Скачать или смотреть Imperialism/সাম্রাজ্যবাদ/দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস/

Imperialism/সাম্রাজ্যবাদ/দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস/#history #class #bengali ✍️#historywbcs #wbcshistory #swapnakhonjeducation


দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস।
আজকের বিষয় - সাম্রাজ্যবাদ।

সাম্রাজ্যবাদ কথাটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল imperialism(ইমপিরিয়ালিজম)। ইমপিরিয়ালিজম কথাটির এসেছে ল্যাটিন শব্দ ইম্পেরিয়াম(imperium) থেকে, যার অর্থ সর্বময় কতৃত্ব(supreme power)। সাম্রাজ্যবাদ বলতে বিজিত দেশে কেবল ভৌমিক অধিকার নয়, তার জনশক্তি, সংস্কৃতি সহ সবকিছুকে গ্রাস করা এবং সাম্রাজ্যবাদী দেশের স্বার্থে ব্যবহার করাকে বোঝায়।

সাম্রাজ্যবাদ এর সংজ্ঞা বিষয়ে ঐতিহাসিক দের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, তা হল -
১। ভি. আই লেনিন এর মত -
                                   লেনিন এর মতে, পুঁজিবাদের জঠরে সাম্রাজ্যবাদের জন্ম অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদ হল পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ পর্যায়।

২। জে. এ হবসন এর মত -
                                  জে. এ হবসন এর মতে, মূলত অর্থনৈতিক স্বার্থের কার্যকারী তাই সাম্রাজ্যবাদের মূল উৎস।

সাম্রাজ্যবাদ উদ্ভবের কারন সমূহ -
                ১। অর্থনৈতিক কারন -
                                       হবসন, রুডলফ হিলফার্ডিং, লেনিন সহ অনেক বিশেষজ্ঞই অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধার পূর্ণাঙ্গ সদ ব্যবহারকে সাম্রাজ্যবাদের উদ্ভবের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। হবসনের মতে, মাত্রাতিরিক্ত মূলধনের লগ্নির ক্ষেত্র অনুসন্ধানের জন্যই সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ঘটে। লেনিন পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ বিকাশের মধ্য সাম্রাজ্যবাদের উত্থানের কারন খুঁজে পেয়েছেন।

২। রাজনৈতিক কারন -
                        সাম্রাজ্যবাদের উত্থানের পিছনে অর্থনৈতিক উপাদানের পাশাপাশি রাজনৈতিক উপাদানও সক্রিয় ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলির বিকৃত জাতীয়তাবাদ অর্থাৎ এনগলো স্যাক্সন জাতির শ্রেষ্ঠত্বের তত্ত্ব এবং জাতীয় মর্যাদা বৃদ্ধির উন্মাদ প্রতিযোগীতাই যে সাম্রাজ্যবাদের পথকে প্রশস্ত করেছিল, তা অনস্বীকার্য।

৩। সামাজিক কারন -
ক। উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা -
                            ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলিতে জনসংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেলে উদ্বৃত্ত জনসংখ্যার পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্য সাম্রাজ্যবাদের সৃষ্টি হয়।

৪। অন্যান্য কারন -
ক। ধর্মীয় কারন -
                       ব্রিটিশ ধর্মপ্রচারক ডেভিড লিভিংস্টোন, ফরাসি ধর্মপ্রচারক স্ট্যানলি, লেভিজেরি প্রমুখ দাসব্যবস্থা বন্ধ করতে আফ্রিকায় গেলে এদের ধর্মপ্রচারের সূত্র ধরে ইউরোপীয় বণিক শ্রেণী আফ্রিকায় প্রবেশ করে।

সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিক -
                                 সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিক বা রূপ বর্তমান। যথা -
১। প্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ -
                                    কোনো ব্যক্তিবিশেষ এর একক প্রচেষ্টায় বা অনেকজন এর মিলিত প্রয়াস যখন এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল এক শাসনাধীনে এসে শাসিত হয়, তখন তাকে প্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ বলে। প্রাচীন মিশরীয় সাম্রাজ্য, ম্যাসিডনিয় সাম্রাজ্য, রোমান সাম্রাজ্য এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।

২। অপ্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ -
                                  যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ জয় করে প্রত্যক্ষ ভাবে শাসন করার বদলে বাণিজ্যের মাধ্যমে আর্থিক অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ক্রমে দেশটির রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠা হল অপ্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ। উদাহরণ হিসেবে চিনে ইউরোপ তথা বিভিন্ন দেশের প্রভাব বলয় গড়ে তোলার কথা বলা যায়।

৩। অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ -
                                  সাম্রাজ্যবাদের যে রূপটি প্রবলভাবে প্রকাশ পেয়েছিল তা হল অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। সাম্রাজ্যবাদ সম্প্রসারণের মূলে ছিল শিল্পসমৃদ্ধ পশ্চিম ও মধ্য ইওরোপিও দেশগুলির নতুন অর্থনৈতিক শক্তি তথা ধনতন্ত্রবাদের বিকাশ।

৪। সামরিক সাম্রাজ্যবাদ -
                             সাম্রাজ্যবাদের অন্যতম প্রধান রূপ হল এর সামরিক দিক। অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সামরিক উদ্দেশ্যের সংযোজন প্রায় প্রতিটি ইওরোপিও দেশকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিতে পরিণত করে। সুতরাং, সামরিক কারণেও ইওরোপিও দেশগুলি সাম্রাজ্যের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে।

৫। সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ -
                                সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ হল সাম্রাজ্যবাদের অপর একটি দিক। সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণের মাধ্যমে অনুন্নত জাতিগুলিকে সভ্য করে তোলার আদর্শ প্রচার করেন ইউরোপের কিছু চিন্তাশীল ব্যক্তি। সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলির সাংস্কৃতিক জীবনের উপর চরম আঘাত হানে এবং উপনিবেশের ভাষা, সাহিত্য ও ধর্মকে প্রবলভাবে ঘৃনা করে।
  
History of bengali class
History of bengali literature
History of competitive exams
History of wbcs
History of India