১৯ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক ৫৫তম আন্তর্জাতিক সীরাতুন্নাবী ﷺ মাহফিল ২০২৫
১ম দিবস ০৪/০৯/২০২৫ বৃহস্পতিবার
অধিবেশন : বাদ যোহর
ওয়ায়েজ: আলহাজ্ব মাওলানা মোস্তফা নুরী সাহেব
পরিচালক, মারকাযুদ দাওয়াহ ওয়াল ইরশাদ চকরিয়া, কক্সবাজার।
বিষয়: নবী করীম (সা.)-এর শুভাগমন উপলক্ষে পূর্ববর্তী নবী ও রাসূলগণের ভবিষ্যৎবাণী সমূহের বর্ণনা।
ওয়াজের সারসংক্ষেপ (আলোচনা নোট)
কাতেব: Mohammad Ashab Uddin
১৯ দিনব্যাপী ৫৫ তম আন্তর্জাতিক মাহফিলে সীরতুন্নবী (সা.)
স্থান: সীরত ময়দান, শাহ মঞ্জিল, চুনতী, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।
১ম দিবস: বৃহস্পতিবার
(১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি)
ওয়ায়েজ: আলহাজ্ব মাওলানা মোস্তফা নুরা সাহেব, পরিচালক, মারকাযুদ দাওয়াহ ওয়াল ইরশাদ চকরিয়া, কক্সবাজার।
বিষয়: নবী করীম (সা.)-এর শুভাগমন উপলক্ষে পূর্ববর্তী নবী ও রাসূলগণের ভবিষ্যৎবাণী সমূহের বর্ণনা।
◑ ভূমিকা:
১. আল-কুরআন থেকে
﴿ وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ النَّبِيِّينَ لَمَا آتَيْتُكُم مِّن كِتَابٍ وَحِكْمَةٍ ثُمَّ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِ وَلَتَنصُرُنَّهُ ۚ قَالَ أَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَىٰ ذَٰلِكُمْ إِصْرِي ۖ قَالُوا أَقْرَرْنَا ۚ قَالَ فَاشْهَدُوا وَأَنَا مَعَكُم مِّنَ الشَّاهِدِينَ﴾ [ سورة آل عمران: 81]
আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছেন- আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমাত দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের সাথে যা আছে তা সত্যায়নকারীরূপে একজন রাসূল তোমাদের কাছে আসবে- তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করেছ এবং এর উপর আমার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ’? তারা বলল, ‘আমরা স্বীকার করলাম’। আল্লাহ বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম’।
২. হাদিসুন নববী থেকে
أنا دعوة إبراهيم، وبشرى عيسى (وروى أحمد(
'আমি ইব্রাহিমের (আ.) দোয়া এবং ঈসার (আ.) সুসংবাদ'।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অন্যান্য নবীগণের উপর ছয়টি ক্ষেত্রে আমাকে অধিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আমাকে ব্যাপক ভাবকে অল্প কথায় প্রকাশ করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, শত্রুর মনে আযাব প্রভাব সৃষ্টি করে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য গনীমত সম্পদ হালাল করা হয়েছে। যমীনকে আমার জন্য মসজিদ ও তাহারাতের (পবিত্রতার) উপায় (তায়ম্মুম) হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সমগ্র সৃষ্টির প্রতি আমি প্রেরিত হয়েছি, আমার মাধ্যমে নবীগণের আগমন শেষ করা হয়েছে।
◑ নবী করীম (সা.)-এর শুভাগমন উপলক্ষে পূর্ববর্তী নবী ও রাসূলগণের ভবিষ্যৎবাণী:
১. ইব্রাহিম (আঃ) এর দোয়া
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ (البقرة - 129)
‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’।
২. মূসা আ. এর ভবিষ্যদ্বাণী
عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ قَالَ لَقِيتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قُلْتُ َخْبِرْنِي عَنْ صِفَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي التَّوْرَاةِ قَالَ أَجَلْ وَاللهِ إِنَّهُ لَمَوْصُوفٌ فِي التَّوْرَاةِ بِبَعْضِ صِفَتِهِ فِي الْقُرْآنِ (يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا) وَحِرْزًا لِلأُمِّيِّينَ أَنْتَ عَبْدِي وَرَسُولِي سَمَّيْتُكَ المتَوَكِّلَ لَيْسَ بِفَظٍّ وَلاَ غَلِيظٍ وَلاَ سَخَّابٍ فِي الأَسْوَاقِ وَلاَ يَدْفَعُ بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلَكِنْ يَعْفُو وَيَغْفِرُ وَلَنْ يَقْبِضَهُ اللهُ حَتَّى يُقِيمَ بِهِ الْمِلَّةَ الْعَوْجَاءَ بِأَنْ يَقُولُوا لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَيَفْتَحُ بِهَا أَعْيُنًا عُمْيًا وَآذَانًا صُمًّا وَقُلُوبًا غُلْفًا
‘আতা ইবনু ইয়াসার (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ)-কে বললাম, আপনি আমাদের কাছে তাওরাতে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গুণাবলী বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আচ্ছা। আল্লাহর কসম! কুরআনে বর্ণিত তাঁর কিছু গুণাবলী তাওরাতেও উল্লেখ করা হয়েছেঃ ‘‘হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি’’ এবং উম্মীদের রক্ষক হিসাবেও। আপনি আমার বান্দা ও আমার রাসূল। আমি আপনার নাম মুতাওয়াক্কিল (আল্লাহর উপর ভরসাকারী) রেখেছি। তিনি বাজারে কঠোর রূঢ় ও নির্দয় স্বভাবের ছিলেন না। তিনি মন্দর প্রতিশোধ মন্দ দ্বারা নিতেন না বরং মাফ করে দিতেন, ক্ষমা করে দিতেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে ততক্ষণ মৃত্যু দিবেন না যতক্ষণ না তাঁর দ্বারা বিকৃত মিল্লাতকে ঠিক পথে আনেন অর্থাৎ যতক্ষণ না তারা (আরববাসীরা) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর ঘোষণা দিবে। আর এ কালিমার মাধ্যমে অন্ধ-চক্ষু, বধির-কর্ণ ও আচ্ছাদিত হৃদয় খুলে যাবে। (সহীহ বুখারী)
৩. ঈসা আ. এর ভবিষ্যদ্বাণী
‘আর স্মরণ কর! যখন মরিয়ম তনয় ঈসা (আলাইহিস সালাম) বললো- হে বনি ইসরাঈল! আমি তোমাদের কাছে থাকা তাওরাতের সত্যায়নকারী, তোমাদের প্রতি প্রেরিত আল্লাহর একজন রাসুল এবং এমন একজন রাসুলের সুসংবাদ দাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন; তাঁর নাম- ‘আহমদ’।’ (সুরা সফ : আয়াত ৬)
৪. হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ ও কল্কি পুরাণের অন্তিম অবতার সম্পর্কিত মুহাম্মদ ﷺ-এর সঙ্গে সাদৃশ্য বিশ্লেষণ
যেমন- নাম, পিতামাতা, জন্মস্থান, জন্মতারিখ, সহচর, আচরণ, শারীরিক সৌন্দর্য, বাণী, জ্ঞান, দানশীলতা এবং বিশ্বজনীন প্রভাব—সব ক্ষেত্রেই বেদের কল্কি অবতার এবং মুহাম্মদ ﷺ-এর মধ্যে বিস্ময়কর মিল রয়েছে। এই মিল থেকে বোঝা যায় যে, বেদেও হযরত মুহাম্মদ ﷺ-এর আগমন ও বিশেষত্বের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে, যা ধর্ম এবং মানব ইতিহাসের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Информация по комментариям в разработке