Скачать или смотреть এমন এক হিন্দু রাজা যে সমগ্র ভারতবর্ষে নিজের অধীনে নিয়ে এসেছিলো। Samrat ashoke kivabe sason korlo?

জনগণ আমার নিজের সন্তানের মত, আমি তাদের পিতার মতোই স্নেহ করি, একজন পিতা যেমন তার সন্তানদের মঙ্গল কামনা করে, আমিও আমার রাজ্যবাসীদের মঙ্গল কামনা করি; এই উক্তিগুলি ছিল একজন সম্রাটের।

আজ থেকে ২৩০০ বছরের পূর্বে যিনি রাজত্ব করেছিলেন ভারতবর্ষে, তিনি হলেন চক্রবর্তী রাজা সম্রাট অশোক।

মৌর্য সাম্রাজ্যের তৃতীয় শাসক ছিলেন তিনি। খ্রিস্টপূর্ব ২৬৮ অব্দ থেকে ২৩২ অব্দ পর্যন্ত ছিল সম্রাট অশোকের শাসনকাল। বলা হয়, ভারতবর্ষের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সাম্রাজ্যের অধিকারী ছিলেন সম্রাট অশোক। ধারণা করা হয় এতো বড় সাম্রাজ্যের অধিকারী আর কেউ ছিলেন না সে সময়ে। তবে, এত বড় সাম্রাজ্যের অধিকারী হলেও সম্রাট অশোকের জীবন কাহিনী ছিল রহস্যে ঘেরা। বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পর সম্রাট অশোক তার পুনর্জন্ম লাভ করেছিলেন বলা যায়।

ক্ষমতার প্রতি অতিরিক্ত লোভ থাকার কারণে তিনি তার রাজত্বের প্রথম দিকে অত্যন্ত অসহিষ্ণু ছিলেন তবে কলিঙ্গ যুদ্ধের শেষে তার জীবনের দর্শন বদলে যায়। ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস পরিলক্ষিত হতে দেখা যায় তার মধ্যে।

তবে আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন কিভাবে সবটা সম্ভব হলো ?

শুনুন তবে, সম্রাট অশোক তার পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে সহিংসতা ও নিষ্ঠুরতার বিষয়টি বজায় রেখেছিলেন। মনে করা হয়ে থাকে, তাঁর পূর্বপুরুষদের চেয়েও সম্রাট অশোকের জমি এবং ক্ষমতার প্রতি অদম্য তৃষ্ণা ছিল। এই আকাঙ্ক্ষা তাকে ভারতের একটি ছোট প্রতিবেশী রাজ্য কলিঙ্গের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতে বাধ্য করে । তবে, এই যুদ্ধের সময় কলিঙ্গের জনগণের আত্মসমর্পণ বা তাদের জমি ছেড়ে দেওয়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না। যুদ্ধ চলাকালীন কলিঙ্গের জনগণ তাদের অবস্থানে অটল ছিল এবং লড়াই করেছিল। আর এই যুদ্ধকেই অনেক ঐতিহাসিকেরা বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। যুদ্ধ শেষে কলিঙ্গ পরাজিত হয়, লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং সম্রাট অশোকের সমগ্র মহাদেশ জয় করার পথ প্রশস্ত হয়।

কিন্তু এই সময় ঘটে যায় মিরাকেল। কলিঙ্গ যুদ্ধ জয়ের পরেই সম্রাট অশোকের মধ্যে মহান জাগরণ ঘটে এবং তাদের হৃদয়ের পরিবর্তন ঘটে। আসলে সম্রাট আসকের সাম্রাজ্য জয়ের লোভের কারণে যে হত্যাকাণ্ড এবং মৃত্যু হয়েছিল তা দেখে তিনি নিজেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। অস্ত্র রেখে, তিনি তার চারপাশের প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং তার বাকি জীবন জুড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার শপথ নেন। এই ধরণের অনুতাপের অবস্থায়, তিনি ধর্মের দিকে , অর্থাৎ গৌতম বুদ্ধের শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করেন এবং সমগ্র উপমহাদেশের উপর পূর্ণ আধিপত্য বিস্তারের জন্য যুদ্ধযাত্রা থামিয়ে দেন।