Скачать или смотреть বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সমূহ সাধারণ জ্ঞান:Constitutional institutions of Bangladesh........

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ** নিয়ে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং সংবিধান অনুযায়ী তাদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি নির্ধারিত হয়। আমি আপনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ আকারে লিখে দিচ্ছি, যেখানে থাকবে—

1. ভূমিকা
2. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ধারণা
3. বাংলাদেশের সংবিধানের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব
4. প্রধান প্রধান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিস্তারিত আলোচনা
5. তাদের কার্যাবলি, ভূমিকা, সীমাবদ্ধতা ও গুরুত্ব
6. সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ
7. উপসংহার

---

বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ: একটি বিশদ আলোচনা

ভূমিকা

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণের। এই ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য সংবিধানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের সংবিধান (১৯৭২) অনুযায়ী রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইনসভা ও বিচার বিভাগের পাশাপাশি আরও কিছু স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে থাকে।

---

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ধারণা

*সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান* বলতে সেই সকল সংস্থা ও সংগঠনকে বোঝায়, যেগুলো সরাসরি সংবিধানে উল্লেখিত এবং যাদের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কাঠামো সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত।

এরা রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের (বিচার, নির্বাহী, আইনসভা) পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সংবিধানের বাইরে কোনো আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সংস্থাকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলা হয় না।

---

বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব

বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন:

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু পরিচালনা।
প্রশাসনিক কার্যাবলির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রাখা।
দুর্নীতি দমন ও আর্থিক সুশাসন নিশ্চিত করা।
জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা।

---

বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান

১. জাতীয় সংসদ

**সংবিধানের ধারা**: ৬৫-৯৩
**ভূমিকা**: আইন প্রণয়ন, জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা, সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
**গঠন**: এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ, ৩০০ নির্বাচিত সদস্য এবং সংরক্ষিত মহিলা আসন।
**কার্যাবলি**:

আইন প্রণয়ন ও সংশোধন।
রাষ্ট্রীয় বাজেট অনুমোদন।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের ওপর নজরদারি।
জনগণের স্বার্থ রক্ষা।

---

২. রাষ্ট্রপতি

**সংবিধানের ধারা**: ৪৮-৫৪
**ভূমিকা**: রাষ্ট্রের প্রধান, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।
**গঠন**: জাতীয় সংসদ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত, মেয়াদ ৫ বছর।
**কার্যাবলি**:

প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ।
বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনার, মহাহিসাব নিরীক্ষকসহ অন্যান্য সাংবিধানিক পদে নিয়োগ।
জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন।

---

৩. প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা

**সংবিধানের ধারা**: ৫৫-৫৮
**ভূমিকা**: রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগকারী।
**কার্যাবলি**:

নীতিনির্ধারণ ও প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা।
সংসদে জবাবদিহি করা।
দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন।

---

৪. বিচার বিভাগ

**সংবিধানের ধারা**: ৯৪-১১৬
**ভূমিকা**: আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
**কার্যাবলি**:

বিচার প্রদান।
সংবিধান ও মৌলিক অধিকার রক্ষা।
সরকারের কাজের বৈধতা পরীক্ষা।
**বৈশিষ্ট্য**: স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষভাবে সাংবিধানিক সুরক্ষা।

---

৫. নির্বাচন কমিশন

**সংবিধানের ধারা**: ১১৮-১২৬
**ভূমিকা**: সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা।
**কার্যাবলি**:

জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা।
ভোটার তালিকা প্রস্তুত।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও অনিয়ম প্রতিরোধ।

---

৬. মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (Comptroller and Auditor General - CAG)

**সংবিধানের ধারা**: ১২৭-১৩২
**ভূমিকা**: রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা করা।
**কার্যাবলি**:

সরকারের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা।
অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
সংসদে প্রতিবেদন প্রদান।

---

৭. সরকারি কর্ম কমিশন (Public Service Commission - PSC)

**সংবিধানের ধারা**: ১৩৭-১৪১
**ভূমিকা**: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করা।
**কার্যাবলি**:

নিয়োগ ও পদোন্নতির সুপারিশ।
সরকারি চাকরির পরীক্ষা আয়োজন।
সরকারি কর্মীদের শৃঙ্খলাজনিত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান।

---

৮. জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (আংশিক সাংবিধানিক স্বীকৃতি)

যদিও মূল সংবিধানে উল্লেখ নেই, তবে মানবাধিকার রক্ষার জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১ ও ৪৪ থেকে এর ভিত্তি পাওয়া যায়।

---

৯. অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান

**নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ**।
*অম্বুডসম্যান (সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ)* – কার্যকর হয়নি।
*ত্রাণ কমিশন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা* – সংবিধান দ্বারা প্রভাবিত হলেও আইন দ্বারা পরিচালিত।

---

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা

রাজনৈতিক প্রভাব ও হস্তক্ষেপ।
স্বাধীনতার অভাব।
পর্যাপ্ত অর্থ ও জনবল সংকট।
প্রশাসনিক জটিলতা।
দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাব।

---

সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ

বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যকর ভূমিকা প্রভৃতি বিষয়ে জনগণের আস্থা অনেক সময় নড়বড়ে হয়ে যায়। তবে সামগ্রিকভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছে।

---

উপসংহার

বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ রাষ্ট্র পরিচালনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক