ড. জাকির নায়েক আলেম নন’ -এই কথাটি কতটুকু সত্য? যারা বলছেন যে, তিনি আলেম নয়, তাদের কাছে আলেম হওয়ার মানদন্ড ও মাপকাঠি কি? আলেম হওয়ার জন্য কোন কওমী মাদ্রাসায় পড়াই কি একমাত্র পথ?
আমরা জানি আরবদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্কুল-কলেজ আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের মতো নয়। সেখানকার স্কুল-কলেজের সিলেবাস থেকে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের সিলেবাস রাতদিন ব্যবধান। আমার জানামতে সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাদরাসাহ বলা হয়। আর সেই সকল প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনা আমাদের অনেক কওমী মাদ্রাসার চেয়েও যে শ্রেষ্ঠতর, তা না মেনে উপায় নেই।
সুতরাং কুরআন-সুন্নাহর উপর দীর্ঘ পড়াশোনার মাধ্যমে যে কেউ আলেম হতে পারেন। ড. জাকিরও এই হিসেবে আলেম বলে গণ্য হতে পারেন।
/ hotwazbd
উপরন্তু তার গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আরব-আজমের এক ঝাঁক নবীন ও প্রবীণ মুহাক্কিক আলেমের স্বরব উপস্থিতি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো।
ড. জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন বা (আইআরএফ) এর সৌদি শাখার গবেষক প্যানেলে যে সকল আলেম আছেন তার কয়েকজন হলেন,
আবদুর রহমান আল-সুদাইস (মক্কার ইমাম), সৌদ আল-শুরাইম (মক্কার ইমাম), মাহের আল মুয়েকলি (মক্কার ইমাম), আবদুর রহমান আল হুসাইফি (মসজিদে নববী 'র ইমাম),সালাহ আল বুদা ইর (মসজিদে নববী 'র ইমাম), শাইখ ড. আবদুল বারি আওয়া (মসজিদে নববী 'র ইমাম), শাইখ ড. আবদুল মুহসিন আল (মসজিদে নববী 'র ইমাম), শাইখ ড. হুসাইন আবদুল আজি, শাইখ (মসজিদে নববী 'র ইমাম), ড. আহমাদ ইবনে তালি (মসজিদে নববী 'র ইমাম), শাইখ ড.আবদুল্লাহ বুয়াইজান (মসজিদে নববী 'র ইমাম) সহ অনেকেই জাকির নায়েকের লেকচারে অংশ গ্রহণ করেন এবং পিস টিভিতে নিয়মিত বক্তব্য ও কুরান তেলাওয়াত করেন।
এছাড়াও বিশ্ববরেণ্য দাঈ যেমন, আল্লামা সিরাজ ওয়াহহাজ, হুসাইন ইয়ে, ইয়াসির কাজী, সালীম আল আমরী, আসীম আল হাকিম, শেখ জাফর ইদ্রিস, রিয়াজ আনসারী, মুহাম্মাদ আল জিবালী, ওয়াজদি গাজ্জায়ি, ওয়ালিদ বাসইউনি প্রমুখ বিশ্ববরেণ্য আলেম। যাদের অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ ইসলামী ব্যক্তিত্ব।
ড. জাকির নায়েকের গবেষণা ও আলোচনা প্রস্তুত করার অনেক ক্ষেত্রেই এই সকল বিজ্ঞ আলেমের ভূমিকাও থাকে। এছাড়াও দীনী গবেষণা ও পর্যালোচনার জন্য রয়েছে বিচক্ষণ আলেমদের তত্ত্বাবধানে আলাদা টীম।
ড. জাকির নায়েকের সমালোচকগণ একটু কষ্ট করলেই এই সকল তথ্য জানতে পারতেন। কিন্তু তারা তা না করেই সম্পূর্ণ কল্পনা প্রসূত বলে দিয়েছেন যে, জাকির নায়েক আলেম নন, তার সাথে আলেমদের সম্পর্ক নেই। যা নি:সন্দেহে দু:খজন।
আমাদের দেশের অনেক আলেমের মধ্যকার এ ধরণের একটি সংকীর্ণ মানসিকতা প্রায় সময় কাজ করে থাকে। কারো মতের সাথে পুরোপুরি না মিললেই তাকে আলেমদের কাতার হতে আলাদা করে ফেলা হয় তার গবেষণায় আরবের অনেক বড় বড় আলেমের সম্পৃক্ততা থাকলেও তাদেরকে ধর্তব্যের বাইরে রাখা হয়।
আল্লাহ আমাদের এই সংকীর্ণ মানসিকতা পরিহার করার তাওফীক দিন। আর যদি ড. জাকির নায়েক যদি বিজ্ঞ আলেম নাও হয়ে থাকেন তদুপরি পবিত্র কুরআনের সূরায়ে তাওবার ১২২ নং আয়াতের মাধ্যমে আমরা জানি যে, দীনের উপর তাফাক্কুহ বা গভীর জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজে আইন নয়, বরং ফরজে কিফায়া।
কিন্তু সূরায়ে ইউসূফের ১০৮ নং আয়াত, সূরায়ে নাহল এর ১২৫ নং আয়াতসহ আরো অনেক আয়াতের দ্বারা এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে প্রতিটি মুসলিমের জন্য দীনের দাওয়াত দেয়া ফরজ। অন্যের কাছে দীনের কথা পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ রাসূল সা. তার হাদীসেও দিয়ে গেছেন।
সুতরাং ড. জাকির নায়েক যদি আলেম নাও হন, তিনি তো একজন মুসলিম, আর মুসলিম হিসেবে কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনার আলোকে তিনি তার জানা অধ্যায় প্রমাণ সহকারে অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন। (আর ড. জাকির নায়েকও তার বিভিন্ন আলোচনায় নিজেকে সব সময় বিভিন্ন ধর্মের একজন ছাত্র বলে পরিচয় দেন, ফকীহ বা বিরাট মুহাদ্দিস হিসেবে নন।) এটা কি করে নিন্দনীয় ও সমালোচনার বিষয় হতে পারে ?
Информация по комментариям в разработке