃণমূলের আসনে জিতে সেই মমতা দলের নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তুমি কালিঘাটে যাবে, থাকুক তোমার সঙ্গে সব পুরনো অনুগামী, এ যুদ্ধ জয় তো মমতার। সেই যুদ্ধ জয়ের সবটা আলো তাঁর মুখে, সেই তুমি যে নাকি মমতার রাজ সরিয়ে নতুন বাংলা গড়বে বলেছিলে, সেই তুমিই তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে নিয়ে বক্সি আর অরুপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে নিজেকে মমতা ব্যানার্জির সৈনিক বলতে বাধ্য হলে। ঘোষণা করতে হল যে দলে যোগ দেবার পরে সবান্ধবী শোভন চট্টোপাধ্যায় যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে, কালিঘাটে, মানে তিনিও, যুবরাজও হাজির থাকলেন না এই যোগদান মহোৎসবে। একসময়ে কলকাতার মহানাগরিক, রাজ্যের বড় মন্ত্রী, দলের বিরাট নেতা আজ বর্ণহীন এক অনুষ্ঠানে তৃণমূলে যোগদান করলেন, তাতে আবার বলতে পারি, শোভন চ্যাটার্জির পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার শেষ, উনি এক্কেবারেই বারুদ শেষ হয়ে যাওয়া হাউই, ল্যাজ আছে, নাড়ানোর ক্ষমতা নেই।
/ @chalojaai-banglabazar
Информация по комментариям в разработке