ভীষ্মদেব ও পরশুরামের মধ্যে যুদ্ধ এক নারীর কারণে । ভীষ্মদেবের মৃত্যু । অম্বা থেকে শিখন্ডী।

Описание к видео ভীষ্মদেব ও পরশুরামের মধ্যে যুদ্ধ এক নারীর কারণে । ভীষ্মদেবের মৃত্যু । অম্বা থেকে শিখন্ডী।

ভীষ্মদেব ও পরশুরামের মধ্যে যুদ্ধ এক নারীর কারণে । ভীষ্মদেবের মৃত্যু । অম্বা থেকে শিখন্ডী।

#হিন্দুশাস্ত্রকথা #mahabharat #bhishmapitamah #parashuram

মহাভারত থেকে জানা যায় কুরু বংশের দুই ভাই ছিলেন চিত্রাঙ্গদা ও বিচিত্র বীর্য। চিত্রাঙ্গদা ছিলেন বড় এবং তিনি  সিংহাসনে বসে ছিলেন। এদের বড় ভাই ছিলেন ভীষ্ম দেব। ভীষ্ম দেব প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি কোনদিন সিংহাসনে বসবেন না কিন্তু সিংহাসনের রক্ষা করবেন। যাই হোক এক গন্ধবের সাথে যুদ্ধে চিত্রাঙ্গদা মারা যান। তখন সিংহাসনে বসানো হলো বিচিত্র বীর্যকে। তবে বিচিত্রবীর্য যে নাবালক। মাত্র ১৬ বছর তার বয়স। তিনি সিংহাসনে বসেছেন এখন তার রানী চাই। 


ভীষ্ম দেব নিজের ভাই বিচিত্র বীর্যের বিয়ে দেওয়ার জন্য খোঁজ করতে লাগলেন গুণবতী এক নারী র। খবর পেলেন কাশির রাজার তিন সুন্দরী ও গুণবতী কন্যা রয়েছে যাদের স্বয়ম্বর সভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। কিন্তু কাশি রাজ এই স্বয়ংবর সভায় কুরু বংশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। আমন্ত্রণ না জানানোর যথেষ্ট কারণ ছিল। ভীষ্মদেব সারা জীবন ব্রহ্মচারী থাকার কথা ঘোষণা করেছেন। আর বিচিত্র বীর্য নাবালক। যাই হোক নিজের ভাইকে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনিমন্ত্রিত অবস্থায় ভীষ্মদেব উপস্থিত হলেন কাশি রাজ্যে। সেখানে গিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন আমি শান্তনুর পুত্র ভীষ্মদেব। আমার ছোট ভাই বিচিত্র বীর্য হস্তিনাপুরের রাজা। আমি তার জন্য কাশির রাজার এই তিন কন্যাকে নিয়ে যাব। আপনারা যদি কেউ বাধা দিতে চান তাহলে সামনে এগিয়ে আসুন।


এই কথা বলে ভীষ্মদেব ওই তিনটি কন্যা অম্বা অম্বিকা ও অম্বালিকা কে নিজের রথে তুলে নিলেন। স্বাভাবিক কথা স্বয়ম্বর সভায় যারা এসেছিলেন এবং কাশির রাজা সকলে মিলে ভীষ্মদেব কে বাধা দিতে এগিয়ে এলেন। ভীষণ যুদ্ধ হল এবং ভীষ্ম দেব সকলকে একে একে পরাস্ত করলেন। এরপর ভীষ্ম দেব হস্তিনাপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। এই সময় বড় কন্যা অম্বা ভীষ্মদেবকে বললেন আমি আমার মনের থেকে স্বামী হিসাবে মহারাজ শল্যকে মেনে নিয়েছি। আমি আর অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারব না। তখন তখন ভীষ্ম দেব অম্বাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন যাও তুমি শল্যের কাছে যাও। অম্বা শল্যের কাছে ফিরে গেলে শল্য তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। কারণ শল্য যুদ্ধে ভীষ্ম দেব এর কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন এই কারণে তার মনে এক ধরনের অভিমানের উদয় হয়েছিল। তাই শল্য বললেন আমি কি ভিখারি নাকি? তোমাকে কেউ একজন নিয়ে গিয়ে আবার ছেড়ে দেবে আর আমি তোমাকে গ্রহণ করব। 


অম্বা বাধ্য হয়ে ভীষ্ম দেবের কাছে ফিরে আসলেন। ফিরে এসে বললেন আপনি আমাকে জোর করে রথে তুলেছিলেন বলে আমাকে সল্য গ্রহণ করেনি তাই এখন আপনাকে আমাকে গ্রহণ করতে হবে। ভীষ্ম দেব বললেন অসম্ভব আমি কোনদিন বিয়ে করব না বলে ব্রত নিয়েছি। তখন অম্বা বললেন যখনই আপনি আমাকে জোর করে হাত ধরে রথে তুলেছেন তখনই আপনি আমার স্বামী হয়ে গেছেন। তাই এখন আমি আপনার কাছেই থাকব। ভীষ্মদেব কঠোর সুরে আবারো তার প্রতিজ্ঞার কথা বললেন এবং অম্বাকে সেখান থেকে চলে যেতে বললেন। বাধ্য হয়ে অম্বা মনে দুঃখ নিয়ে ফিরে গেলেন নিজের পিতার কাছে কাশিরা রাজ্যে।


অম্বার পিতামহ ছিলেন তপজিত যিনি তপস্বী ছিলেন। অম্বা নিজের মনের আক্ষেপের কথা তার পিতামহের কাছে বললেন। তখন পিতামহ বললেন ঠিক আছে ভীষ্মের গুরুদেব পরশুরাম আমার বন্ধু। আমি তার কাছে তোমার কথা বলব, সে ভীষ্ম কে বুঝিয়ে বলবে। এরপর অম্বার পিতামহ পরশুরামকে সব কথা বুঝিয়ে বললেন। তখন পরশুরাম বললেন ঠিক আছে কোন চিন্তা করতে হবে না আমি আমার শিষ্য ভীষ্ম কে বলব অম্বাকে বিয়ে করতে।


পরশুরাম অম্বাকে নিয়ে আসলেন ভীষ্মের কাছে। বললেন যে ভিষ্ম তুমি অম্বাকে বিবাহ করো। ভৃষ্ম দেব তার গুরুদেব পরশুরামকে প্রণাম জানিয়ে বললেন আপনি তো জানেন সব কথা আমার প্রতিজ্ঞা রয়েছে আমি কোন নারীকে বিয়ে করব না। তা সত্ত্বেও আপনি কেন এ কথা বলছেন। তখন পরশুরাম বললেন আমি তোমার গুরুদেব তাই আমি যখন বলছি গুরুদেবের আদেশ শিরোধার্য করে তুমি অমবাকে গ্রহণ করো। আমার আদেশের জন্য তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে যাও। এই কথাই ভীষ্মদেব বিরক্ত হলেন এবং বললেন যে গুরুদেব শাস্ত্র নিয়ম অনুযায়ী কথা বলেন না তিনি কখনো গুরু হওয়ার অধিকারী নন। তাই আমি আপনাকে আজকের থেকে গুরুদেব হিসাবে ত্যাগ করলাম। 


স্বাভাবিক কথা এতে পরশুরাম ক্ষিপ্ত হয়ে গেল এবং তিনি বললেন যে ঠিক আছে তাহলে তুমি এবার আমার সাথে যুদ্ধ কর। শুরু হলো প্রচন্ড যুদ্ধ । ভীষ্ম দেব যুদ্ধ করেছিলেন রথে। তাই তিনি পরশুরামকে বললেন আপনিও রথে চড়ে যুদ্ধ করুন। তখন পরশুরাম ভীষ্ম কে দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখালেন। কি দেখলেন ভীষ্ম। এই পৃথিবী হচ্ছে পরশুরামের রথ আর চার বেদ হল সেই রথের ঘোড়া। আর উপনিষদ হল সেই রথের লাগাম। অদিতি সরস্বতী এরা হলেন ভীষ্ম দেবের বর্ম। ভীষুদেব বুঝলেন যে তাকে কার সাথে এবার যুদ্ধ করতে হচ্ছে। 


একটানা তেইশ দিন ধরে যুদ্ধ চলল। কেউ কাউকে যুদ্ধে পরাস্ত করতে পারে না। সেই সময় ভৃষ্ম দেব প্রোস্বব অস্ত্র মন্ত্র পুত করলেন যে অস্ত্রের প্রতিরোধ পরশুরামের জানা ছিল না। তৎক্ষণাৎ আকাশ থেকে দৈববানি হলো যে ভীষ্ম তুমি গুরুদেবকে পরাস্ত করো না। এই দেবো মানুষ শুনে ভীষ্ম নিরস্ত্র হলেন। এদিকে পরশুরাম ও নিরস্ত্র হয়ে অম্বা কে বললেন আমি দুঃখিত যে আমিও ভীষ্ম কে বিবাহ করতে রাজি করাতে পারলাম না। এই ঘটনার পর অম্বা মহাদেবের কঠোর তপস্যা শুরু করলেন। উপস্থিত হলেন মহাদেব এবং বর চাইতে বললেন অম্বাকে। অম্বা বললেন আমি ভীষ্মের মৃত্যুর কারণ হতে চাই। মহাদেব বললেন তথাস্তু তবে এই জন্মে নয় এর পরের জন্মে তুমি নপুংসক হয়ে শিখন্ডী নামে জন্ম গ্রহণ করবে। আর তোমার কারনেই ভীষ্ম দেবের মৃত্যু হবে। তখন অম্বা আগুন জ্বালিয়ে আগুনে প্রবেশ করল এবং বলতে থাকলো আমি ভীষ্মের মৃত্যুর কারণ হব। আমরা সকলে জানি মহাভারতে শিখন দিকে দেখেই ভীষ্মদেব তার অস্ত্র ত্যাগ করেন এবং তার কারণেই ভীষ্মদেবের মৃত্যু হয়।

Комментарии

Информация по комментариям в разработке